পূর্ব-মধ্য বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন পশ্চিম মধ্য বঙ্গোপসাগর এলাকায় অবস্থানরত নিম্নচাপ রিমালের প্রভাব পড়তে শুরু করেছে বরিশালে। শনিবার (২৫ মে) সন্ধ্যা থেকে শুরু হয়েছে থেমে থেমে বৃষ্টি। এর প্রভাবে আতঙ্ক বাড়ছে জেলার নদী তীরবর্তী মানুষের মধ্যে।
বরিশালের নদীবন্দর কর্মকর্তা আব্দুর রাজ্জাক বলেন, সন্ধ্যা থেকে বৃষ্টি শুরু হলেও এখন পর্যন্ত অভ্যন্তরীণ ও দূরপাল্লার লঞ্চ চলাচল স্বাভাবিক আছে। তবে আবহাওয়া অফিসের নির্দেশনা অনুযায়ী যে কোনো সময় এ সিদ্ধান্তের পরিবর্তন হতে পারে। উপকূলীয় এলাকায় লঞ্চসহ সব ধরনের নৌযান চলাচল বন্ধের নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ। তবে দেশের অভ্যন্তরীণ নৌরুটগুলোতে চলাচল করা লঞ্চ ও অন্যান্য নৌযানের ব্যাপারে এখনো এমন কোনো নির্দেশনা দেওয়া হয়নি।
বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. শ্যামল কৃষ্ণ মণ্ডল বলেন, সম্ভাব্য দুর্যোগ মোকাবিলায় এরই মধ্যে ৪৭০ থেকে ৪৭২টির মতো মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে। যারা দুর্যোগকালীন ও পরবর্তী সময়ে সাধারণ মানুষকে চিকিৎসাসেবা প্রদান করবেন। বিভাগের হাসপাতালগুলোয় পর্যাপ্ত প্রয়োজনীয় ওষুধ রয়েছে। আশা করি কোনো সমস্যার সম্মুখীন হতে হবে না।
এদিকে গোটা বরিশাল বিভাগে ৩ হাজার ৯৭৪টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রয়েছে বলে জানিয়েছে ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচি (সিপিপি) বরিশাল আঞ্চলিক কার্যালয়ের কর্মকর্তারা। তারা জানান, আশ্রয়কেন্দ্রের মধ্যে ভোলায় ৭৪৬, পটুয়াখালীতে ৭০৩, বরগুনায় ৬৪২, বরিশালে ৫৪১, ঝালকাঠিতে ৪৮৮ ও পিরোজপুরে সর্বোচ্চ ৮৫৪টি আশ্রয়কেন্দ্র রয়েছে। সেই সঙ্গে ৬ হাজার ২৪৭টি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও ১ হাজার ৬৬টি মাধ্যমিক বিদ্যালয় আশ্রয়ের জন্য খোলা রাখার ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়।
ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচির (সিপিপি) উপপরিচালক মো. আব্দুর রশীদ জানান, বরিশাল বিভাগজুড়ে ৩২ হাজার ৫০০ স্বেচ্ছাসেবকও প্রস্তুত রয়েছে। যার মধ্যে বরিশাল সদরে ৬০, ভোলায় ১৩ হাজার ৬০০, পটুয়াখালীতে ৮ হাজার ৭০০, বরগুনায় ৮ হাজার ৪৪০ ও পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ায় ১ হাজার ৭০০ জন সিপিপির স্বেচ্ছাসেবক রয়েছে। যারা ৪ নম্বর সংকেত পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সংকেত পতাকা উত্তোলন, মাইকিং দিয়ে প্রচার কার্যক্রম শুরু করবে বলে জানিয়েছেন সিপিপির উপপরিচালক মো. আব্দুর রশীদ।
এ ছাড়া বিভাগজুড়ে বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির (বিডিআরসিএস) দেড় হাজারের বেশি স্বেচ্ছাসেবক প্রস্তুত রয়েছে। বরিশাল আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বশির আহম্মেদ বলেন, ঘূর্ণিঝড়ে রূপান্তর হলে রিমাল খুলনা ও খেপুপাড়ার মাঝে আঘাত করবে। এখনো সঠিক গতিপথ নির্ধারিত হয়নি।
মন্তব্য করুন