ভারতে ভ্রমণরত পাসপোর্ট যাত্রীদের ভোগান্তি কমাতে এখন থেকে যাত্রী সুবিধা চার্জ (পোর্ট ট্যাক্স) অনলাইনে আদায় করবে স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ।
রোববার (১২ মে) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে বেনাপোল চেকপোস্ট আন্তর্জাতিক প্যাসেঞ্জার টার্মিনালে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এ পদ্ধতির উদ্বোধন করা হয়। এর মধ্য দিয়ে ওয়েবসাইটে ঢুকে নিজেই ট্যাক্স পরিশোধ করতে পারবেন পাসপোর্ট যাত্রীরা।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান মো. জিল্লুর রহমান চৌধুরী। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন এ টু আই প্রোগ্রাম আইসিটি ডিভিশনের যুগ্ম প্রকল্প পরিচালক মোল্লা মিজানুর রহমান। সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের সদস্য (ট্রাফিক) মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর কবীর।
বন্দর সূত্রে জানা যায়, এর আগে ঘণ্টার পর ঘণ্টা দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে বেনাপোল স্থলবন্দরের যাত্রী টার্মিনাল থেকে পাসপোর্টধারীদের পোর্ট ট্যাক্স পরিশোধ করতে হত। তবে এখন থেকে যাত্রীরা নিজেই ওয়েবসাইটের মাধ্যমে নিজেদের পোর্ট ট্যাক্স পরিশোধ করতে পারবেন।
বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরের বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তি এবং ইন্টিগ্রেটেড স্মার্ট ল্যান্ডপোর্ট ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম বাস্তবায়নের লক্ষ্যে কেন্দ্রীয়ভাবে একটিমাত্র প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে এ কর্তৃপক্ষের আওতাধীন বেনাপোল, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী ও নাকুগাঁও স্থলবন্দরের যাত্রী সুবিধা চার্জ অনলাইনে আদায় করার নিমিত্ত একপে, এটুআই কর্তৃক কেন্দ্রীয় (সেন্ট্রাল) ওয়েব অ্যাপ্লিকেশন ডেভেলপ করা হয়েছে। এ অ্যাপ্লিকেশন ব্যবহার করে যাত্রীদের সুবিধা চার্জ অনলাইনে আদায় করতে হবে। এসব স্থলবন্দরে তা আদায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে।
যোগাযোগ ব্যবস্থা সহজ হওয়ায় স্থলপথে ভারত-বাংলাদেশে যাতায়াতকারী যাত্রীদের ৯০ ভাগই বেনাপোল স্থলবন্দর ব্যবহার করেন। ভারত যাতায়াতে পাসপোর্টধারীদের বর্তমানে এক হাজার টাকা ভ্রমণ ট্যাক্স এবং ৫৫ টাকা পোর্ট ট্যাক্স পরিশোধ করতে হয়। এর মধ্যে ভ্রমণ ট্যাক্স সোনালী ব্যাংকে বা অনলাইনে পরিশোধের সুযোগ রয়েছে। তবে এই সুযোগ পোর্ট ট্যাক্সের ক্ষেত্রে এতদিন না থাকায় যাত্রীদের স্থলবন্দরে পৌঁছে আবারও দীর্ঘ লাইনে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হতো। এতে ভোগান্তির পাশাপাশি দালাল হয়রানির শিকার হতেন যাত্রীরা।
এখন থেকে সেটির সুযোগ আর থাকছে না। প্রতিদিন বেনাপোল বন্দর দিয়ে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে ৩ থেকে ৪ হাজার যাত্রী যাতায়াত করেন। এতে প্রতিবছর বেনাপোল স্থলবন্দরে ভ্রমণ খাতে প্রায় ১০০ কোটি টাকা রাজস্ব আয় হয় এবং পোর্ট ট্যাক্স খাতে আয় হয় প্রায় ১০ কোটি টাকা।
এ বিষয়ে ভারতগামী আতিকুল রহমান নামে এক যাত্রী বলেন, অনলাইনে পোর্ট ট্যাক্স পরিশোধ করার পদ্ধতি করায় আমাদের বেশ উপকার হয়েছে। তা ছাড়া অনলাইনে তাড়াতাড়ি ও স্বচ্ছভাবে হচ্ছে।
মহিমা আক্তার নামে আরেকজন যাত্রী বলেন, অনলাইনে পোর্ট ট্যাক্স পরিশোধের নিয়ম করায় আমরা ভোগান্তি থেকে মুক্তি পেয়েছি। আগে বাচ্চা কোলে করে ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে হতো।
বেনাপোল স্থলবন্দরের পরিচালক (ট্রাফিক) মো. রেজাউল করিম জানান, ওয়েব অ্যাপ্লিকেশন লিংক ব্যবহার করে বেনাপোল স্থলবন্দরের প্রযোজ্য যাত্রী সুবিধা চার্জ অনলাইনে পরিশোধের পর প্রমাণ হিসেবে মানি রিসিট আন্তর্জাতিক প্যাসেঞ্জার টার্মিনালের গেইটে দায়িত্বরত নিরাপত্তাকর্মীদেরকে প্রদর্শনের জন্য পাসপোর্টযাত্রীকে অনুরোধ করা হলো। অনলাইনে ইস্যু করা মানি রিসিটের মেয়াদ যাত্রার নির্ধারিত তারিখ হতে ৭ দিন বলবৎ থাকবে। এতে যাত্রীদের যাত্রা সহজ ও ভোগান্তি কমে আসবে।
মন্তব্য করুন