ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে বাবার বাড়ি থেকে চাহিদামতো টাকা এনে দিতে না পাড়ায় জোনাকি বেগম (২৫) নামের এক গৃহবধূকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে শ্বশুরবাড়ির লোকদের বিরুদ্ধে।
শুক্রবার (২৪ মে) বিকেলে উপজেলার বুড়িশ্বর ইউনিয়নের শ্রীঘর গ্রামে ঘটনাটি ঘটে।
নিহত জোনাকি বেগম শ্রীঘর গ্রামের মো. সাদেক মিয়ার মেয়ে। তিন বছর আগে পারিবারিকভাবে একই গ্রামের তালব আলীর ছেলে আল আমিনের সঙ্গে বিয়ে হয় জোনাকির।
নিহতের পরিবার সূত্রে জানা গেছে, জোনাকির দের বছর বয়সী একটি ছেলেসন্তান রয়েছে। বিয়ের পর থেকেই যৌতুকের দাবিতে বিভিন্ন সময় জোনাকিকে মারধর করতেন স্বামী আল আমিন। সোনালীর বাবা একজন হতদরিদ্র কৃষক। অভাবের সংসার হলেও মেয়ের সুখের কথা চিন্তা করে কয়েক দফায় জামাইকে টাকা দেন তিনি। সর্বশেষ দাবি করা যৌতুকের টাকা না পেয়ে শুক্রবার বিকেলে জোনাকিকে নির্মম নির্যাতন করেন আল আমিন ও তার পরিবারের লোকেরা। পরে অবস্থা সংকটাপন্ন দেখে তারা তাকে নাসিরনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসে। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক জোনাকিকে মৃত ঘোষণা করেন। পরে হাসপাতালে লাশ ফেলে পালিয়ে যায় তারা।
হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. মো. সাইফুল ইসলাম জানান, হাসপাতালে আনার আগেই জোনাকির মৃত্যু হয়েছে। তার শরীরে বড় ধরনের কোনো আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি। শ্বাসরোধ কিংবা অন্য কোনোভাবে তাকে হত্যা করা হয়েছে কি না- সেটা পোস্টমর্টেম রিপোর্ট আসলে জানা যাবে।
নিহতের মা সেলিনা বেগম অভিযোগ করে বলেন, আমার মেয়েকে জামাই আর শ্বশুরবাড়ির লোকেরা হত্যা করে হাসপাতালে ফেলে গেছে। আমি আমার মেয়ের হত্যার বিচার চাই।
নিহতের বাবা সাদেক মিয়া বলেন, বিয়ের ছয় মাস পর থেকেই যৌতুকের দাবিতে আল আমিন আমার মেয়েকে নির্যাতন শুরু করে। মেয়ের মুখের দিকে তাকিয়ে শত অভাবের পরও বহুবার ওদের চাহিদা পূরণ করেছি। সর্বশেষ দাবি করা যৌতুক না পেয়ে ওরা আমার মেয়েটাকে মেরেই ফেলল।
নাসিরনগর থানার ওসি সোহাগ রানা বলেন, ঝগড়া লেগে স্বামী হয়তো স্ত্রীকে মারধর করেছিল। নিহতের পরিবারের দাবি, বিভিন্ন সময় জোনাকির স্বামী যৌতুক চাইত, যৌতুকের টাকার জন্য মারধর করত। মরদেহ সুরতহাল করে পোস্টমর্টেমের জন্য পাঠিয়েছি। ওরা মামলা করলে এজাহার অনুযায়ী ব্যবস্থা নেব।
মন্তব্য করুন