মঠবাড়িয়া (পিরোজপুর) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ২৮ মে ২০২৪, ১১:২১ এএম
অনলাইন সংস্করণ

ঘূর্ণিঝড় রিমালের তাণ্ডবে লন্ডভন্ড উপকূলের ঘরবাড়ি

মঠবাড়িয়ায় লন্ডভন্ড ঘরবাড়ি। ছবি : কালবেলা
মঠবাড়িয়ায় লন্ডভন্ড ঘরবাড়ি। ছবি : কালবেলা

ঘূর্ণিঝড় রিমালে লন্ডভন্ড হয়েছে উপকূলীয় জেলা পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া। এতে ঘুমহীন রাত কেটেছে উপকূলের বাসিন্দাদের। ভারি বর্ষণ ও জোয়ারের পানিতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ফসলের ক্ষেত, উপড়ে গেছে বহু গাছ। বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়েছে অনেক এলাকায়। রোববার দুপুর থেকে সোমবার সারাদিন জোয়ারের পানিতে ২৫ কিলোমটার বেড়িবাঁধ ভেঙে কয়েকশ গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এ ছাড়া উপজেলায় প্রায় ছয় শতাধিক কাঁচাবাড়ি ঘর বিধ্বস্তসহ উপড়ে পড়া গাছের নিচে চাপা পড়ে আছে প্রায় অর্ধশতাধিক ঘরবাড়ি।

বলেশ্বর নদে অস্বাভাবিক জোয়ারে ক্ষেতাছিঁড়া, কচুবাড়িয়ার, তুষখালী ও মাছুয়াসহ বিভিন্ন বেড়িবাঁধ ভেঙে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। ফলে এসব এলাকার মৎস্য খামারের অন্তত ৪০টি মাছের ঘের, ২৫০টি পুকুর ও ইরি ধানের ফসল প্রায় ৪-৫ ফুট পানির নিচে তলিয়ে আছে।

সরোজমিনে বলেশ্বর নদের বড়মাছুয়ায় সেনাবাহিনী নির্মিত ঘূর্ণিঝড় আশ্রয় কেন্দ্রে ৩ শতাধিক মানুষ আশ্রয় নিতে দেখা যায়। শুধু এ আশ্রয়কেন্দ্রে নয় উপজেলার ৭৬টি আশ্রয়কেন্দ্রে এখন দুর্যোগকবলিত মানুষের ভিড়। অনেক পরিবার নিজের বসতি ফেলে গ্রামের পাকা কোনও বাড়িতেও আশ্রয়ের জন্য ছুটছেন।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, রোববার বিকেল থেকে ঝড়ো হাওয়া ও বৃষ্টি শুরু হলে নদীতীরের মানুষ আতংকে পার্শ্ববর্তী সাইক্লোন শেল্টারে সন্ধ্যার পর থেকে ভিড় করেছে। এ সময় নদীগুলোতে জোয়ারের পানি বাড়তে থাকে। সকালে জোয়ারের পানির চাপে মঠবাড়িয়া উপজেলার মাঝের চরের বেড়িবাঁধ উপচে লোকালয় ও ফসলের ক্ষেত প্লাবিত হয়। রাত নয়টার দিকে প্রবল বাতাসে জোয়ারের পানিতে প্রয় ২৫ কিলো মিটার বেড়িবাঁধ ভেঙে পানি লোকালয়ে ঢুকে পড়ে। এতে গ্রামের কয়েক হাজার কাঁচা ঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়। জোয়রের পানি পাকা সড়ক উপচে লোকালয়ে ঢুকে পড়ায় বেশ কিছু সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। উপজেলার মাঝের চরে রাতে ৪ খেকে ৫ ফুট পানিতে প্লাবিত হয়। চরের বেশির ভাগ ঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মনিরুজ্জামান কালবেলাকে জানান, রিমালে উপজেলায় পাঁচ সহস্রাধিক কৃষক অপূরণীয় ক্ষতির শিকার হয়েছেন। এতে অন্তত এক হাজার হেক্টর জমির ফসল জলাবদ্ধতায় ডুবে গেছে। এর মধ্যে আউশ বিজতলাসহ ৭ হাজার হেক্টর, পান ৩০ হেক্টর, সুপারি ফল ও শাকসবজি ক্ষেতসহ ৩০০ হেক্টর জমির ফসল সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এতে কৃষি দপ্তরের হিসেব অনুযায়ী সর্বমোট ৪-৫ কোটি টাকার ফসলের ক্ষতি হয়েছে। তবে কৃষকের কাছে এর ক্ষতির পরিমাণ দ্বিগুনেরও বেশি।

মঠবাড়িয়া ইউএনও আবদুল কাইয়ূম ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত কয়েকটি গ্রাম পরিদর্শন করে বলেন, ঘূর্ণিঝড়ে কাঁচা ঘর, রবিশস্য, সড়ক ও বেড়িবাঁধের ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। জোয়ারের পানি লোকালয়ে ঢুকে পড়ে অনেক গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। ভাঙ্গা বেড়িবাঁধে পানি উন্নয়ন বোর্ডের লোকজন বাঁধ মেরামতে কাজ করছেন।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

‘না ডাকলে সীমান্তের শূন্য রেখায় কেউ যাবেন না’

সিলেটকে হারিয়ে টেবিলের চার নম্বরে খুলনা

গণফোরাম থেকে মহিউদ্দিন আবদুল কাদিরের পদত্যাগ

চোখের জলে বিদায় নিলেন ৬ শিক্ষক

বাহিনীকে প্রস্তুত থাকার আহ্বান সেনাপ্রধানের

তুরস্কের চিকিৎসক দলের অর্থায়নে ২৫শ শিশুর সুন্নতে খতনা

ক্লাবের পর আশ্বাস পেলেন ক্রিকেটাররাও

স্নাতকে ৪-এ ৩.৯৯ পেয়ে প্রথম ঢাবি শিবিরের প্রচার সম্পাদক সাজ্জাদ

পাইকগাছা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স / ৩ লাখ মানুষের চিকিৎসায় ৪ ডাক্তার

সিলেটে বইয়ের জন্য শিশু শিক্ষার্থীদের হাহাকার

১০

মার্কিন নাগরিকত্বের জন্য ভারতীয় নারীদের আগাম সন্তান জন্মদানের হিড়িক

১১

‘জামায়াত ক্ষমতায় গেলে চাঁদাবাজির মূলোৎপাটন করবে’

১২

রাবিতে ছাত্রশিবিরের বিক্ষোভ

১৩

সারা দেশে বৈঠক ডেকেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন

১৪

‘জিয়াউর রহমান কৃষিকে লাভবান পেশা হিসেবে গড়ে তুলেছিলেন’

১৫

‘তরুণ প্রজন্মের শারীরিক ও মানসিক বিকাশে খেলাধুলার গুরুত্ব অপরিসীম’

১৬

চেহারা পরিবর্তন হলেও চাঁদাবাজি বন্ধ হয়নি : ফয়জুল করিম

১৭

তাপমাত্রা নিয়ে আবহাওয়া অধিদপ্তরের নতুন বার্তা

১৮

যুবলীগ নেতা মুহিবুর গ্রেপ্তার

১৯

গণতন্ত্রে উত্তরণের সহজ পথ নির্বাচিত সরকার : দুদু

২০
X