দ্বিতীয় বিয়ের অনুমতি না দেওয়ায় স্ত্রীকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে মানিকগঞ্জ প্রাইমারি টিচার্স ট্রেনিং ইনস্টিটিউটের (পিটিআই) ইনস্ট্রাক্টর রবিউল আউয়ালের বিরুদ্ধে।
বৃহস্পতিবার (২ মে) দুপুরে মানিকগঞ্জ প্রেস ক্লাবে স্বামীর নির্যাতনের কথা উল্লেখ করে সংবাদ সম্মেলন করেছেন তার স্ত্রী পাপিয়া আক্তার।
সংবাদ সম্মেলনে পাপিয়া আক্তার অভিযোগ করে বলেন, আমরা ভালোবেসে ২০১৭ সালে বিয়ে করেছি। বিয়ের ১০ মাস পর স্বামীর চাকরি হয় পিটিআই ইনস্ট্রাক্টর পদে। এর মধ্যে ২০১৮ সালে আমাদের এক কন্যাসন্তানের জন্ম হয়। তিনি প্রথমে ফেনীতে যোগদান করেন। ২০২০ সালে ফুলগাজী পশ্চিম বসন্তপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক তাসলিমা আক্তারের সঙ্গে এক ঘটনার পর তাকে পটিয়াতে বদলি করা হয়।
তিনি বলেন, পটিয়াতে যাওয়ার পর ওই নারী শিক্ষকের সঙ্গে সম্পর্ক চালিয়ে যায়। এ সম্পর্ক জানার পর তাকে সংশোধনের চেষ্টা করলে সে আমার ওপর অত্যাচার শুরু করে। এরপর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কাছে লিখিত অভিযোগ দিলে বিষয়টি তদন্ত করা হয়। ওই নারীর কাছ থেকে একটি মুচলেকা নেওয়া হয় যাতে আর কোনো সম্পর্কে না জড়ান।
রবিউল আউয়ালের স্ত্রী বলেন, আমার স্বামী ও ওই নারীর মধ্যে অবৈধ সম্পর্কের বিষয়টি জানার পর থেকে সে দ্বিতীয় বিয়ের অনুমতির জন্য আমাকে চাপ দিতে থাকে। ২০২২ সালের ২০ আগস্ট দ্বিতীয় বিয়ের জন্য একটি স্ট্যাম্পে স্বাক্ষরও করতে বলে। স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর না দেওয়ার কারণে নির্যাতনের মাত্র আরও বাড়িয়ে দেয়। পাশাপাশি তার পরিবারের সদস্যদের মোবাইল ফোনে দ্বিতীয় বিয়ের জন্য চাপ প্রয়োগ করেন।
তিনি আরও বলেন, এরপর ২০২৩ সালে জুলাই মাসে স্বামীকে মানিকগঞ্জ পিটিআইতে বদলি করা হয়। এখানে আসার পর থেকে আমার ওপর নির্যাতনের মাত্র আরও বাড়িয়ে দেন। তারপর ২০২৩ সালের নভেম্বর মাসে আমাকে তালাক দেন তিনি। এ ঘটনায় আমি মানিকগঞ্জ সদর থানায় নারী নির্যাতনের একটি অভিযোগ দেই। পরে পুলিশের মধ্যস্থতায় আমাদের পুনরায় বিয়ে হয়। কিন্তু বিয়ে হলেও আমার স্বামী গোপনে ওই নারীকে নিয়ে ঢাকায় হোটেলে রাত্রীযাপন করেন। সেই সঙ্গে ওই নারীকে গোপনে বিয়ে করেছেন।
পাপিয়া আক্তার বলেন, এখন দ্বিতীয় বিয়ে অনুমতি না দিলে তার চাকরি চলে যাবে। এর জন্য সে দ্বিতীয় বিয়ের অনুমতি চাচ্ছে। দ্বিতীয় বিয়ের অনুমতি না দেওয়ায় গত মাস থেকে তিনি সন্তান ও আমার কোনো ভরণপোষণ দিচ্ছেন না। বাবার বাড়িতে যাওয়ায় মানিকগঞ্জের ভাড়াটিয়া বাসায় তালা লাগিয়ে দিয়েছে।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, আমি স্বামীকে সংশোধন করার জন্য চেষ্টা করেছি। কিন্তু সে সংশোধন হয়নি। সে একজন নারী লোভী নরপশু। পিটিআইতে চাকরি করার কারণে অনেক শিক্ষিকার সঙ্গে তার সম্পর্ক রয়েছে। এখন আমার একটাই দাবি, আমার সন্তান যেন তার বাবা ও পরিবার না হারায়।
এ ব্যাপারে পিটিআই ইনস্ট্রাক্টর রবিউল আওয়ালের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে কালবেলাকে তিনি বলেন, পাপিয়া আক্তার এখন আমার স্ত্রী নয়। সে অবাধ্য হওয়ার কারণে গত মাসে তাকে তালাক দেওয়া হয়েছে। দ্বিতীয় বিয়ের অনুমতি না দেওয়ার কারণে তালাক দিয়েছেন কিনা- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এখন আর দ্বিতীয় বিয়ের প্রয়োজন নেই।
তিনি বলেন, পাপিয়া একজন সন্দেহপ্রবণ নারী। সে অফিসে এসে আমার সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ করেছে। এ ধরনের মানুষের সঙ্গে সংসার করা যায় না। তবে তিনি ওই নারীকে বিয়ে করেননি বলে দাবি করেছেন।
মন্তব্য করুন