মানিকগঞ্জের সিংগাইর উপজেলায় র্যাব পরিচয়ে সুমন হালদার নামে এক ব্যবসায়ীর এক’শ ভরি স্বর্ণ ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটেছে। এ সময় র্যাব পরিচয় দেওয়া পাঁচ ব্যক্তিকে গণপিটুনি দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করেছে স্থানীয়রা।
শনিবার (০১ জুন) সকাল সাড়ে ৮টার দিকে সিংগাইর উপজেলার জামশা বাজারে এ ঘটনা ঘটে। তবে ছিনতাই হওয়া স্বর্ণ উদ্ধার করতে পারেনি পুলিশ।
আটককৃতরা হলেন, ফরিদপুর সদরের রাধানগর এলাকার সিকান্দার মিয়ার ছেলে মো. শামীম, একই এলাকার আব্দুল মালেক শেখের ছেলে মিরাজুল শেখ (২৮), মেঘমাচি এলাকার সোলেমান মৃধার ছেলে সম্রাট (২৮), পাবনার আটঘরিয়া উপজেলার পাটেশ্বর এলাকার মৃত ফরমান প্রামাণিকের ছেলে আমিজ উদ্দিন (৫০) ও সাভারের আশুলিয়ার খেজুরটেক এলাকার মৃত আব্দুর রহিম বক্সের ছেলে জানিব বক্স (৬২)। এ সময় তাদের সঙ্গে মোটরসাইকেলে থাকা সিদ্দিক নামে আরেক ব্যক্তি ছিনতাইকৃত স্বর্ণ নিয়ে পালিয়ে যায়।
স্থানীয় ও ভুক্তভোগীরা জানান, শনিবার সকাল ৭টার দিকে ঢাকার দোহারের জয়পাড়া বাজারের ‘নির্ঝর অলঙ্কার নিকেতন’-এর মালিক সুমন বৈদ্য ১০০ ভরি স্বর্ণালঙ্কার নিয়ে সিএনজি করে সিংগাইরের চারিগ্রাম বাজারে যাচ্ছিলেন। সঙ্গে এক ঘনিষ্ঠজন ও সিএনজিচালক ছিলেন। নবাবগঞ্জের নয়নশ্রী এলাকা থেকে র্যাবের স্টিকারযুক্ত একটি মাইক্রোবাস তাদের পিছু নেয়। সিএনজিটি আমতলা গ্রামে পৌঁছালে মাইক্রোবাস থেকে পাঁচ জন নেমে র্যাবের সদস্য পরিচয় দিয়ে তাদের তিন জনকে গাড়িতে তুলে নেয়। এরপর তাদের চোখ-মুখ বেঁধে সুমনের স্বর্ণালঙ্কার ছিনিয়ে নেয়। গাড়িটি আমতলা বাজার অতিক্রমের সময় যানজটে আটকা পড়ে। এ সময় গাড়ি থেকে চিৎকার দেন তারা। স্থানীয়রা ভেতরে তিন জনকে চোখ বাঁধা অবস্থায় দেখতে পেয়ে গাড়িটি ঘিরে ধরেন। পরিস্থিতি বুঝে একজন স্বর্ণ নিয়ে পালিয়ে যায়। বাকি পাঁচ জনকে আটক করে গণপিটুনি দিয়ে সকাল সাড়ে ১০টায় পুলিশে সোপর্দ করে জামশা বাজারের ব্যবসায়ীরা।
ভুক্তভোগী স্বর্ণ ব্যবাসয়ী সুমন হালদার জানান, চারজন ব্যক্তি হঠাৎ করে সিএনজির গতিরোধ করে এবং র্যাব সদস্য পরিচয় দিয়ে মারধর করে চোঁখ মুখ বেঁধে জোর করে আমাদের তিনজনকে তাদের গাড়িতে উঠিয়ে কোথায় যেন নিয়ে যাচ্ছিলেন। কিছুক্ষণ পর হঠাৎ করে মাঝ রাস্তায় গাড়ি থামিয়ে আমাদের কাছে থাকা স্বর্ণ নিয়ে একজন মোটরসাইকেল চালকের কাছে স্বর্ণ পাঠিয়ে দেয় র্যাব পরিচয় দেওয়া সদস্যরা। এর প্রায় ১ ঘণ্টা পর জামশা বাজারের ব্যবসায়ীরা গাড়িটি থামান এবং তখন চোঁখ মুখের কাপড় সরাতেই স্থানীয় ব্যবসায়ীরা আমাদের চিনতে পারেন। পরে বুঝতে পারলাম ভুয়া র্যাব পরিচয় দিয়ে আমাদের স্বর্ণ ডাকাতি করতে এসেছে ডাকাতরা।
সিংগাইর থানার ওসি মো. জিয়ারুল ইসলাম জানান, খবর পেয়ে আহত অবস্থায় ৫জনকে উদ্ধার করে চিকিৎসা শেষে থানা হেফাজতে রাখা হয়েছে। এ ঘটনায় মাইক্রোবাসটি জব্দ করা হয়েছে এবং আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন। ঘটনার সঙ্গে জড়িত সিদ্দিককে আটকের চেষ্টা চলছে। তবে লুণ্ঠিত স্বর্ণের পরিমাণ ও র্যাব সদস্য পরিচয়ের বিষয়ে কোন মন্তব্য করেননি থানার ওসি।
মন্তব্য করুন