ডিঙি নৌকায় ভেসে খালে-বিলে ও নদীতে বড়শি দিয়ে মাছ শিকার করেন হাছান মোল্লার চার মেয়ে। তাদের বাড়ি বরগুনার তালতলী উপজেলার নিওপাড়া গ্রামে। শুধু মাছ শিকার করেই সংসার চলে তাদের। কখনো হাত দিয়ে, কখনো বড়শি দিয়ে, আবার কখনো জাল দিয়ে মাছ ধরেন তারা। এভাবেই দিনরাত পরিশ্রম করে সংসার চালাচ্ছেন চার বোন।
বাবার অভাবের সংসারে চার বোন খরস্রোতা পায়রা নদীতে মাছ শিকার শুরু করেন। স্বামীর সংসারে গিয়েও মাছ ধরে চালাতে হয় সংসার। দরিদ্র পরিবারে চার বোনের বিয়ে হলেও কেবল সংসারই বড় হয়েছে তাদের। ভাগ্য ফেরেনি কারও। তাই বাধ্য হয়েই সংসারের হাল ধরতে বড়শি দিয়ে মাছ ধরাকেই পেশা হিসেবে বেছে নিয়েছেন তারা। এভাবেই ৪০ বছরেরও বেশি সময় ধরে বড়শি দিয়ে মাছ ধরছেন ৪ বোন।
সময়ের স্রোতে তাদের এখন বয়স বেড়েছে। আগের মত আর পরিশ্রমও করতে পারেন না। একসময় লোকলজ্জার ভয়ে রাতে মাছ শিকার করে সংসার চালালেও এখন দিনে মাছ ধরেও সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। নদীতে আগের মত আর মাছ ধরা না পড়ায় আয় কমে গেছে অনেক। সারাদিন বড়শি নিয়ে বসে থেকেও ২০০-৩০০ টাকার মাছও ধরতে পারেন না তারা।
স্থানীয়রা বলছেন, অভাবের তাড়নায় বাবার ঘর থেকেই চার বোন দারিদ্রের সাথে সংগ্রাম করে বড় হয়েছেন। তিনবেলা খাবার যোগাতে মাছ ধরে স্থানীয় বাজারে বিক্রি করেই নিজের সংসারসহ বাবার ভরণপোষণের দায়িত্বও পালন করেছেন।
ছোটবেলা থেকে মাছ শিকার করলেও ভাগ্যের পরিবর্তন হয়নি চার বোনের। তাইতো ভাগ্যের ওপর আক্ষেপ রেখে পরন্ত বয়সে তাদের একটাই চাওয়া, সন্তানরা কখনও যেন তাদের মতো ক্ষুধার যন্ত্রণা না ভোগে।
মন্তব্য করুন