জামালপুরে সরিষাবাড়ীতে প্রেমিক বিয়ে করতে রাজি না হওয়ায় প্রেমিকা রত্না (২৩) নামে এক যুবতী গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে। মহাদান ইউনিয়নের বাঁশবাড়ী দক্ষিণপাড়া এলাকায় ঘটনাটি ঘটেছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, নিহত রত্না আক্তার উপজেলা মহাদান ইউনিয়নের বাঁশবাড়ী দক্ষিণ পাড়া গ্রামের মৃত দুদু মিয়া মেয়ে। তিনি বৃহস্পতিবার দুপুরে নিজ বাড়ির পরিত্যক্ত খড়ি রাখার ঘরে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করে। এ সময় বাড়িতে কেউ ছিল না বলে জানান নিহতের নানী হাছনা বেওয়া।
তিনি জানান, নিহত রত্নার মা ঢাকায় গার্মেন্টসে চাকরি করেন। বাড়িতে শুধু আমার দুই নাতনি রত্না ও মধু থাকে। সকালে মধু জামালপুর যায় কলেজে পরীক্ষা দিতে। বাড়িতে রত্না একাই ছিল। আমি দুপুরে বাড়িতে এসে দেখি বাড়ির চারদিক দিয়ে আটকানো। পরে আমি বাড়ির পেছন দিয়ে গিয়ে দেখি পরিত্যক্ত খড়ির ঘরে রত্না ফাঁসিতে ঝুলে আছে। পরে আমার চিৎকারে আশপাশের লোকজন ছুটে আসে।
এ সময় স্থানীয় লোকজন বিষয়টি থানা পুলিশকে অবগত করলে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে এর সত্যতা পায় এবং নিহতের লাশ উদ্ধার করে সুরতহাল শনাক্ত করে থানায় নিয়ে আসে।
নিহতের ছোট বোন মধুমিতা জানান, আমার বোনের চার বছর পূর্বে জামালপুর লাঙ্গলজোড়া এলাকায় প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে বিয়ে হয়। পরে সেখানে দেড় বছর সংসার করার পর আমার বোনের ডিভোর্স হয়। এরপর হতে আমার বোন আমাদের সঙ্গেই থাকে। এরপর তিনি আবারও পড়ালেখা শুরু করে ইন্টারমিডিয়েট পাস করে।
পাশাপাশি মাল্টিমিডিয়ার সঙ্গে ইউটিউবের শর্ট ফিল্মে কাজ করত। তাদের গ্রুপের সাকিব নামে এক ছেলের সঙ্গে তার প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে ও বিয়ে করতে চায়। বিয়ে করতে রাজি না হওয়ায় আজ আমার বোন আত্মহত্যা করেছে। এর জন্য ওই সাকিবই দায়ী। আপনারা আমার বোনের মোবাইল চেক করলেই সব বুঝতে পারবেন। সাকিব একই ইউনিয়নের বনগ্রাম শ্যামের পাড়া এলাকায় বসবাস করে।
এদিকে নিহতের মা অভিরন বেওয়া বলেন, আমার মেয়েকে জিনে ধরেছিল। সে মানসিক ও শারীরিকভাবে অসুস্থ ছিল। তাকে কবিরাজ দিয়ে চিকিৎসা করাচ্ছিলাম। এ জন্য গ্রামের বাড়িতে ওর নানির কাছে রেখে গেছি। আজ দুপুরে বাড়ি থেকে ফোন দিয়ে আমাকে জানায় রত্না আত্মহত্যা করেছে।
এসআই আনোয়ার হোসেন জানান, মেয়েটি আত্মহত্যা করেছে এটি সত্য। তবে এ ঘটনার অন্তরালে অন্য কিছু আছে সেটা তদন্ত করে দেখতে হবে।
এ বিষয়ে সরিষাবাড়ী থানার ওসি মুশফিকুর রহমান বলেন, নিহতের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ থানায় নিয়ে এসেছে। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য জামালপুর মর্গে পাঠানো হয়েছে।
মন্তব্য করুন