রাজবাড়ীর কালুখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের নির্মাণকাজে বেচে যাওয়া রড-অ্যালুমিনিয়াম ও অক্সিজেন সিলিন্ডারসহ বিভিন্ন সরঞ্জাম বিক্রির অভিযোগ উঠেছে স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. ইসরাত জাহান উম্মনের বিরুদ্ধে।
সরকারি নিয়মনীতি ও প্রাতিষ্ঠানিক বিধিবিধানের তোয়াক্কা না করে টেন্ডার আহ্বান ছাড়া এবং বিনা নিলামে এসব নির্মাণসামগ্রী বিক্রি করেন তিনি।
শুক্রবার (২৬ এপ্রিল) বিকেল ৪টার দিকে এসব জিনিস বিক্রি করা হয়।
জানা গেছে, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ভবন সম্প্রসারণের কাজে বেচে যাওয়া আনুমানিক প্রায় দুই টন রড ও ১০০ কেজি এলুমিনিয়াম অতিরিক্ত থেকে যায়। অতিরিক্ত থাকা এসব নির্মাণ সামগ্রী ও অক্সিজেন সিলিন্ডার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ব্যবস্থাপনা কমিটির বিনা অনুমতিতে ও সরকারি নিয়মনীতি অনুসারে স্থানীয় ও জাতীয় পত্রিকায় উন্মুক্ত দরপত্র আহ্বান ছাড়া এবং বিনা নিলামে বিক্রি করে টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে। রড ৫৪ টাকা কেজি দরে ও এলুমিনিয়াম থাই ১৯০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করা হয়।
স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ফার্মাসিস্ট আখতারুজ্জামানের মাধ্যমে এসব সামগ্রী কিনেছেন তফাদিয়া গ্রামের ভাঙারি ব্যবসায়ী রমজান আলী শেখ। এসব মালামাল কালুখালী রেল স্টেশনের পাশে লিটন ভাঙারি দোকানে মজুত রাখা হয়। হাসপাতালের ফার্মাসিস্ট আখতারুজ্জামান নির্মাণ সামগ্রী ও গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রি করে স্বাস্থ্য কর্মকর্তাসহ অর্থ ভাগাভাগি করে আত্মসাৎ করে নেন।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের এক কর্মচারী নাম প্রকাশ না করা শর্তে কালবেলাকে বলেন, উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তার সঙ্গে আঁতাত করে হাসপাতালের নানা সরঞ্জাম ও ওষুধ বিক্রি ও নানা অনিয়ম করে থাকেন হাসপাতালের ফার্মাসিস্ট আক্তারুজ্জামান।
ভাঙারি ক্রেতা রমজান আলী কালবেলাকে বলেন, আমাকে আখতারুজ্জামান ফোন করে ডেকে নিয়ে যায়। তারপর এসব মালামাল দেখিয়ে আমার সঙ্গে দামদর মেটানো হয়। দাম মিলে যাওয়ায় আমি সরঞ্জামগুলো কিনে আনি।
এ বিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. ইসরাত জাহান উম্মনের কাছে জানতে চাইলে সাংবাদিকদের কোনো তথ্য দেননি।
রাজবাড়ীর সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ ইব্রাহিম টিটন কালবেলাকে বলেন, হাসপাতাল ব্যবস্থাপনা কমিটির মাধ্যমে ও উন্মুক্ত দরপত্র আহ্বান ব্যতিত এগুলো বিক্রির সুযোগ নেই। যদি এ রকম হয়ে থাকে তাহলে এটা আইনবিরোধী হয়েছে।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি রেলপথমন্ত্রী বীর মুক্তিযোদ্ধা জিল্লুল হাকিমের এপিএস শেকেরুজ্জামানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, মন্ত্রী এ বিষয়ে কিছু জানেন না। ওই কর্মকর্তা নিজেই বিক্রয় করেছেন।
মন্তব্য করুন