ঘূর্ণিঝড় রিমালের প্রভাবে নোয়াখালীর বিচ্ছিন্ন দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ায় টানা বর্ষণ ও জোয়ারে পানিতে নিঝুমদ্বীপ ইউনিয়নের শতাধিক ঘের ও পুকুর প্লাবিত হয়েছে। অনেকে ঘেরের পাড় মাটি দিয়ে উঁচু এবং জাল দিয়েও শেষ পর্যন্ত মাছ রক্ষা করতে পারেনি। চাষিরা দাবি করছেন, এতে কোটি টাকার অধিক মাছ জোয়ারে ভেসে গেছে।
রোববার (২৬ মে) সকাল থেকে শুরু হওয়া জোয়ার শেষ হয় বিকেল ৪টায়। এতে পুরো নিঝুমদ্বীপ ইউনিয়ন প্লাবিত হয়েছে। নিঝুমদ্বীপের চারপাশে নদীতে স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৮-১০ ফুট পানি বৃদ্ধি পায়।
নিঝুমদ্বীপ ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা মো. আকবর হোসেন বলেন, প্রায় তিন লাখ টাকার মাছ ছিল আমার পুকুরে। আমি ভাবিও নাই এই পুকুর ডুবে যাবে। আমি পাড়ে জাল দিয়েছিলাম তারপরও জোয়ারে আমার সব মাছ ভেসে চলে গেছে। একটা পুকুর আমাকে নিঃস্ব করে দিয়েছে।
নিঝুমদ্বীপ ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা মো. আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, আমার দুইটা পুকুর ছিল। জোয়ারে পুরো পুকুর রাস্তাঘাট সব তলিয়ে গেছে। আমাদের সব মাছ ভেসে গেছে। কম হলেও অর্ধকোটি টাকার মাছ জোয়ারে ভেসে গেছে।
দীর্ঘ ৪০ বছরেরও বেশি সময় ধরে মাছ চাষ করেন নিঝুমদ্বীপ ইউনিয়নের বাসিন্দা আবদুল মান্নান। তিনি বলেন, আমার কাছে সরকারি কিল্লার পুকুরসহ ১২টা পুকুর আছে। আমি সামনে কোরবানির সময় মাছ বিক্রির আসায় পুকুরগুলোতে মাছ মজুদ করেছি। আগমনি, ধানসিঁড়ি ও ছায়াবীথি কিল্লার পুকুরের পানি কমিয়ে রেখেছি মাছ ধরব বলে। আজ জোয়ারে সব মাছ আমার ভেসে গেছে। প্রায় ২০ লাখ টাকার মাছ আমার নিমিষেই শেষ।
নিঝুমদ্বীপ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. দিনাজ উদ্দিন বলেন, বেড়িবাঁধ না থাকায় পুরো নিঝুমদ্বীপ ইউনিয়ন তলিয়ে গেছে। আমার নিজস্ব কিছু পুকুর ছিল সব পুকুরের মাছ ভেসে গেছে। সব মিলিয়ে অর্ধকোটি টাকার বেশি মাছ জোয়ারে ভেসে গেছে।
হাতিয়া উপজেলা মৎস্য সমিতির সভাপতি আখতার হোসাইন বলেন, জোয়ারে সব থেকে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে হাতিয়া। তারমধ্যে নিঝুমদ্বীপ বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আমরা তালিকা করছি। বিষয়টি মৎস্য বিভাগকে জানাব। ক্ষতিগ্রস্ত চাষির পাশে সরকার থাকুক। এই কামনা করছি।
হাতিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শুভাশিষ চাকমা বলেন, জোয়ার এখনো চলমান। রাতের বেলায়ও আরও পানি বাড়তে পারে। নিঝুম দ্বীপের পুকুর ও মাছের বড় ঘের ভেসে যাওয়ার খবর শুনেছি। আমরা খবর নিয়ে মৎস্য বিভাগকে জানাব। যেন প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা যায়।
মন্তব্য করুন