ঘূর্ণিঝড় রিমালের প্রভাবে নোয়াখালীর হাতিয়া ও সুবর্ণচরের উপকূলীয় মেঘনা নদী উত্তাল হয়ে উঠেছে।
শনিবার (২৫ মে) বিকেল ৪টার পর থেকে আকাশ কালো হয়ে বৃষ্টি শুরু হয়েছে। এর আগে দুপুরের পর থেকে নদীতে বড় বড় ঢেউ আছড়ে পড়ছে।
হাতিয়ার ১১নং নিঝুমদ্বীপ ইউনিয়নে বেড়িবাঁধ না থাকায় জোয়ারের পানি ঢুকে যাওয়ার আশঙ্কা করছে নিঝুম দ্বীপবাসী। এদিকে ৭নং তমরুদ্দিন ইউনিয়ন এবং ৬নং চরকিং ইউনিয়নের পশ্চিমাংশে ক্ষতিগ্রস্ত বেড়িবাঁধের কারণে জোয়ারের পানি ঢুকে যাওয়ার আশঙ্কা করছে এলাকাবাসী।
শনিবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে নোয়াখালী জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে জেলা প্রশাসক দেওয়ান মাহবুবুর রহমানের সভাপতিত্বে জেলা দুর্যোগ ও ব্যবস্থাপনা কমিটির এক জরুরি সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সভায় সম্ভাব্য দুর্যোগ মোকাবিলায় হাতিয়া ও সুবর্ণচর উপজেলার ইউএনওসহ অন্য কর্মকর্তাদের প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করার নিদের্শনা প্রদান করা হয়।
আবহাওয়াবিদ মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে সমুদ্রে তৈরি হওয়া নিম্নচাপের কারণে নোয়াখালীর উপকূলীয় এলাকায় ৩নং সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে এবং মাছ ধরার নৌকাসহ সাধারণের নৌযানকে উপকূলের কাছাকাছি থাকতে বলা হয়েছে।
হাতিয়া উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শুভাশীষ চাকমা জানান, ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় সব ধরনের প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। প্রস্তুত করা হয়েছে আশ্রয়কেন্দ্রগুলোও। জেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির নির্দেশনা মোতাবেক সব ধরনের কার্যক্রম সম্পন্ন করা হয়েছে।
হাতিয়া ইসলামিক ফাউন্ডেশনের কর্মকর্তা আমির হামজা জানান, ইউএনওর নির্দেশে উপকূলবাসীকে সতর্ক করার জন্য সকল মসজিদের মাইকে ইমামদের মাধ্যমে সতর্ক থাকার নির্দেশনা দেওয়া হয়।
ঘূর্ণিঝড়ে নিরাপদ থাকতে কী করবেন?
ঘূর্ণিঝড়ের সময় নিজেকে সুরক্ষিত রাখতে কী করবেন, আর কী করবেন না-
১. বাড়ির কাছাকাছি থাকা মরা গাছের ডাল ছেঁটে ফেলুন। গাছের ব্যাপারে সতর্ক থাকুন। যাতে বাড়ির ওপর এসে না পড়ে।
২. টিনের পাতলা শিট, লোহার কৌটা যেখানে সেখানে পড়ে থাকলে এক জায়গায় জড়ো করুন। না হলে ঝড়ের সময় এর থেকে বিপদ হতে পারে।
৩. কাঠের তক্তা কাছে রাখুন যাতে কাচের জানালায় সাপোর্ট দেওয়া যায়।
৪. ফোন, ল্যাপটপ ও অন্যান্য জরুরি বৈদ্যুতিক যন্ত্র আগে থেকেই চার্জ দিয়ে রাখুন।
৫. হালকা শুকনো খাবার রাখুন বড়সড় বিপদের জন্য।
৬. পর্যাপ্ত পানি মজুত রাখুন।
৭. যে ঘরটি সবচেয়ে নিরাপদ সেখানে আশ্রয় নিন।
৮. বাড়ির পোষ্য ও গবাদিপশুদেরও নিরাপদ স্থানে এনে রাখুন।
৯. বিদ্যুৎ ব্যবস্থা ঠিক থাকলে টিভি খবরে নজর রাখুন। না হলে রেডিও চালিয়ে রাখতে পারেন।
১০. ঝড় থামতেই বাইরে বের হবেন না। অপেক্ষা করুন কারণ ঘূর্ণিঝড় চক্রাকারে ঘোরে।
মন্তব্য করুন