ঘূর্ণিঝড় রিমালের প্রভাবে সুন্দরবনের ক্ষতিগ্রস্ত বিভিন্ন চর থেকে আরও ১৫টি হরিণের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এ নিয়ে সুন্দরবনের বিভিন্ন এলাকা থেকে পাওয়া মৃত হরিণের সংখ্যা দাঁড়াল ১১১টিতে।
শুক্রবার (৩১ মে) পর্যন্ত সুন্দরবনে মৃত বন্যপ্রাণীর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ১১৯ এ। হরিণ ছাড়াও এ তালিকায় চারটি মৃত বন্য শূকরসহ আরও চারটি বিভিন্ন জাতের প্রাণী রয়েছে।
খুলনা অঞ্চলের বন সংরক্ষক মিহির কুমার দে বলেন, ঘূর্ণিঝড় রিমালের তাণ্ডবে সুন্দরবনের অনেক ক্ষতি হয়েছে। জোয়ার-জলোচ্ছ্বাসের পানিতে সুন্দরবনের বেশিরভাগ অংশ প্লাবিত হয়েছে। মিষ্টি পানির পুকুরগুলো সব লবণ পানিতে প্লাবিত হয়েছে।
তিনি বলেন, ঝড়ের পরে বনের কটকা, কচিখালী, করমজল ,পক্ষীর চর, ডিমের চর, শেলারচর ও নারিকেলবাড়িয়াসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে হরিণের ১১১টি মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। ৪টি বন্য শূকরের মরদেহসহ আরও ৪টি বিভিন্ন প্রজাতির প্রাণী রয়েছে। এসব মরদেহ মাটি চাপা দেওয়া হয়েছে।
মৃত বন্যপ্রাণী ছাড়াও জীবন্ত প্রাণীও উদ্ধার করা হয়েছে জানিয়ে তিনি আরও বলেন, বিভিন্ন এলাকা থেকে বিপদাপন্ন ১৮টি জীবিত হরিণ এবং একটি জীবিত অজগর সাপ উদ্ধার করে বনে অবমুক্ত করা হয়েছে।
অন্যদিকে, সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের করমজল বন্যপ্রাণী প্রজনন কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হাওলাদার আজাদ কবির বলেন, সাধারণত জলোচ্ছ্বাস হলে বন্যপ্রাণীরা উঁচু স্থান ও গাছে আশ্রয় নেয়। ঘূর্ণিঝড় রিমালের প্রভাবে বনের ভেতর অধিক উচ্চতায় জলোচ্ছ্বাস হয়েছে। ফলে বনের উঁচু স্থান তলিয়ে যাওয়ায় প্রাণীদের আশ্রয় নিতে সমস্যায় পড়তে হয়েছে। অধিক জ্বলোচ্ছ্বাসের ফলে নিরাপদ আশ্রয়ে না যেতে পেরে হরিণগুলোর মৃত্যু হতে পারে।
প্রসঙ্গত, ঘূর্ণিঝড় রিমালের প্রভাবে পূর্ব বন বিভাগের কটকা অভয়ারণ্যের অফিস ঘাটের জেটি ও মিঠা পানির পুকুর সাগর গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। দুবলা, কটকা, কচিখালি, বগিসহ বিভিন্ন বন অফিসসহ ২৫টি টহল ফাঁড়ির রান্নাঘরসহ অবকাঠামোর টিনের চালা উড়িয়ে নিয়ে গেছে। সুন্দরবনের ৮০টি মিঠাপানির উৎস পুকুরে ৮-১০ ফুট উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসে নোনা পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় বনকর্মীদের পাশাপাশি প্রাণীরাও সুপেয় পানির সংকটে পড়েছে।