এক সময় কৃষি কাজ করতেন রাজবাড়ী জেলার পাংশা উপজেলার টিঅ্যান্ডটি মোড় এলাকার বাসিন্দা খোকন বিশ্বাস। কৃষি কাজ করে সংসারের টানাপড়নের মধ্যে সবার ভরণপোষণ মেটাতে হিমশিম খাচ্ছিলেন তিনি। তাই কৃষি কাজের পাশাপাশি শুরু করেন কুঁচিয়া শিকার। সেই থেকে ২২ বছর ধরে কুঁচিয়া বিক্রি করে সংসার চালাচ্ছেন তিনি।
সম্প্রতি জাজিরা উপজেলার সেনেরচর মোল্লা কান্দি এলাকার একটি নালায় কুঁচিয়া খুঁজছেন খোকন বিশ্বাস। পেয়েছেনও কয়েকটি। সেখানে গিয়ে কথা হয় তার সঙ্গে।
জানতে চাইলে তিনি কালবেলাকে বলেন, এক সময় কৃষি কাজ করেছি। বেশি আয়-রোজগার করতেই কুঁচিয়া শিকার শুরু করি। প্রায় দুই যুগ ধরে হাওর, ডোবা ও পুকুরসহ বিভিন্ন স্থানে কুঁচিয়া ধরে সংসার চালাই। পরিবারের সবার ভরণপোষণ চলে প্রাকৃতিক উৎসের এ কুঁচিয়া মাছ ধরেই। ফাল্গুন মাস থেকে মূলত কুঁচিয়া ধরার অভিযান শুরু হয়। চলে আশ্বিন মাস পর্যন্ত।
তিনি আরও বলেন, বর্তমানে দিনে ৫/৬ কেজি কুঁচিয়া ধরতে পারি। অন্য পেশার চেয়ে এ পেশায় ভালো আয় হচ্ছে বিদেশে কুঁচিয়ার অনেক চাহিদা। দামও অনেক বেশি। কেজি ৩১০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। কুইচা বিক্রি করে ভালোই সংসার চলছে।
খোকন বিশ্বাস আরও বলেন, দেশের প্রায় সব স্বাদুপানির জলাশয়েই যেমন- বিল, হাওর-বাঁওড়, ডোবা-নালায় কুঁচিয়া মাছ পাওয়া যায়। পানির অগভীর ও তীরবর্তী অংশ ও পাড়ে মাটির গর্তে এ মাছ থাকে। আগে অনেক পরিমাণে কুঁচিয়া পাওয়া যেত। বর্তমানে কুঁচিয়া অনেক কমে গেছে।
জাজিরা উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. রেজাউল শরীফ কালবেলাকে বলেন, প্রাকৃতিকভাবে জলাশয়, ডোবা বা পুকুরে প্রচুর কুঁইচা জন্মায়। বিদেশে এর ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। আর এসব কুঁইচা শিকার করে অনেকেই জীবিকা নির্বাহ করছেন। এতে বেকারত্ব দূর করাও সম্ভব। তবে যেসব কুইচা প্রাকৃতিকভাবে জলাশয়ে জন্ম নেয় এগুলো এখন বিলুপ্তপ্রায়।
জাজিরা উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) সাদিয়া ইসলাম লুনা কালবেলাকে বলেন, কুইচা মাছ ধরে বিক্রি করে অনেকেই অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হচ্ছেন। বিদেশে এর চাহিদা ব্যাপক। বাণিজ্যিকভাবে কুঁইচা চাষ করা গেলেও সরকারি উদ্যোগে প্রশিক্ষণের মাধ্যমে উৎপাদন বৃদ্ধি করা হলে জাতীয় অর্থনীতিতে বিরাট ভূমিকার পাশাপাশি কর্মসংস্থানেরও সুযোগ সৃষ্টি হবে।
মন্তব্য করুন