ঘূর্ণিঝড় রিমালে চট্টগ্রামের বিভিন্ন উপজেলায় ৪২ কোটি ৭২ লাখ ৬১ হাজার ১৭৪ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। রোববার (২ জুন) চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন কার্যালয়ের ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মো. ছাইফুল্লাহ মজুমদার এই তথ্য জানান।
সাইফুল্লাহ মজুমদার বলেন, ঘূর্ণিঝড় রিমালে সাড়ে ৪২ কোটি টাকার বেশি ক্ষতি হয়েছে। এরমধ্যে সবচেয়ে বেশি ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে দ্বীপ উপজেলা সন্দ্বীপে। এ উপজেলায় ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ ২৮ কোটি ৮৮ লাখ ২৫ হাজার ১৭৪ টাকা। এছাড়া বাঁশখালী উপজেলায় ১ কোটি ৪ লাখ ৮৫ হাজার টাকার, লোহাগাড়ায় ৩৯ লাখ ৭৫ হাজার টাকা, আনোয়ারা উপজেলায় ১ কোটি ২৭ লাখ ৯০ হাজার টাকা, কর্ণফুলী উপজেলায় ৫৮ লাখ টাকা এবং চন্দনাইশ উপজেলায় ৭ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
অপরদিকে, সীতাকুণ্ড উপজেলায় ১ কোটি ১৪ লাখ ৫২ হাজার ৫০০ টাকার, মিরসরাই উপজেলার ২ কোটি ৩৯ লাখ ৩৩ হাজার ৫০০ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। তবে জেলার ১৫টি উপজেলার মধ্যে হাটহাজারী, রাউজান, রাঙ্গুনিয়া, বোয়ালখালী, ফটিকছড়ি, পটিয়া ও সাতকানিয়াসহ মোট ৭টি উপজেলায় কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়নি।
উল্লেখ্য, গত ২৬ মে রাতে বাংলাদেশ উপকূলে আঘাত হানে ঘূর্ণিঝড় রিমাল। আবওহাওয়ার পূর্বাভাসে অগ্রিম প্রস্তুতি নেওয়ার পরও বন্দর নগরী চট্টগ্রামে ঘূর্ণিঝড় রিমালের প্রভাবে এড়ানো যায়নি ক্ষয়ক্ষতি। ডুবে গেছে নগরী, সৃষ্টি হয়েছে জলাবদ্ধতা। নিম্নাঞ্চলের কোথাও উঠেছে হাঁটু পানি, কোথাও কোমর সমান।
এমন পরিস্থিতি মানুষকে ফেলেছে বিপাকে। ডুবে গেছে খোদ চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. রেজাউল করিম চৌধুরীর বাড়িও। পানিবন্দি হয়ে পড়েন তিনি। শুধু মেয়রই নন, দিনভর এই দুর্ভোগে পড়েন নগরবাসী। তিন চাকা ও চার চাকার পরিবহন চলাচল করতে না পারায় সড়কে চলেছে নৌকা। দাপট দেখায় রিকশাও।
২০ টাকার ভাড়া ১০০ টাকা পর্যন্ত গুনতে হয়েছে যাত্রীদের। পানি ঢুকেছে দোকানপাট ও বাসাবাড়িতে। এতে নষ্ট হয়েছে দোকানের মালামাল ও বাড়ির আসবাবপত্র। সুনির্দিষ্টভাবে বলা না গেলেও অনুমান করে বলা যায়, এই ক্ষতি পৌঁছাবে কোটি টাকায়। অন্যদিকে টানা বাতাস ও থেমে থেমে বৃষ্টিতে ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে পাহাড়। ধসের শঙ্কা রয়েছে যে কোনো মুহূর্তে। এরইমধ্যে তাদের উদ্ধারে মাঠে নেমেছে জেলা প্রশাসকসহ সংশ্লিষ্টরা। উদ্ধার করা হয়েছে ১২ হাজারেরও বেশি মানুষকে। দুর্গত মানুষের জন্য খোলা হয় এক হাজার ৩৪টি আশ্রয়কেন্দ্র। প্রস্তুত করা হয় ২২১টি মেডিকেল টিম।
মন্তব্য করুন