ঘূর্ণিঝড় রিমালের প্রভাবে উত্তাল সমুদ্র। বড় বড় ঢেউ তীরে আছড়ে পড়ায় সৈকত লাগোয়া দোকানগুলো ভাসিয়ে নিয়ে যায় ঢেউয়ের তেড়ে। ফলে সৈকত লাগোয়া যত ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা রয়েছে তাদের দোকানের মালামাল নিরাপদে সরিয়ে নিচ্ছে।
রোববার (২৬ মে) সরেজমিনে দেখা যায়, বড় বড় ঢেউয়ের আঘাতে বিচে রাখা মালামাল ভাসিয়ে নিয়ে যায়। সৈকতে রাখা বেঞ্চগুলো সরিয়ে নেওয়া হয়েছে অনেক আগেই। দোকানপাট বন্ধ।
সৈকতে মাছ ফ্রাই ব্যবসায়ী কাওছার বলেন, ঘূর্ণিঝড় হলেই আমাদের ক্ষতি বেশি হয়। যে ক্ষতি এক মাসেও পূরণ করা যায় না।
বেঞ্চ ব্যবসায়ী ইব্রাহিম শরীফ বলেন, আমরা ক্ষুদ্র পরিসরে ব্যবসা করি। কিন্তু ক্ষতির দিক থেকে আমরাই বেশি পড়ি। গতকাল থেকেই আমাদের বেঞ্চ নিরাপদে সরিয়ে রেখেছি।
কুয়াকাটায় আগত পর্যটকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে তৎপর কুয়াকাটার ট্যুরিস্ট পুলিশ ও নৌপুলিশের সদস্যরা। তারা পর্যটকদের নিরাপদে রাখতে মাইকিংসহ নিরাপত্তার সংবাদ প্রচার করছে। সব পর্যটকদের হোটেলে অবস্থান নিশ্চিত করাসহ তাদের যাবতীয় খোঁজখবর রাখছে বলে জানিয়েছে ট্যুরিস্ট পুলিশ।
এদিকে ঘূর্ণিঝড় রিমালের প্রভাবে মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরে ১০ নম্বর মহাবিপৎসংকেত জারি করেছে আবহাওয়া অফিস। এ ছাড়া চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার সমুদ্রবন্দরেও ৯ নম্বর মহাবিপৎসংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
রোববার সকালে ঘূর্ণিঝড় রিমাল নিয়ে আবহাওয়া অধিদপ্তরের দেওয়া এক বিশেষ বুলেটিনে এ তথ্য জানানো হয়।
ওই বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, উপকূলীয় জেলা খুলনা, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বরগুনা, বরিশাল, ভোলা, পটুয়াখালী এবং তাদের কাছের দ্বীপ ও চরগুলো ১০ নম্বর মহাবিপৎসংকেতের আওতায় থাকবে।
এদিকে নিরাপত্তাজনিত কারণে কক্সবাজার রুটের সব ধরনের বিমানের ফ্লাইট বাতিল করা হয়েছে। পাশাপাশি অভ্যন্তরীণ নৌপথের সব ধরনের লঞ্চ চলাচল বন্ধ ঘোষণা করা হয়ছে।
এর আগে শনিবার (২৫ মে) রাতে বঙ্গোপসাগরের গভীর নিম্নচাপটি ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়। এ বিষয়ে রাতেই আবহাওয়া অফিসের আবহাওয়াবিদ মুহাম্মদ আবুল কালাম মল্লিক স্বাক্ষরিত ৭ নম্বর বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে উপকূলীয় জেলা সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাট, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বরগুনা, বরিশাল, ভোলা, পটুয়াখালী, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, ফেনী, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার এবং তাদের কাছাকাছি দ্বীপ ও চরগুলোর নিচু এলাকা স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৩ থেকে ৫ ফুটের বেশি উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে।
তার আগে এক সংবাদ সম্মেলনে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী মহিববুর রহমান জানান, অতিপ্রবল হিসেবে দেশের উপকূল অঞ্চলে আঘাত হানতে পারে ঘূর্ণিঝড়টি। এ অবস্থায় উপকূলের ১৩টিসহ ১৮ জেলা রিমালের আঘাতে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। ঘূর্ণিঝড়টি অতিক্রমের সময় বাতাসের গতিবেগ ১১০ থেকে ১২০ কিলোমিটার পর্যন্ত হতে পারে, কখনো কখনো এটি ১৩৫ কিলোমিটার পর্যন্ত হতে পারে।
আবহাওয়া অফিসের বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, রিমাল রোববার সন্ধ্যার মধ্যে উপকূল অতিক্রম করতে পারে।
মন্তব্য করুন