‘কে আছ তোমরা আমারে বাঁচাও, আমি আর সহ্য করতে পারতেছি না। আমি দিনে দিনে মরণের দিকে যাইতেছি। যেভাবেই হোক আমারে দেশে নাও। এরা আমাকে জাহান্নামের মধ্যে পাঠাইছে। আমার ওপর অমানুষিক নির্যাতন করা হচ্ছে।’
সম্প্রতি মোবাইল ফোনে পরিবারের কাছে কান্নাজড়িত কণ্ঠে বাঁচার আকুতি জানিয়ে এসব কথা বলেছেন সৌদি আরব গিয়ে নির্যাতনের শিকার হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলার চৌমুহনী ইউনিয়নের হরিণখোলা গ্রামের রেহানা বেগম (২৩)।
জানা গেছে, কয়েক মাস আগে সংসারের সচ্ছলতা আনতে সৌদি আরবে যান রেহানা বেগম। সেখানে দাম্মাম শহরের একটি বাসায় গৃহকর্মীর কাজ নেন।
রেহানার স্বামী জানান, তার স্ত্রীকে পার্শ্ববর্তী মঙ্গলপুর গ্রামের লিটন দাশ সৌদি পাঠানোর প্রস্তাব দেন। সেখানে গেলে ভালো বেতন ও ভালো পরিবেশে কাজ করতে পারবে বলা জানায়। দালালের কথা বিশ্বাস করে এক লাখ টাকা দিয়ে রেহানাকে সৌদিআরবে পাঠান তিনি। সেখানে দাম্মাম শহরে একটি পরিবারে গৃহকর্মীর কাজ দেওয়া হয়। কিন্তু ওই পরিবারের লোকজন এখন তার ওপর শারীরিক-অমানুষিক নির্যাতন চালাচ্ছে। ১৫ দিন আগে ফোন করে রেহানা জানান, রাতদিন তাকে কাজ করতে হয়। ঠিকমতো খাবার দেওয়া হয় না। প্রতিদিন তার ওপর নির্যাতন করা হচ্ছে। ঘরের ভেতর বন্দি অবস্থায় রয়েছে। আর কিছুদিন থাকলে সে মারা যাবে। সৌদিতে রেহানার এই কষ্টের কথা দালাল লিটন দাশকে জানালে সে বলে রেহানাকে দেশে ফিরিয়ে আনতে হলে তিন লাখ টাকা দিতে হবে।
এদিকে ওই ভুক্তভোগী পরিবারের পক্ষ থেকে উদ্ধারের জন্য মাধবপুরের নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছে লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মাহবুবুর রহমান সোহাগ বলেন, তার কোনো খোঁজখবর পাওয়া যাচ্ছে না বলে শুনেছি। রেহানার পরিবার খুবই দরিদ্র। সংসারের অভাব ঘোচাতে গিয়ে এখন আরও সমস্যার মধ্যে পড়েছে। রেহানাকে সরকারের সহযোগিতায় দেশে ফিরিয়ে আনার দাবি করছি।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এ কে এম ফয়সাল বলেন, এ ব্যাপারে একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হবে।
এদিকে প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপসহকারী পরিচালক মালেকা বেগম বলেন, ওই নারীর বিষয়ে মৌখিকভাবে অবগত হলাম। এরা লিখিত অভিযোগ করলে আমরা উদ্ধারের জন্য সৌদি দূতাবাসকে চিঠি প্রদান করব।
মন্তব্য করুন