হাসপাতালের জরুরি বিভাগে কর্তব্যরত চিকিৎসক না থাকায় একই হাসপাতালের চতুর্থ শ্রেণির এক কর্মচারী মারা যাওয়ার অভিযোগ উঠেছে। রোববার (১২ মে), সকালে নোয়াখালী ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগে এ ঘটনা ঘটে। কর্মচারী মৃত্যুর প্রতিবাদে তাৎক্ষণিক কর্মবিরতি ঘোষণা করে হাসপাতালের কর্মচারীরা।
মারা যাওয়া কর্মচারী শ্বাসকষ্টে ভুগছিলেন বলে জানা গেছে। এ ঘটনায় অভিযুক্ত ইমার্জেন্সি মেডিকেল অফিসার ডাক্তার শহীদুল ইসলামকে হাতিয়ার ২০ শয্যাবিশিষ্ট ভাসানচর হাসপাতালে বদলি করেছে কর্তৃপক্ষ।
হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, গত দু-দিন ধরে শ্বাসকষ্ট নিয়ে ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি ছিল হাসপাতালের চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী হানিফ। রোববার সকালে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় রেফার করা হয়। ঢাকা নেওয়ার পথে তিনি বেশি অসুস্থতা বোধ করলে তাকে পুনরায় সকাল ৯টা ১০মিনিটের দিকে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের ইমার্জেন্সিতে নিয়ে আসা হয়।
এ সময় হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. শহীদুল ইসলাম সৈকত ইমার্জেন্সিতে না থাকায় বিনা চিকিৎসায় মারা যান হানিফ। পরে অন্য আরেকজন ডাক্তার এসে তাকে মৃত ঘোষণা করেন। কর্তব্যরত চিকিৎসকের দায়িত্বে গাফিলতির অভিযোগ এনে তখনই আধা ঘণ্টা কর্মবিরতি পালন করেন চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীরা।
মৃত মো.হানিফ (৫৫) ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী ছিলেন। তিনি নোয়াখালী পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের হরিনারায়ণপুর এলাকার মসজিদ বাড়ির মান্নাছ মিয়ার ছেলে।
নিহতের মেয়ে ঝুমুর অভিযোগ করে বলেন, আমার বাবাকে হাসপাতালে নেওয়া হলেও সেখানে ডাক্তার ছিল না। ফলে তিনি উপযুক্ত চিকিৎসা পাননি।
২৫০ শয্যাবিশিষ্ট নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক কর্মকর্তা (আরএমও) সৈয়দ মহিউদ্দিন আবদুল আজিম বলেন, সকালে হানিফকে ঢাকা নেওয়ার পথে তার অবস্থা খারাপ দেখে তাকে হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। তখন জরুরি বিভাগে কর্তব্যরত ডাক্তার ছিল না। এরপর তাকে দ্রুত ওয়ার্ডে নেওয়ার পথে তিনি মারা যান।
২৫০ শয্যাবিশিষ্ট নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. মো. হেলাল উদ্দিন বলেন, রোগীকে ঢাকা নেওয়ার পথে অ্যাম্বুলেন্সের মধ্যে তার অবস্থা খারাপ হয়ে যায়। পরে তাকে ঢাকা না নিয়ে পুনরায় হাসপাতালে নিয়ে আসে স্বজনরা। তখন তাকে ইমার্জেন্সিতে আনা হলেও সেখানে কর্তব্যরত ডাক্তার ছিল না।
তত্ত্বাবধায়ক ডাক্তার মো. হেলাল উদ্দিন আরও বলেন, চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী মৃত্যুর ঘটনায় ৫ সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। একই সঙ্গে জরুরিভাবে অভিযুক্ত ডাক্তারকে হাতিয়ার ২০ শয্যাবিশিষ্ট ভাসানচর হাসপাতালে বদলি করা হয়েছে। পরে তদন্ত কমিটির রিপোর্টের ভিত্তিতে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মন্তব্য করুন