লালমনিরহাট প্রতিনিধি
প্রকাশ : ২২ মে ২০২৪, ০৯:২৯ পিএম
আপডেট : ২২ মে ২০২৪, ১০:৩৭ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

কেটে ক্ষতস্থানে মরিচ ও লবণ লাগিয়ে দিলেন স্বামী

আহত আছিয়া। ছবি : কালবেলা
আহত আছিয়া। ছবি : কালবেলা

নেশার টাকা না পেয়ে স্ত্রী আছিয়াকে ব্লেড দিয়ে কেটে ক্ষতবিক্ষত করেছে স্বামী আজিজুল ইসলাম। এ সময় ক্ষত জায়গায় মরিচের গুঁড়া ও লবণ লাগিয়ে দেন তিনি। এ যেন মধ্যযুগীয় ঘটনাকেও হার মানায়। নির্যাতিত আনিছা লালমনিরহাট সদর হাসপাতালের বিছানায় যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছেন।

বুধবার (২২মে) দুপুরে আনিছার বাবা আমির হোসেন ৩ জনকে আসামি করে সদর থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার দুপুরে সদর উপজেলার মোগলহাট ইউনিয়নের ফুলগাছ গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, এক যুগ আগে জেলার আদিতমারী উপজেলার দুর্গাপুর ইউনিয়নের গন্ধমরুয়া এলাকার আমির হোসেনের মেয়ে আনিছা বেগমের সঙ্গে লালমনিরহাট সদর উপজেলার মোগলহাট ইউনিয়নের ২নং ফুলগাছ গ্রামের জাবুল ইসলামের ছেলে আজিজুলের বিয়ে হয়। বিয়ের পর আনিছা বেগম ও আজিজুলের সংসার ভালই চলছিল। এর মধ্যে তাদের ঘরে এক মেয়ে ও এক ছেলে সন্তানের জন্ম হয়। গত কয়েক বছর হয় আজিজুল নেশায় আসক্ত হয়ে স্ত্রী আনিছার সঙ্গে ঝগড়া বিবাদ ও মারধর করতে থাকে। স্বামী আজিজুল ও শ্বশুর-শাশুড়ি আনিছাকে বাবার বাড়ি থেকে টাকা আনতে চাপ দেয়। পরে আনিছা বাবার কাছ থেকে কিছু টাকা এনে দেন। এরপর আবার টাকার জন্য আনিছাকে চাপ দেয় আজিজুল। এবার আনিছা বাবার বাড়ি থেকে টাকা আনতে অস্বীকার করলে বেড়ে যায় নির্যাতনের মাত্রা।

মঙ্গলবার (২১ মে) সকাল ৯টায় আবারও আজিজুল বাবার বাড়ি থেকে টাকা আনতে বললে আনিছা টাকা আনতে অস্বীকার করে। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে আজিজুল তার স্ত্রী আনিছাকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে এলোপাতাড়ি কোপাতে থাকে। এতে আনিছা মাটিতে লুটিয়ে পড়লে পরে তার শ্বশুর ও শাশুড়ির সহযোগিতায় ব্লেড দিয়ে শরীরের বিভিন্ন স্থানে কেটে ক্ষতস্থানে মরিচের গুঁড়া ও লবণ লাগিয়ে দেয় স্বামী। এ সময় আনিছার চিৎকারে আশপাশের লোকজন ছুটে আসলে নেশাখোর আজিজুল তাদের ধারালো অস্ত্র উঁচিয়ে ভয় দেখায়।

এ সময় ভয়ে লোকজন কাছে যেতে পারেনি এবং আনিছাকে সাহায়্য করতেও পারেনি। পরে প্রতিবেশীরা দ্রুত আনিছার বাবার বাড়িতে খবর দেয়। খবর পেয়ে আনিছার বাবা মেয়ের বাড়িতে এসে গুরুতর আহত ও অচেতন অবস্থায় মেয়েকে উদ্ধার করে লালমনিরহাট সদর হাসপাতালে ভর্তি করায়। বর্তমানে নির্যাতিত আনিছা লালমনিরহাট সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় যন্ত্রণায় ছটফট করছে।

আনিছার বাবা আমির হোসেন বলেন, আমার মেয়েকে রক্তাক্ত ও অচেতন অবস্থায় ঘরের বাইরে ফেলে রাখে। পরে মেয়েকে উদ্ধার করে লালমনিরহাট সদর হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করেছি। তিনি বাদী হয়ে আনিছার স্বামী ও তার শ্বশুর-শাশুড়িকে আসামি করে সদর থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন বলেও জানান।

এ ঘটনায় লালমনিরহাট সদর থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) স্বপন কুমার সরকার জানান, অভিযোগ পাওয়ার পরপরই ভিকটিমের অবস্থা জানার জন্য হাসপাতালে অফিসার পাঠানো হয়েছে। ঘটনাটি তদন্ত করে পরবর্তীতে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

নির্বাচন ও অন্তর্বর্তী সরকার নিয়ে জামায়াতের আমিরের বার্তা

বিশেষ সাক্ষাৎকার / মা-ছেলের ভিডিও ভাইরাল হওয়ায় ক্ষেপে যান ডিবি হারুন

ঢাবিতে জুলাই বিপ্লবে হামলায় জড়িতদের বিচারের দাবিতে শিক্ষার্থীরা

ঢাবিতে মানববন্ধন / আমেরিকা-ভারতের যৌথ মদদে পার্বত্য চট্টগ্রামকে অস্থিতিশীল করা হচ্ছে

কুমিল্লায় বিপুল গাঁজার চালান জব্দ, আটক ৪

বঁটি দিয়ে চুল কাটেন রুনা খান

যুব-ছাত্র-স্বেচ্ছাসেবক দলের যৌথ কর্মিসভা / ‘আমরা যদি থাকি সৎ দেশ সংস্কার সম্ভব’

সাম্প্রদায়িক সংঘাতের সুযোগ বাংলাদেশে নেই: খেলাফত মজলিস

দুই ভারতীয়কে গ্রেপ্তারের দাবিতে খতমে নবুওয়তের বিক্ষোভ

পরিচালকদের সঙ্গে প্রেম করে কাজ পান স্বস্তিকা

১০

ভারতে বাংলাদেশি তরুণী গ্রেপ্তার

১১

মাহমুদুর রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তনে হেফাজতের অভিনন্দন বার্তা

১২

ছাত্র আন্দোলনে নারীদের ওপর হামলাকারীদের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপের ঘোষণা

১৩

জাতিসংঘে বিবিএনজে চুক্তির নথি জমা দিয়েছে বাংলাদেশ

১৪

মায়ের সঙ্গে শহীদ হওয়ার গল্প বলতেন খোবাইব

১৫

‘সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গঠিত হলে শহীদদের রক্তের মূল্যায়ন হবে’

১৬

ভাষাসৈনিক প্রবীণ সাংবাদিক আবদুল গফুর আর নেই

১৭

টাইগার রবির ঘটনায় ভারতীয় পুলিশের বক্তব্য

১৮

১৩ জেলায় ৬০ কিমি বেগে ঝড়ের পূর্বাভাস

১৯

যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যবিত্ত শ্রেণিকে নিয়ে ট্রাম্পের চিন্তা নেই : কমলা হ্যারিস

২০
X