তীব্র গরমের মধ্যেই কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়ায় পুরোদমে চলছে বোরো ধান কাটা, মাড়াই-ঝাড়াই, ধান সেদ্ধ ও শুকানোর কাজ। এরইমধ্যে আকাশে জমেছে মেঘ। আকাশে মেঘ দেখে মন ভালো নেই বোরো চাষিদের।
বৃহস্পতিবার (২ মে) বেলা ১২টা থেকে ব্রাহ্মণপাড়ার আকাশে মেঘ জমতে দেখা গেছে। সঙ্গে আকাশে কালো মেঘের গর্জন। এতে উপজেলার বোরো চাষিদের মধ্যে ধান সংগ্রহের শঙ্কায় উদ্বেগ দেখা দিয়েছে।
জানা গেছে, বৈশাখের শুরু থেকে চলমান তীব্র তাপপ্রবাহে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে এ উপজেলার মানুষ। বৃষ্টি চেয়ে প্রার্থনা করা হয়েছে বিভিন্ন মসজিদ ও অন্যান্য ধর্মীয় উপাসনালয়ে। তবে শুরু থেকেই বৃষ্টি চায়নি উপজেলার ইরি-বোরো চাষিরা। বোরো ধান নির্ভেজালভাবে ঘরে তুলতেই চাষিদের এমন চাওয়া। তবে বৃহস্পতিবার বেলা ১২টা থেকে আকাশে মেঘ জমতে দেখে বোরো চাষিদের মধ্যে উদ্বেগ দেখা দেয়। বৃষ্টির সম্ভাবনায় ইরি-বোরো চাষিদের মন ভালো নেই।
কথা হয় স্থানীয় কৃষক সোহেল ইসলামের সঙ্গে। তিনি বলেন, এ সময় বৃষ্টি আমাদের জন্য ক্ষতির কারণ হয়ে উঠবে। খরা থাকায় আমরা বোরো ধান ও সংগ্রহের কাজ পুরোদমে করতে পারছি। তবে বৃষ্টি হলে আমাদের কাজে ব্যাঘাত ঘটবে। এতে আমাদের লোকসানের ঝুঁকিও রয়েছে।
উপজেলার চান্দলা ইউনিয়নের বড়ধুশিয়া এলাকার কৃষক আবুল কাশেম বলেন, হঠাৎ করে আকাশে মেঘ জমতে শুরু করেছে। এই মুহূর্তে বৃষ্টি নামলে বোরো ধান নিয়ে আমরা বিপাকে পড়ে যাব। মাঠে এখনো ধান কাটা বাকি, আর কাটা ধান মাড়াই-ঝাড়াই ও সেদ্ধ শুকানোর কাজ চলছে। এখন বৃষ্টি হলে বোরো ধান ঘরে তুলতে আমাদের বেগ পেতে হবে। এ মুহূর্তে বৃষ্টি না হলে আমাদের মতো বোরো চাষিদের জন্য উপকার।
উপজেলার শশীদল ইউনিয়নের নাগাইশ এলাকার কৃষক আলতাফ হোসেন বলেন, তীব্র গরমের মধ্যে আমরা বোরো ধান সংগ্রহে কাজ করছি। কষ্ট হচ্ছে তবুও মনে শান্তি। খরার কারণে আমরা ধান কাটা ও ধান ঘরে তুলতে সুবিধা পাচ্ছি। দুপুর থেকেই আকাশে কালো মেঘ জমতে দেখা যাচ্ছে। এই মুহূর্তে বৃষ্টি নামলে আমাদের ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. মাসুদ রানা কালবেলাকে বলেন, ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলায় এ বছর ৮৫৭১ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদ হয়েছে। কৃষক ভাইয়েরা তীব্র তাপপ্রবাহ ও কড়া রোদ উপেক্ষা করে কাঙ্ক্ষিত ফসল ঘরে তুলতে কাজ করছে। দুপুর থেকে আকাশে কালো মেঘ জমতে দেখা যাচ্ছে। এ মুহূর্তে ঝড়-বৃষ্টি শস্য কর্তনকে বাধাগ্রস্ত করতে পারে। প্রকৃতির উপর কারো হাত নেই, তবে আমরা আশাবাদী কৃষক ভাইয়েরা তাদের স্বপ্নের ফসল নির্বিঘ্নে ঘরে তুলতে পারবেন।
মন্তব্য করুন