‘আল্লাহ আমার বুকের মানিককে ফেরত দিয়েছেন। ছেলেকে ফিরে পাওয়ার এ আনন্দ প্রকাশ করা সম্ভব না’ এভাবেই জলদস্যুদের হাত থেকে মুক্তি পাওয়া সন্তানকে জড়িয়ে ধরে আনন্দ প্রকাশ করেন নাবিক জয় মাহমুদের মা।
দীর্ঘ প্রতীক্ষা শেষে বাড়ি ফিরেছে সোমালিয়ান জলদস্যুদের হাতে জিম্মি জাহাজ এমভি আবদুল্লাহর নাবিক নাটোরের বাগাতিপাড়ার জয় মাহমুদ। অনিশ্চিত অবস্থা কাটিয়ে স্বজনদের কাছে ফিরে আসায় পরিবারজুড়ে বইছে ঈদের আমেজ। তাকে একনজর দেখতে আত্মীয়-স্বজন,পাড়া-প্রতিবেশীসহ আশপাশের গ্রামের মানুষজন ভিড় করছে তার বাড়িতে।
মঙ্গলবার (১৪ মে) দেশে পৌঁছে চট্টগ্রাম বন্দরে আনুষ্ঠানিকতা শেষে আজ (১৫ মে) সকালে তিনি তার নিজ বাড়িতে ফেরেন। জয় মাহমুদ উপজেলার পাঁকা ইউনিয়নের সালাইনগর দক্ষিণপাড়া গ্রামের জিয়াউর রহমান ও আরিফা বেগম দম্পতির ছেলে।
জয়ের মা আরিফা বেগম (৫০) বলেন, আল্লাহ আমার বুকের মানিককে ফেরত দিয়েছেন। ছেলেকে ফিরে পাওয়ার এ আনন্দ প্রকাশ করা সম্ভব না। ঈদের আগে জলদস্যুদের হাতে আটক হওয়ার খবরে পরিবারে ঈদের আনন্দ মলিন হয়ে যায়। তবে, দীর্ঘদিন পর ছেলে ফিরে আসায় পরিবারে আজ ঈদের আনন্দ বিরাজ করছে।
জয়ের বাবা জিয়াউর রহমান (৫৬) বলেন, দীর্ঘ ২ মাস পর ছেলেকে ফিরে পেয়ে আমরা খুশি। সারা দেশের মানুষের দোয়ায় আজ সুস্থভাবে আমার ছেলেসহ ২৩ নাবিক বাড়ি ফিরতে পেরেছে।
নাবিক জয় মাহমুদ বলেন, এমভি আবদুল্লাহতে ৩৩ দিন আটক ছিলাম। গতকাল দেশে ফিরে আজ সকালে বাসায় এসেছি। এ আনন্দ বলে বোঝাতে পারব না।
জিম্মিদশার দূর্বিষহ দিনের কথা স্মরণ করে তিনি বলেন, আটকের প্রথম দিকের দিনগুলি অনেক কষ্টের ছিল। আটক হওয়ার পর সবাই কান্নাকাটি করছিল। কীভাবে কী হবে কিছুই বুঝতে পারছিলাম না। যতই দিন যাচ্ছিল জলদস্যুদের ব্যবহার শান্ত হচ্ছিল। জাহাজ কর্তৃপক্ষের দূরদর্শিতায় ৩৩ দিন আটক থাকার পর আল্লাহর রহমতে বাড়িতে ফিরতে পেরেছি। আটক অবস্থায় ঈদের নামাজ পড়লেও ঈদের আনন্দ ছিল না। আজ বাসায় ফিরে ঈদের চেয়েও বেশি আনন্দ হচ্ছে।
এর আগে, গত ১২ মার্চ ভারত মহাসাগরে সোমালিয়ান জলদস্যুদের হাতে জিম্মি হয় বাংলাদেশি পণ্যবাহী জাহাজ এমভি আবদুল্লাহ। আটক জাহাজের ২৩ নাবিক ও ক্রুদের মধ্যে জাহাজের সাধারণ নাবিক (ওএস) হিসেবে কর্মরত ছিলেন জয় মাহমুদ।
মন্তব্য করুন