সিরাজগঞ্জের বেলকুচিতে থানায় ঢুকে চেয়ারম্যান প্রার্থীর ওপর অপর চেয়ারম্যান প্রার্থী ও তার কর্মী-সমর্থকদের হামলার অভিযোগ তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন নির্বাচন কমিশন।
শনিবার (৪ মে) বিষয়টি নিশ্চিত করে রিটার্নিং কর্মকর্তা ও সিরাজগঞ্জ জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা শহিদুল ইসলাম।
তিনি বলেন, শুক্রবার (৩ মে) সন্ধ্যায় নির্বাচন কমিশনার রাশেদা সুলতানা লিখিত চিঠির মাধ্যমে এই নির্দেশ দেন।
নির্বাচন কমিশনারের লিখিত নির্দেশ অনুযায়ী, আগামী দুই দিনের মধ্যে বিষয়টি তদন্ত করে প্রতিবেদন জমা দিতে হবে।
তিনি আরও বলেন, নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন করে চেয়ারম্যান প্রার্থী আমিনুল ইসলাম (দোয়াত কলম প্রতীক) ও তার কর্মী-সমর্থকরা বেলকুচি থানার ভেতরে ঢুকে অপর প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী বদিউজ্জামান ফকিরের (মোটরসাইকেল প্রতীক) ওপর এবং তার কর্মী-সমর্থকদের ওপর হামলা করেছেন। নির্বাচনী প্রচারে বাধা দিয়েছেন। বিভিন্নভাবে হুমকি ও ভয়ভীতি প্রদর্শন করছেন। এসবের ভিডিও ফুটেজসহ অভিযোগ তাদের কাছে এসেছে। এ নিয়ে থানায় সাধারণ ডায়েরিও হয়েছে। এ ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে মামলাও করেছে। এসব কর্মকাণ্ড উপজেলা পরিষদের নির্বাচনী আচরণ বিধিমালার পরিপন্থি।
‘যে কারণে আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগে চেয়ারম্যান প্রার্থী আমিনুল ইসলামকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে অভিযোগের বিষয়টি তদন্ত করতে লিখিত নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তদন্তে অভিযোগ প্রমাণিত হলে দ্রুততম সময়ের মধ্যেই এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
শুক্রবার সকালে সিরাজগঞ্জ পৌর শহরের শহীদ এম মনসুর আলী মিলনায়তনে বেলকুচি উপজেলা পরিষদ নির্বাচন উপলক্ষে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা, প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী ও সম্ভাব্য প্রার্থীদের সঙ্গে নির্বাচন কমিশনার রাশেদা সুলতানার মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। ওই সভায় চেয়ারম্যান প্রার্থী বদিউজ্জামান ফকির মৌখিকভাবে নির্বাচন কমিশনার রাশেদা সুলতানার কাছে অভিযোগ জানান। পরে অভিযোগটি লিখিত আকারে জেলা নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয়ে জমা দেন ওই প্রার্থী।
এর আগে বুধবার (১ মে) রাতে প্রচার চালানোর একপর্যায়ে চালা সাত রাস্তার মোড়ে উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থী আমিনুল ইসলাম সরকার ও তার কর্মী সমর্থকরা অপর প্রার্থী বদিউজ্জামান ফকিরের ওপর হামলা করে। এ ঘটনায় অভিযোগ দিতে বদিউজ্জামান ফকির বেলকুচি থানায় যান। থানায় যাবার কিছুক্ষণ পরই আমিনুলের কর্মী-সমর্থকরাও থানার ভেতরে ঢুকে উচ্চস্বরে গালাগাল করতে থাকেন। এ সময় বদিউজ্জামান ফকিরের ওপর হামলা ও তাকে মারধরের অভিযোগ ওঠে। সিরাজগঞ্জ থেকে ডিবি পুলিশের টিম ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে এবং আমিনুল ইসলামের ১০ সমর্থককে গ্রেপ্তার করে। এ ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে মামলায় ২২ জনের নাম উল্লেখ করে অন্তত ৪০ জনকে আসামি করা হয়।
প্রসঙ্গত, চেয়ারম্যান প্রার্থী মোহাম্মদ আমিনুল ইসলাম সরকার (দোয়াত কলম) স্থানীয় সংসদ সদস্য আব্দুল মমিন মন্ডলের শিল্পপ্রতিষ্ঠান মন্ডল গ্রুপের ম্যানেজার। শুরু থেকেই এখানে এমপির দুই ভাই আমিনুলের পক্ষে প্রভাব বিস্তার করছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
মন্তব্য করুন