কুমিল্লা নগরীতে চাঁদাবাজির অভিযোগে আবদুল হাসান চৌধুরী অপু নামে এক যুবককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
শনিবার (২৫ মে) দুপুরে আদালতের মাধ্যমে আসামিকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
এর আগে শুক্রবার (২৪ মে) গভীর রাতে মোগলটুলির বাসা থেকে আবদুল হাসান চৌধুরী অপুকে গ্রেপ্তার করা হয়।
কুমিল্লার কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি ফিরোজ হোসেন কালবেলাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
কুমিল্লা নগরীর ৫ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা জাতীয় পার্টির নেতা এয়ার আহমেদ সেলিমের ছেলে শাকিল আহমেদ রানা বলেন, অপু ও তার সাঙ্গপাঙ্গরা ৫ নম্বর ওয়ার্ডে যারাই নতুন বাড়ি নির্মাণ কিংবা সংস্কার করেন তাদের নিকট চাঁদা দাবি করেন। এ চাঁদাবাজ চক্রটি আমার সঙ্গেও একই আচরণ করেছে।
তিনি বলেন, চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানালে বুধবার (২২ মে) রাত ১১টার দিকে চাঁদাবাজ অপু ও তার সঙ্গীরা গাড়ি থামিয়ে আমাকে আক্রমণ করে। আমাকে পিটিয়ে আহত করে। পরে আমি হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি আসি। এরপর কোতোয়ালি মডেল থানায় অভিযোগ করি। পুলিশ রাতে তাকে গ্রেপ্তার করেছে।
রানা আরও বলেন, শুধু চাঁদাবাজিই নয়, অপু নিজেকে সার্জেন্ট পরিচয় দিতেন। তার থেকে বাড়ির নির্মাণসামগ্রী কেনার জন্য চাপ প্রয়োগ করত। নির্মাণসামগ্রী না কিনলে ট্রাক আটক করে তার পুলিশ পরিদর্শক ভাইয়ের কাছে নিয়ে যেতেন। তার সঙ্গে পরিবারের আরও কিছু সদস্য জড়িত আছে।
সিটি করপোরেশনের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের একাধিক বাসিন্দা জানান, অপুর চাঁদাবাজিতে অতিষ্ঠ এলাকাবাসী। প্রতিনিয়ত আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে চলাফেরা করে। তার সাঙ্গপাঙ্গরা খোঁজখবর নেয় কে বাড়িঘর তৈরি করছে। পরে অপু আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে সেখানে হাজির হয়ে চাঁদাবাজি করেন। তিনি পূর্বেও চাঁদাবাজি করে জেল খেটেছেন। চাঁদাবাজি করতে গিয়ে পুলিশ পরিদর্শক ভাইয়ের প্রভাব খাটান তিনি।
এ বিষয়ে কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের মেয়র সূচনা বলেন, অপু একজন চিহ্নিত চাঁদাবাজ। তার বিষয়ে অনেক অভিযোগ পেয়েছি। পুলিশ প্রশাসনকে ধন্যবাদ জানাই। যারাই এ নগরীতে চাঁদাবাজি করার চেষ্টা করবে তাদের কোনো প্রকার ছাড় দেওয়া হবে না।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ট্রাফিক পুলিশ পরিদর্শক জিয়াউল হক টিপু বলেন, অপু আমার আপন ছোট ভাই না। সে এলাকার ছোট ভাই। আত্মীয়স্বজনের সঙ্গে কথাকাটাকাটি নিয়ে তার ঝামেলা হয়েছিল। বিষয়টি মীমাংসার চেষ্টা চলছে।
ওসি ফিরোজ হোসেন বলেন, অপুর বিরুদ্ধে চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন অপরাধে ৮-৯টি মামলা রয়েছে। এতদিন জামিনে ছিলেন। চাঁদাবাজি ও হামলার মামলায় তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। শনিবার তাকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
কুমিল্লার পুলিশ সুপার (এসপি) আবদুল মান্নান কালবেলাকে বলেন, অপু নিজেকে ট্রাফিক সার্জেন্ট পরিচয় দেয় এ কথা আগে শুনিনি। তার ভাই ট্রাফিক পরিদর্শক জিয়াউল হক কি না এ বিষয়টিও আমার জানা নেই। তবে বিষয়টি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মন্তব্য করুন