মিটারে ব্যবহৃত ইউনিট না দেখেই করা হচ্ছে অতিরিক্ত বিল। আবার গ্রাহকদের কাছ থেকে মনগড়া বাড়তি বিদ্যুৎ বিল আদায় করা হচ্ছে। এছাড়াও অতিরিক্ত বিলের অভিযোগ করলে পোহাতে হচ্ছে ভোগান্তি। অভিযোগ করে কিছু ক্ষেত্রে প্রতিকার মিললেও হয়রানির ভয়ে অনেকে অভিযোগও করেন না।
এ দিকে সঠিক সময়ে বিল পরিশোধ না করলে সংযোগ বিচ্ছিন্নের উৎকণ্ঠা। এমনটাই অভিযোগ সিরাজগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১ এর তাড়াশ জোনাল অফিসের বিরুদ্ধে। তবে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির দাবি, নির্ভুল বিলসহ সর্বোচ্চ গ্রাহকসেবা নিশ্চিতে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছেন তারা।
সিরাজগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১ এর তাড়াশ জোনাল অফিস সূত্রে জানা গেছে, তাড়াশ উপজেলার ৮টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভা এলাকায় বিভিন্ন শ্রেণির প্রায় ৬৭ হাজার বিদ্যুতের গ্রাহক রয়েছেন। গ্রাহকদের ব্যবহৃত মাসিক বৈদ্যুতিক রিডিং সংগ্রহকারী মিটার রিডার আছেন ৩০ জন। এদের সবাই চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ, যা চাহিদার চেয়ে কম।
প্রায় প্রতিদিনই সিরাজগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির-১ তাড়াশ জোনাল অফিসে অতিরিক্ত বিদ্যুৎ বিলের বিষয়ে অভিযোগ নিয়ে হাজির হচ্ছেন বিভিন্ন এলাকার গ্রাহকরা। এতে একদিকে বিতরণ বিভাগের কর্মকর্তারা যেমন বিপাকে পড়ছেন তেমনি গ্রাহকদের মাঝেও চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, তাড়াশ পৌর এলাকার বারোয়ারি বটতলার মো. খোদা বক্সের মিটার নম্বর: ১৭০৩১১০৬। গত ১২ এপ্রিলে তার মিটার রিডিং আসে ৫০৪৫ ইউনিট। আর মে মাসের ১২ তারিখে তার মিটার রিডিং ব্যবহৃত দেখানো হয়েছে ৫০৯৫ ইউনিট অথচ ২৯ মে ওই মিটারে রিডিং দেখাচ্ছে ৫০৮৮ ইউনিট। ওই দোকান ভাড়া নিয়ে ব্যবসা করছেন তাপস কুমার। তিনি জানান, হঠাৎ করে এ বিল দেখে তো তিনি হতবাক। মিটার রিডিং না দেখেই এমন বিল করা হয়েছে।
ফজলুল হক নামে এক গ্রাহক বলেন, মিটার রিডাররা প্রতিমাসে না এসে মাঝে মাঝে আসে। সব সময় তারা অনুমাননির্ভর বিল করে থাকে। এতে প্রকৃত বিল আমরা দিতে পারি না। বিশেষ বিশেষ সময় মিটার দেখে রিডিং নিয়ে আমাদের ওপর বাড়তি বিলের বোঝা চাপিয়ে দেয়।
বিদ্যুৎ বিভাগের একাধিক কর্মকর্তা ও মিটার রিডারদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সাধারণত বিদ্যুৎ কোম্পানিগুলোর মিটার রিডাররা বাসায় বাসায় গিয়ে মিটারের বর্তমান রিডিং নিয়ে আসেন। সেই রিডিং থেকে আগের মাসের প্রাপ্ত রিডিং বাদ দিলেই এই মাসের ব্যবহৃত বিদ্যুতের হিসাব পাওয়া যায়। সেগুলো বিভিন্ন স্ল্যাব অনুযায়ী হিসাব করে বিদ্যুৎ ব্যবহারের বিল করা হয়।
উপজেলার চৌড়া গ্রামের লুৎফর রহমান বলেন, এদের পলিসিটা হলো এরা দু-চার মাস প্রকৃত বিলের চাইতে ইউনিট কম লেখে। বিশেষ করে জুন ও ডিসেম্বর মাসে প্রকৃত ইউনিট দিয়ে বিল করে তাতে এদের লাভ হচ্ছে বেশি। ইউনিটে রেট বেশি পাওয়া যায়। আমরা জনগণ আমাদের কিছু করার থাকে না। এ যেন শুভঙ্করের ফাঁকি।
এ প্রসঙ্গে সিরাজগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১ এর তাড়াশ পল্লী বিদ্যুৎ জোনাল অফিসের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার নিরাপদ দাস বলেন, এমনটা হয়েছে কিনা আমি আগে গিয়ে দেখব। না দেখে আমি কোনো বক্তব্য দিতে পারি না। যদি কোনো সমস্যা থাকে তাহলে গ্রাহকদের অফিসে পাঠিয়ে দেন। আমরা সমাধান করে দিব।
মন্তব্য করুন