যশোর হামিদপুরে ইজিবাইক চালক মফিজুর রহমান হত্যা মামলার মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব-৬। আসামি ইকতিয়ার বিশ্বাস (৪৩) যশোর সদর উপজেলার হামিদপুর গ্রামের মকছেদ আলী বিশ্বাসের ছেলে। শুক্রবার (২৪ মে) ভোরে সাতক্ষীরা সীমান্ত দিয়ে ভারতে পালানোর সময় র্যাবের হাতে ধরা পড়েন ইকতিয়ার।
র্যাব-৬ এর কোম্পানি অধিনায়ক মোহাম্মদ সাকিব হোসেন এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছেন, ইজিবাইক চালক হত্যা মামলার মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি ইকতিয়ার গোপনে সাতক্ষীরা জেলার সীমান্তবর্তী এলাকা হয়ে ভারতে পালানোর চেষ্টা করছে এমন সংবাদে অভিযান চালানো হয়। এ সময় যশোর ক্যাম্পের একটি আভিযানিক দল সদর হাসপাতাল এলাকা থেকে আসামিকে গ্রেপ্তার করে।
র্যাব জানায়, ২০১১ সালের ২২ জুন রাতে যশোর জেলার হামিদপুরের ইজিবাইক চালক মফিজুর রহমান তার হেলপার নয়নকে নিয়ে পুরাতন কেন্দ্রীয় বাস স্টান্ড (মনিহার মোড়) থেকে বাড়ির পথে ফিরছিলেন। পথিমধ্যে হেলপার নয়নকে ইজিবাইক দিয়ে বাড়িতে চলে যেতে বলেন এবং তিনি ময়লাখানার সামনে নেমে যান।
নয়নকে ভিকটিম মফিজুর সে সময় জানায়, ইকতিয়ারের কাছে সে ভাড়ার টাকা পাবে এবং সেই টাকা নেওয়ার জন্য তাকে ময়লাখানার সামনে ডেকেছে। এরপর থেকে তার আর খোঁজ পাওয়া যায় না। ওই বছরের ২৪ জুন সকালে হামিদপুর ময়লাখানার পাশের একটি পুকুর থেকে মফিজুর রহমানের লাশ উদ্ধার করা হয়। পরে এ ঘটনায় নিহতের স্ত্রী আয়েশা বেগম বাদী হয়ে কোতোয়ালী থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।
র্যাব আরও জানায়, ঘটনার পরপরই আইনশৃঙ্খলা বাহিনী হত্যার ঘটনাস্থল থেকে পাওয়া আলামত ও গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে আসামি ইকতিয়ার ও অপর একজন আসামিকে আটক করে। একে একে বেরিয়ে আসে রহস্য এবং তারা আদালতে হত্যার কথা স্বীকার করে জবানবন্দি দেন। তাদের জবানবন্দিতে উঠে আসে তাদের আরও তিন সহযোগীর নাম। মূলত পাওনা টাকাকে কেন্দ্র করে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয় মফিজুরকে এবং লাশ ফেলে হামিদপুর ময়লাখানার পেছনের একটি পুকুরে ফেলে দেওয়া হয়।
এই মামলার তদন্ত শেষ করে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা আসামিদের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দেন। আদালত বিচারকার্য শেষে এ হত্যায় আসামিদের সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ পাওয়ায় গত ২০ মে পাঁচজন আসামিকেই মৃত্যুদণ্ডের সাজা প্রদান করেন। এ সময় তিনজন আসামি আদালতে হাজির থাকলেও ইকতিয়ার ও অপর একজন আসামি পলাতক থাকেন। আদালত সাজা প্রদান পূর্বক গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করলে র্যাব-৬, যশোর মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত পলাতক আসামিদের গ্রেপ্তারে গোয়েন্দা তৎপরতা বৃদ্ধি করে।
গ্রেপ্তারকৃত আসামিকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, হত্যা মামলায় সে ধারণা করেছিল তার সাজা হবে তাই রায়ের দিন ইচ্ছা করে আদালতে হাজির হননি। তার মৃত্যুদণ্ডের সাজা হয়েছে বিষয়টি নিশ্চিত হয়ে ভারতে পালিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করে। সে অনুযায়ী সে গত ২৩ মে সাতক্ষীরা জেলার সদর থানাধীন সদর হাসপাতাল এলাকায় আত্মগোপন থেকে অবৈধপথে ভারতে যাওয়ার চেষ্টা করছিল। তার বিরুদ্ধে এ হত্যা মামলা ছাড়াও ১টি ডাকাতি মামলা ও ১টি অন্যান্য ধারায় মামলা বিচারাধীন রয়েছে।
পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য গ্রেপ্তারকৃত আসামিকে যশোর জেলার কোতয়ালী মডেল থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
মন্তব্য করুন