জয়পুরহাটের পাঁচবিবি উপজেলা নির্বাচনে প্রথমবারের মতো চেয়ারম্যান পদে সাবেকুন নাহার শিখা নামে স্বতন্ত্র এক নারী প্রার্থীর কাছে আওয়ামী লীগের হেভিওয়েট পাঁচজন প্রার্থীর ভরাডুবি হয়েছে।
সাবেকুন নাহার শিখা চেয়ারম্যান পদে (ঘোড়া প্রতীক) ৩৮ হাজার ৩৯ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। তার বিপরীতে জয়পুরহাট জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মুনিরুল শহীদ মুন্না (মোটরসাইকেল) ১১ হাজার ৮০০ ভোট পেয়ে নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী হয়েছেন।
এ ছাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু বক্কর সিদ্দিক মণ্ডল (আনারস) প্রতীকে ১১ হাজার ৭৪৭ ভোট, জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি জাহিদুল আলম বেনু (কৈ মাছ) ৯ হাজার ১৭০ ভোট, কুসুম্বা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সোহরাব হোসেন মণ্ডল (দোয়াত-কলম) ৪ হাজার ৬ ভোট ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক সুমন চৌধুরী (টেলিফোন) ১ হাজার ৫৭৬ ভোট পেয়েছেন।
মঙ্গলবার (২১ মে) রাতে উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে ভোটের ফলাফল গণনা শেষে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা আরিফা সুলতান এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
জানা গেছে, পাঁচবিবি উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের পাঁচজন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। অন্যদিকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে সাবেকুন নাহার শিখা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। আওয়ামী লীগের দুই বড় শক্তির বিপক্ষে ভোটে নেমে বিপুল ভোটে জয়লাভ করেন এ নারী প্রার্থী।
এর আগে পাঁচবিবি পৌরসভা নির্বাচনে মেয়র হাবিবুর রহমান হাবিবের বিপক্ষে নির্বাচন করে পরাজিত হয়েছেন। এবার উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগের হেভিওয়েট পাঁচ প্রার্থীকে পরাজিত করে বিপুল ভোটে জয়লাভ করেছেন সাবেকুন নাহার শিখা।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে দলীয় গ্রুপিং ও লবিংয়ের কারণে পাঁচবিবি উপজেলা পরিষদ থেকে চেয়ার হারালেন আওয়ামী লীগ। পাঁচবিবি উপজেলায় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা দুই গ্রুপে বিভক্ত। যার একটিতে নেতৃত্ব দেন জয়পুরহাট-১ আসনের সাংসদ অ্যাডভোকেট সামছুল আলম দুদু, অন্যটিতে পাঁচবিবি পৌরসভার মেয়র হাবিবুর রহমান হাবিব। এবারের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের পাঁচজন প্রার্থীর মধ্যে মেয়র হাবিবের অনুসারী ছিলেন জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মুনিরুল শহীদ মুন্না। তিনি উপজেলা চেয়ারম্যান। এবারের নির্বাচনে মোটরসাইকেল প্রতীকে নির্বাচন করে পরাজিত হয়েছেন।
অন্যদিকে, জয়পুরহাট-১ আসনের সংসদ সদস্যের অনুসারী ছিলেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু বক্কর সিদ্দিক মণ্ডল। তিনি আনারস প্রতীকে নির্বাচন করেছেন। জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি জাহিদুল আলম বেনু (কৈ মাছ), উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক সুমন চৌধুরী (টেলিফোন) ও কুসুম্বা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সোহরাব হোসেন মণ্ডল (দোয়াত-কলম) প্রতীকে নির্বাচন করেছেন। প্রথমে সংসদ সদস্য কারোর পক্ষ না নিলেও পরবর্তীতে আনারস প্রতীকের আবু বক্কর সিদ্দিক মণ্ডলকে সমর্থন দেন। এতেই বিপাকে পড়েন তৃণমূলের নেতাকর্মীরা। যে কারণে আওয়ামী লীগের ভরাডুবি হয়।
মন্তব্য করুন