ঘূর্ণিঝড় রিমালের প্রভাবে পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জে পায়রা ও শ্রীমন্ত নদীর বেড়িবাঁধ ভেঙে ১৫টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এসব গ্রামের মধ্যে রয়েছে রামপুর, সুন্দ্রা, পিপড়াখালী, দক্ষিণ মির্জাগঞ্জ, গোলখালী, চরখালী, ভয়াং, মেন্দিয়াবাদ ও হাজিখালী পায়রা নদীর বেড়িবাঁধ ভেঙে অনন্ত ১৫টি গ্রাম তলিয়ে গেছে।
সোমবার (২৮ মে) সকাল থেকেই একটানা বৃষ্টিতে ও জোয়ারের পানিতে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। ২০ সহস্রাধিক পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়ে এবং তলিয়ে গেছে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। পানি বৃদ্ধি পেলে পায়রা ও শ্রীমন্ত নদীর বাঁধের বাইরে বসবাসরত পরিবারদের ভোগান্তিতে পড়তে হয়। কাঁচাঘর-বাড়ি, মসজিদ এবং উপজেলায় বিভিন্ন পয়েন্টের বেড়িবাঁধ বিধ্বস্ত হয়েছে। মির্জাগঞ্জ গ্রামে বসতঘরের ওপর গাছচাপা পড়ে একজন আহত হয়েছেন। প্রায় ৪৮ ঘণ্টা বিদ্যুৎ না থাকায় মোবাইল নেটওয়ার্কে সমস্যা দেখা দিয়েছে। চারদিকে অন্ধকার আর জলোচ্ছ্বাসের পানিতে ভাসছে উপজেলার বিভিন্ন এলাকা। বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে উপজেলার ৪১ হাজার গ্রাহক।
মির্জাগঞ্জ সাবস্টেশন পল্লী বিদ্যুতের এ জি এম মো. মেহেদী হাসান জানান, মির্জাগঞ্জ নয় পটুয়াখালী জেলা থেকে পল্লী বিদ্যুৎ বন্ধ রাখা হয়েছে। ঝড়-বাদল কমলে লাইন চেক করে বিদ্যুৎ ব্যবস্থা চালু করা হবে। পানিতে প্লাবিত হওয়ায় অনেক পরিবারের উনুনে আজ হাঁড়ি ওঠেনি বলে জানান অনেকেই। উপজেলা সদরে নেই ২৪ ঘণ্টা বিদ্যুৎ। জোয়ারের পানি বেড়ে সুবিদখালী বাজার, কাকড়াবুনিয়া বাজার, মহিষকাটা বাজার, কাঁঠালতলী বাজারসহ নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। তলিয়ে গেছে পায়রাকুঞ্জ ফেরিঘাটের পন্টুনের গ্যাংওয়ে। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন যাত্রীরা। মির্জাগঞ্জ উপজেলার সুবিদখালী বাজারে তিন থেকে সাড়ে তিন ফুট পানি হওয়ার কারণে প্রত্যেকটা ব্যবসায়ীদের লাখ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
২নং মির্জাগঞ্জ ইউনিয়নের শ্রীমন্ত নদীর পানির চাপে কয়েক জায়গায় বেড়িবাঁধ ছুটে গিয়ে পানি ঢুকে পড়েছে, অনেক ঘর বাড়ি পানির নিচে তলিয়ে গেছে, গাছপালা পরে অনেক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। পূর্ব সুবিদখালী, পশ্চিম সুবিদখালী টিএনটি রোডের বাঁধ ভেঙে পানি ঢুকে ক্ষতি হয়। ঝড়ের কারণে সড়কে গাছপালা ভেঙে পড়ে।
রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির মির্জাগঞ্জ উপজেলার দলনেতা মো. রাব্বি মল্লিক বলেন, সকাল থেকেই বৃষ্টি ও জোয়ারের পানি বৃদ্ধি পেলে রেড ক্রিসেন্টের সদস্যরা আটকে থাকা লোকজনদের উদ্ধার করা হয়েছে। রাস্তা পারাপারের জন্য ফ্রি গাড়ির ব্যবস্থা করেছি। আমরা সব সময়ে অসহায় মানুষের পাশে আছি।
মির্জাগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. তরিকুল ইসলাম বলেন, ঘূর্ণিঝড় রিমালে প্রভাবে উপজেলার বিভিন্ন আশ্রয়কেন্দ্রে লোকজন আশ্রয় নিয়েছে। ৪টি মেডিকেল টিম ও একটি কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে।
মন্তব্য করুন