সোমালি জলদস্যুদের হাত থেকে মুক্ত জাহাজ এমভি আবদুল্লাহ প্রায় এক মাস পর মঙ্গলবার (১৪ মে) দুপুরে ২৩ নাবিক নিয়ে চট্টগ্রামের উদ্দেশে রওনা দিয়েছে।
কবির গ্রুপের (কেএসআরএম) মিডিয়া উপদেষ্টা মিজানুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে সোমবার (১৩ মে) বিকেলে বঙ্গোপসাগরের কুতুবদিয়া চ্যানেলে এসে পৌঁছায় বাংলাদেশি পতাকাবাহী জাহাজ এমভি আবদুল্লাহ। আর মঙ্গলবার সকালে জাহাজটি সদরঘাট জেটিতে অবতরণ করে।
এমভি আবদুল্লাহ জাহাজের মাস্টার ক্যাপ্টেন মোহাম্মদ আবদুর রশিদ বলেন, কুতুবদিয়ায় নোঙর করার কারণ হলো, এত বড় জাহাজ বন্দর জেটিতে ভেড়ানোর সুযোগ নেই। জাহাজটিতে ৫৬ হাজার ৩৯১ টন চুনাপাথর রয়েছে। এতে জাহাজটির ড্রাফট (পানির নিচের অংশের দৈর্ঘ্য) বেড়ে হয়েছে সাড়ে ১২ মিটার, যা চারতলার সমান। ফলে বন্দর জেটিতে এটি ভেড়ানো সম্ভব হবে না।
মিজানুল ইসলাম বলেন, ‘গত ৩০ এপ্রিল ভোররাত ৪টার দিকে জাহাজটি সংযুক্ত আরব আমিরাতের মিনা সাকার বন্দর থেকে ৫৬ হাজার ৩৯১ টন চুনাপাথর নিয়ে দেশে রওনা দেয়।’
কেএসআরএম সূত্র জানিয়েছে, মঙ্গলবার নাবিকদের জেটিতে বরণ করার জন্য কেএসআরএমের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের উপস্থিত থাকার কথা রয়েছে। তারা ফুল দিয়ে বরণ করে নেবেন। নাবিকদের স্বজনদের কেউ কেউ এ সময় জেটিতে উপস্থিত থাকবেন বলেও জানা গেছে।
ঘটনাস্থলে উপস্থিত কালবেলার কক্সবাজারের পেকুয়া প্রতিনিধি এস এম জুবাইদ বলেন, জাহাজের ২৩ নাবিক পুরোপুরি সুস্থ আছেন বলে জানা গেছে। কুতুবদিয়ায় কিছু মালামাল খালাস শেষে বুধবার এমভি আবদুল্লাহ চট্টগ্রাম বন্দরের সদরঘাটে পৌঁছাবে বলে জানা গেছে।
দীর্ঘ অপেক্ষার পর মঙ্গলবার বাড়ি ফিরবেন এমভি আবদুল্লাহ জাহাজের ২৩ নাবিক। এ নিয়ে এমভি আবদুল্লাহ জাহাজের প্রধান কর্মকর্তা মো. আতিক উল্লাহ খানের স্ত্রী ফিরোজা আজমিন মিনা। নাবিকদের আসার খবর নিয়ে কথা হয় তার সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘এতদিন অপেক্ষায় ছিলাম কবে দিনটি আসবে। অবশেষে ঘনিয়ে এসেছে। সোমবার সকালেও তার সঙ্গে কথা হয়েছে। বলেছে, মঙ্গলবার বিকেলের দিকে বাড়ি ফিরবে। আমার কী যে আনন্দ লাগছে তা বলে বোঝাতে পারব না।’
জানা যায়, জাহাজটি কেএসআরএম গ্রুপের এসআর শিপিংয়ের মালিকানাধীন। এসআর শিপিং সূত্র জানিয়েছে, এমভি আবদুল্লাহ গত ৪ মার্চ আফ্রিকার দেশ মোজাম্বিকের মাপুটো বন্দর থেকে কয়লা নিয়ে যাত্রা করে। ১৯ মার্চ সংযুক্ত আরব আমিরাতের হারমিয়া বন্দরে পৌঁছানোর কথা ছিল। এর মধ্যে ১২ মার্চ দুপুর দেড়টার দিকে ভারত মহাসাগরে সোমালিয়ান জলদস্যুদের কবলে পড়ে জাহাজটি।
মুক্তিপণের বিনিময়ে দীর্ঘ এক মাস পর গত ১৩ এপ্রিল বাংলাদেশ সময় রাত ৩টায় মুক্তি পায় জাহাজসহ ২৩ নাবিক। মুক্তির পর জাহাজটি দুবাইয়ের উদ্দেশে রওনা দেয়। ২১ এপ্রিল বিকাল সাড়ে ৪টা নাগাদ সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইয়ের আল হারমিয়া বন্দরের বহির্নোঙরে পৌঁছে। জাহাজটিতে থাকা ৫৫ হাজার টন কয়লা সেখানে খালাস করা হয়। পরে সময়ে আমিরাতের মিনা সাকার বন্দর থেকে ৫৬ হাজার টন চুনাপাথর লোড করা হয়। এসব পণ্য নিয়ে দেশের পথে রওনা দেয় এমভি আবদুল্লাহ।
মন্তব্য করুন