লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জে আল ফারুক নামের একটি প্রাইভেট হাসপাতালের গাফিলতি ও চিকিৎসকের ‘ভুল চিকিৎসায়’ নাজমা খাতুন নামের (৩৫) এক প্রসূতি ও নবজাতক কন্যাশিশুর মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে।
স্বজনদের দাবি, ডাক্তারের ভুল চিকিৎসার কারণে তাদের মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় সোমবার (১৭ জুলাই) রাতে মৃতের স্বজনরা হাসপাতাল ঘেরাও করে চিকিৎসক ফারজানা তালুকদার ন্যান্সির শাস্তি দাবি করেন।
নাজমা খাতুন রামগঞ্জ পৌর জগৎপুর গ্রামের কোয়াজি বাড়ির প্রবাসী আসাদ উল্যার স্ত্রী ও তিন সন্তানের জননী।
নাজমা খাতুনের বড় মেয়ে জ্যোতি (যুথি) আক্তার জানান, গত ৩০ জুন তার মা নাজমা খাতুন রামগঞ্জ আল ফারুক হাসপাতালের চিকিৎসক ফারজানা তালুকদার ন্যান্সির কাছে নিয়মিত চেকআপ করাতে আসেন। এ সময় তিনি চিকিৎসককে তার স্বাস্থ্যগত সমস্যার কথা জানালে চিকিৎসক ন্যান্সি ইঞ্জেকশন দিয়ে ব্যথা কমিয়ে দেওয়ার পর শারীরিক সমস্যা আরও বাড়তে থাকে। চলতি মাসের ২ তারিখে তীব্র ব্যথা নিয়ে আবারও হাসপাতালে গেলে ওই চিকিৎসক তাকে দ্বিতীয়বারের মতো ইঞ্জেকশন দিয়ে বাসায় চলে যেতে বলেন।
তিনি বলেন, তিন তারিখেও তার মা হাসপাতালে গেলে চিকিৎসক জানান, কোনো সমস্যা নেই। পরদিন থেকে গর্ভের বাচ্চার নড়াচড়া না হওয়ায় চতুর্থবারের মতো তার মাকে হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক জানান, বাচ্চার হার্টবিট নেই, বাচ্চা গর্ভে মারা গেছে। দ্রুত সিজার করিয়ে তার মায়ের শারীরিক অবস্থা বেশি ভালো না বলে ঢাকায় নিয়ে যেতে বলে। পরে তার মাকে ঢাকার আদ-দ্বীন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।
সোমবার অভিযুক্ত চিকিৎসক ফারজানা তালুকদার ন্যান্সির ব্যক্তিগত মোবাইল নম্বরে বারবার কল দেয়া হলেও মোবাইলটি বন্ধ পাওয়া যায়। মঙ্গলবার (১৮ জুলাই) দুপুরে তার ব্যক্তিগত আরেকটি মোবাইল নম্বরে কল দিলে তিনি জানান, সাংবাদিকদের সঙ্গে এ ব্যাপারে আমার কথার বলার প্রয়োজন নেই। যাদের সঙ্গে কথা বলার দরকার তাদের সঙ্গে কথা হয়েছে।
হাসপাতাল মালিক আল ফারুক সাংবাদিকদের জানান, আপনারা তো অনেকেই নিউজ করেছেন- ফেসবুকে ভাইরাল করেছেন। অন্য কোনো হাসপাতাল মনে হয় চিকিৎসা করায় না। সব ভুল আমাদেরই, এখন আর কী করা।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মোবাইল ফোনে প্রথমে বিষয়টি না জানার কথা বললেও পরে বলেন, শুনেছি আমি হালকা হালকা। আমি ঢাকার বাইরে আছি। পুরো বিষয়টি বলতে পারব না।
মন্তব্য করুন