সিলেটের কোথাও বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে, আবার কোথাও অপরিবর্তিত রয়েছে। তবে শনিবার (১ জুন) সুরমা ও কুশিয়ারা নদীর ৪টি পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে।
বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় সিলেট মহানগরীর বেশ কিছু বাসা-বাড়িতে নতুন করে ঢুকছে পানি। সিলেট বিভাগে আগামী তিন দিনের বৃষ্টির পূর্বাভাসে নতুন করে বন্যার শঙ্কা বাড়িয়ে তুলেছে। তবে নতুন করে বৃষ্টি না হলে বন্যা পরিস্থিতির আর অবনতি হবে না বলে আশা করছেন পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) কর্মকর্তারা।
পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সিলেটের নির্বাহী প্রকৌশলী দীপক রঞ্জন দাশ কালবেলাকে বলেন, পাহাড়ি ঢলে সিলেটের ৭ উপজেলা ও সিলেট নগরী বন্যাকবলিত হয়। শনিবার নতুন করে প্লাবিত হচ্ছে নগরীর কিছু এলাকা। বিশেষ করে নিম্নাঞ্চলগুলো দ্রুত প্লাবিত হচ্ছে।
তিনি বলেন, গত কয়েক দিন আগে সুরমা নদীর কানাইঘাট পয়েন্টে বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হলেও নতুন করে বেড়েছে সিলেট পয়েন্টের পানি। এরই মধ্যে বিপৎসীমার ৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। এতে করে সিলেট নগরীতে আবারও বন্যার শঙ্কা তৈরি হয়েছে।
শনিবার (১ জুন) পানি উন্নয়ন বোর্ড সিলেট কার্যালয়ের তথ্যমতে, শনিবার সকাল ৯টায় সুরমা নদীর কানাইঘাট পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ৮৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। সুরমা নদীর সিলেট পয়েন্টে ৭ সেন্টিমিটার এবং জকিগঞ্জ ও বিয়ানীবাজারে কুশিয়ারা দুটি পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এর মধ্যে অমলসিদ পয়েন্টে ১৯৪ সেন্টিমিটার ও শেওলা পয়েন্টে ৯ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে।
তবে সকাল ৬টা এবং ৯টায় সুরমার কানাইঘাট ও কুশিয়ারার দুটি পয়েন্টে পানি ১ থেকে ৩ সেন্টিমিটার কমলেও সুরমার সিলেট পয়েন্ট তা অপরিবর্তিত রয়েছে। সুরমা নদীর সিলেট পয়েন্টে পানি বাড়ায় নতুন করে প্লাবিত হয়েছে নগরীর উপশহরসহ বেশ কয়েকটি এলাকা।
এদিকে বন্যার পানি আর অসহনীয় ভ্যাপসা গরম ভোগান্তি নিয়ে দিন পার করছেন সিলেটের মানুষ। এ অবস্থায় স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ব্যাহত হচ্ছে। ঘূর্ণিঝড় রিমালের প্রভাবে রবিবার (২৬ মে) থেকে সিলেটে বৃষ্টি শুরু হয়। বৃহস্পতিবার (৩০ মে) পর্যন্ত ছিল টানা হালকা ও মাঝারি ধরনের বৃষ্টি। শুক্রবার (৩১ মে) থেকে বাড়তে থাকে তাপমাত্রা। শনিবার সেটি অসহনীয় পর্যায়ে পৌঁছে।
পাউবো সিলেটের নির্বাহী প্রকৌশলী দীপক রঞ্জন দাশ বলেন, ভারতের চেরাপুঞ্জিতে গত ২৪ ঘণ্টায় মাত্র ৫৪ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। ফলে সিলেটে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি ঘটেনি। জেলার গোয়াইনঘাট ও জৈন্তাপুর উপজেলায় পানি অনেকটা কমেছে। অন্যদিকে সিলেট সদর, কানাইঘাট ও জকিগঞ্জে বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত আছে।
অপরদিকে, এর মধ্যেই সিলেটের জন্য এসেছে আবহাওয়ার নতুন পূর্বাভাস। শুক্রবার সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ৭২ ঘণ্টার পূর্বাভাসে সিলেটের বিভিন্ন স্থানে বৃষ্টি এবং ভারী বৃষ্টির খবর জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
মন্তব্য করুন