পাবনার বেড়া উপজেলার আমিনপুরে রূপন্তী সাহা নামের এক শিক্ষার্থীকে অপহরণের ৫৪ দিন পেরিয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত উদ্ধার করতে পারেনি পুলিশ।
অপহরণের এতদিন পরও মেয়ের কোনো খোঁজ না পেয়ে শোকে স্তব্ধ পরিবার। মেয়েকে উদ্ধারে থানা পুলিশের দ্বারে দ্বারে ঘুরেও কোনো সহযোগিতা পাননি বলে অভিযোগ পরিবারের।
এর আগে গত ২৪ মার্চ রাতে ঘর থেকে বের হলে তাকে মাইক্রোবাসযোগে তুলে নিয়ে যায় আবিরসহ ৭/৮ জন। পরের দিন ২৫ মার্চ অপহৃত শিক্ষার্থীর বাবা উত্তম কুমার সাহা বাদী হয়ে আমিনপুর থানায় অপহরণ মামলা করেন।
অপহৃত রূপন্তী সাহা পুরান ভারেঙ্গা ইউনিয়নের হরিনাথপুর এসএসডি মডেল হাইস্কুল থেকে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে এ বছর মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (এসএসসি) পরীক্ষা দিয়েছে। ফলাফলে জিপিএ- ৪ দশমিক ৮৯।
এজহার সূত্রে জানা গেছে, পাবনার বেড়া উপজেলার আমিনপুরের পুরান ভারেঙ্গার হরিনাথপুর গ্রামের উত্তম কুমার সাহার মেয়ে রূপন্তী সাহা হরিনাথপুর এসএসডি মডেল হাইস্কুল থেকে এ বছর বিজ্ঞান বিভাগ থেকে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিল। স্কুলে পড়াশোনা অবস্থায় জাতসাখিনী ইউনিয়নের নন্দিয়ারা (বড়বাড়ি) গ্রামের নুরুল ইসলামের ছেলে মো. আবির নামের একটি ছেলে রূপন্তীকে বিভিন্ন সময়ে নানাভাবে প্রেমের প্রলোভন ও বিয়ের প্রস্তাব দিয়ে উত্যক্ত করে আসছিল। তার প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় বিভিন্ন হুমকি-ধমকি দেওয়া হয়।
মেয়েটি তার বাবা উত্তম কুমার সাহাকে বিষয়টি জানালে তিনি আবিরের বাসায় গিয়ে বিষয়টি জানান। পরে আবির মেয়েকে অপহরণের হুমকি দেয়। এরই ধারাবাহিকতায় গত মাসের (২৪ মার্চ) রাত ১টার দিকে ঘর থেকে বাইরে বের হলে রূপন্তীকে আবিরসহ ৭/৮ জন মিলে জোরপূর্বক মাইক্রোবাসযোগে অপহরণ করে নিয়ে যায়। এরপর অনেক জায়গায় খোঁজাখুঁজি করেও কোনো সন্ধান পাওয়া যায়নি। এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে আমিনপুর থানায় আবিরসহ পাঁচজনের নামে অপহরণ মামলা করা হয়েছে।
রূপন্তীর মা ফাল্গুনী সাহা কালবেলাকে বলেন, মেয়ে এসএসসি পরীক্ষায় ভালো ফলাফল অর্জন করলেও বিষাদে দিন কাটছে আমাদের। আসলে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে মেয়েকে অপহরণ করা হয়েছে। ছেলের মা ও বাবা এর সঙ্গে জড়িত রয়েছে। পুলিশ আমাদের কোনো সহযোগিতা করছে না। আমার মেয়েকে আমাদের মাঝে ফিরিয়ে দিতে পুলিশের প্রতি আহ্বান জানাই।
রূপন্তীর বাবা উত্তম কুমার সাহা বলেন, দীর্ঘ এক মাস ২৪ দিন অতিবাহিত হলেও মেয়েকে পাইনি।। থানায় মামলা করলেও মেয়েকে উদ্ধার করা তো দূরের কথা একজন আসামিকেও গ্রেপ্তার করেনি পুলিশ। পুলিশ আসামিদের পক্ষে কাজ করছে। পুলিশ শুধু আশ্বাস দিয়েই দায় সেরে যাচ্ছে। আমি মেয়েকে উদ্ধারে প্রশাসনের দ্বারে দ্বারে ঘুরছি। আমার মেয়ে জীবিত আছে না মেরে ফেলছে তার কিছুই বলতে পারছি না। মামলার তদন্তেরও কোনো অগ্রগতি নেই।
আমিনপুর থানা ওসি হারুনর রশীদ কালবেলাকে বলেন, এ ঘটনায় অপহরণ মামলা করা হয়েছে। অপহৃত স্কুলছাত্রীকে উদ্ধারে আমাদের অভিযান চলছে। আসামিদেরও গ্রেপ্তারের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। এ বিষয় সম্পর্কে পরে জানাতে পারব।
মন্তব্য করুন