বরিশালের বাকেরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসকসহ প্রয়োজনীয় জনবল সংকট থাকায় কাঙ্ক্ষিত সেবা পাচ্ছেন না রোগীরা। হাসপাতালে সরকারি ৩টি অ্যাম্বুলেন্সের মধ্যে দুটি অকেজো অবস্থায় পড়ে আছে। অপর অ্যাম্বুলেন্সটি প্রায় সময়ই রোগী নিয়ে বরিশাল টু বাকেরগঞ্জ আসা যাওয়ার মধ্যে থাকলে জরুরি প্রয়োজনের সময় সংকট দেখা দেয় বলে অভিযোগ রোগীদের।
গত ৩১ মার্চ রাতে উপজেলার কলসকাঠি ইউনিয়নের বেবাজ গ্রামের বাবুল হাওলাদার নামে এক ব্যক্তি পারিবারিক কলহের কারণে বিষ পান করেন। এ সময় তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে জরুরি বিভাগে জনবল না থাকায় চিকিৎসা দেওয়া সম্ভব হয়নি। তাৎক্ষণিক বরিশাল শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
বিষ পান করা রোগীকে ওয়াশ না করিয়ে বরিশাল পাঠানোর বিষয়ে জানতে চাইলে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক শাওন খান বলেন, আমাদের জনবল না থাকাতে ওয়াশ করা সম্ভব হয়নি।
এ ছাড়াও হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, গত এক বছর অ্যানেস্থেসিয়া কনসালট্যান্ট পদটি খালি রয়েছে। অপারেশন সেবা চালু হলেও আয়া, ওয়ার্ড বয়, ক্লিনার ও দারোয়ানসহ পরিচ্ছন্নতাকর্মীর পদশূন্য থাকায় সেবা নিতে রোগীদের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। মাত্র দুজন পরিচ্ছন্নতাকর্মীকে আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে কাজ করানো হচ্ছে, যা দিয়ে পুরো হাসপাতালটি পরিচ্ছন্ন রাখা সম্ভব হচ্ছে না।
সূত্র আরও জানা যায়, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি ৩০ শয্যা থেকে ৫০ শয্যায় উন্নীত করার ঘোষণা দেন স্থানীয় সংসদ সদস্য। তবে বাস্তবে ৫০ শয্যার কোনো কার্যক্রম শুরু না হওয়ায় ৩০ শয্যায় চলছে চিকিৎসাসেবা।
ইউনুছ হালদার নামে এক রোগী অভিযোগ করে বলেন, বেশির ভাগ সময় হাসপাতালে চিকিৎসক পাওয়া যায় না। দিনের বেলায় চিকিৎসক থাকলেও রাতের বেলায় তেমন একটা পাওয়া যায় না।
এদিকে নোংরা পরিবেশের কারণে হাসপাতাল ভবনের দেয়াল ও ছাদেও নানা জাতের আগাছা গজিয়েছে। এতে দেয়াল ফেটে যাওয়ার উপক্রম। দেয়াল বেয়ে পানি পড়ে। হাসপাতালের চিকিৎসক, নার্সসহ তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীদের কোয়ার্টারগুলোও পরিত্যক্ত অবস্থায়, যা বসবাসের অনুপযোগী।
স্থানীয় বাসিন্দা হাসান মোল্লা জানান, হাসপাতালের ভেতর ও বাইরের পরিবেশ খুবই খারাপ। টয়লেটগুলোর অবস্থা আরও ভয়াবহ। দীর্ঘদিন পরিষ্কার না করায় এগুলোর অবস্থা এতই খারাপ যে টয়লেট ব্যবহার করলে রোগীরা আরও অসুস্থ হয়ে পড়বে।
এ বিষয়ে জানতে চেয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. শংকর প্রশাধ অধিকারীর সঙ্গে মোবাইল ফোনে একাধিকবার চেষ্টা করেও যোগাযোগ সম্ভব হয়নি।
মন্তব্য করুন