চট্টগ্রামে ঐতিহ্যবাহী বিদ্যাপিঠ চট্টগ্রাম কলেজে সংঘর্ষের চার দিন পর কলেজ শাখা ছাত্রলীগ সভাপতি মাহমুদুল করিম ও সাধারণ সম্পাদক সুভাষ মল্লিক সবুজকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেছে সাধারণ শিক্ষার্থীসহ কলেজ ছাত্রলীগের বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মীরা। এ সময় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা মিষ্টি বিতরণ এবং একে অপরকে মিষ্টি খাইয়ে দিয়ে উল্লাস প্রকাশ করেন।
পরে তাদের দুর্নীতিবিরোধী বিভিন্ন স্লোগান দিতে দেখা যায়। সাধারণ শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি ছাত্রলীগের বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মীরাও সেখানে উপস্থিত ছিলেন।
সোমবার (১৩ মে) দুপুরে কলেজ ছাত্র সংসদ প্রাঙ্গণে এক সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এতে মাহমুদুল করিম ও সুভাষ মল্লিক সবুজের দুর্নীতি-অনিয়মের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়ে চট্টগ্রাম কলেজের সাধারণ শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগের নেতারা তাদের অবাঞ্ছিত ঘোষণা করে।
এ সময় সাধারণ শিক্ষার্থী ও নেতারা সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদকের বিরুদ্ধে খাম বাণিজ্য থেকে শুরু করে প্রবেশপত্র, রেজিস্ট্রেশন কার্ডের জন্য শিক্ষার্থীদের চাঁদা দিতে বাধ্য করা, কলেজের উন্নয়নমূলক কাজে চাঁদাবাজি, কলেজের প্রধান সহকারীসহ কর্মচারীদের ওপর নির্যাতন, শিক্ষক বদলিসহ নানা বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের অভিযোগ তুলে ধরে।
এর আগে গত ৯ মে নতুন ভর্তিতে খাম বাণিজ্যকে কেন্দ্র করে চট্টগ্রাম কলেজে দুই পক্ষের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে বেশ কয়েকজন আহত হয়। এ সংঘর্ষের পর থেকে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা পাল্টাপাল্টি অভিযোগ করে আসছেন।
সমাবেশে কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের সমালোচনা করে কলেজ ছাত্রলীগের সহসভাপতি মনিরুল ইসলাম বলেন, ২০১৮ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর চট্টগ্রাম মহানগর ছাত্রলীগ মাহমুদুল করিমকে সভাপতি এবং সুভাষ মল্লিক সবুজকে সাধারণ সম্পাদক করে এক বছরের জন্য কলেজ ছাত্রলীগের কমিটি ঘোষণা করেন। এরপর থেকেই তারা বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের মহানায়ক বনে যান।
এদিকে সাধারণ শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক আন্দোলনে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ চট্টগ্রাম কলেজ একাত্মতা পোষণ করেছে দাবি করে কলেজ ছাত্রলীগের আরেক সহসভাপতি জেড মনির। তিনি বলেন, চট্টগ্রাম কলেজে মাহমুদ-সবুজ সাধারণ শিক্ষার্থীদের জিম্মির মাধ্যমে চট্টগ্রাম কলেজ ক্যাম্পাসে চাঁদাবাজি, ইভটিজিং, নারী কেলেঙ্কারিসহ বিভিন্ন ঘটনা ঘটায়। এদের ভয়ে সাধারণ শিক্ষার্থী তাদের অত্যাচারে মুখ খোলেনি। কলেজের বিভিন্ন বিভাগে খাম বাণিজ্য করে সাধারণ শিক্ষার্থীদের লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে তারা।
কর্মসূচিতে চট্টগ্রাম কলেজ ছাত্রলীগের মনির উদ্দিন, সহসভাপতি জাহিদ হাসান সাইমুন, রাকিবুল ইসলাম সাইক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মনির উদ্দিন রিহান, মহিউদ্দিন বাপ্পি, মাসুদ রানা, সাংগঠনিক সম্পাদক ওয়াহিদুর রহমান সুজন, অর্ণব দেব, দপ্তর সম্পাদক জামশেদ উদ্দীন, অর্থ সম্পাদক কাজী আব্দুল মালেক রুমি, উপ সমাজসেবাবিষয়ক সম্পাদক কায়েস মাহমুদ, সহসম্পাদক মোস্তফা আসিফ, সাইফুর রহমান হানিফ, গ্রন্থনা ও প্রকাশনাবিষয়ক সম্পাদক মোস্তফা আমান, উপপ্রচার সম্পাদক মো. ফোরকান, উপমানবসম্পদ উন্নয়ন সম্পাদক রুবেল হোসেন মুন্না, ছাত্রলীগ নেতা ইয়াছির আরাফাত রিকু, উপসাহিত্যবিষয়ক সম্পাদক ইমাম হোসেন ও গিয়াসউদ্দিন সাজিদসহ কলেজ ছাত্রলীগের সব সহসম্পাদক ও সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
মন্তব্য করুন