কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ীতে হিটস্ট্রোকে এক নারীর মৃত্যু হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) সকালে তাকে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়।
ওই নারীর নাম ফাতেমা বেগম (৫৭)। তিনি উপজেলার নাওডাঙ্গা ইউনিয়নের গোরকমন্ডল কৃষ্ণানন্দবকসী গ্রামে কপুর উদ্দিনের স্ত্রী।
নিহতের পরিবার সূত্রে জানা যায়, বুধবার দুপুরে নিজ বাড়িতে তীব্র গরমে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন ফাতেমা বেগম। পরিবারের লোকজন তাকে দ্রুত রংপর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত ১১টার দিকে তার মৃত্যু হয়।
গোরকমণ্ডল ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য শ্যামল চন্দ্র মণ্ডল ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, ওই নারী দীর্ঘদিন ধরে হাইপার টেনশনে ভুগছিলেন। বুধবার দুপুরে প্রচণ্ড গরমে তিনি হিট স্ট্রোক করেন। পরে পরিবারের লোকজন তাকে রংপর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে রাতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মৃত্যুবরণ করেন।
এ বিষয়ে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে ফোন দিলে সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডে যোগাযোগ করতে বলা হয়। তবে গোরকমণ্ডল ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য শ্যামল চন্দ্র মণ্ডল ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, ওই নারী দীর্ঘদিন ধরে হাইপার টেনশনে ভুগছিলেন। বুধবার দুপুরে প্রচণ্ড গরমে তিনি হিটস্ট্রোক করেন। পরে পরিবারের লোকজন তাকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে রাতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মৃত্যুবরণ করেন।
এদিকে তীব্র গরমে আবহাওয়া অফিস জারি করেছে আরও তিন দিনের হিট অ্যালার্ট। এই দুর্বিষহ সময়ে জনজীবনের একমাত্র প্রতীক্ষা ‘বৃষ্টি’র। এবার সেই অন্তিম সুখবরের পূর্বাভাস দিয়েছে সংস্থাটি। তারা বলছে, হিট অ্যালার্ট শেষে সামনের সপ্তাহের মাঝামাঝি সময়ে দেশের উত্তরপূর্বাঞ্চলে বৃষ্টিপাতের প্রবণতা বাড়তে পারে।
বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) সকাল ৯টায় দেওয়া বর্ধিত পাঁচ দিনের আবহাওয়া বার্তায় এ তথ্য জানানো হয়।
তবে আবহাওয়া অফিস বলছে, পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে বিক্ষিপ্ত বৃষ্টিপাত যথেষ্ট নয়, প্রয়োজন বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে বৃষ্টি। আগামী মে মাসে বৃষ্টিপাত বাড়লে দাবদাহ অবস্থার কিছুটা পরিবর্তন হতে পারে বলে ধারণা সংশ্লিষ্ট দপ্তরের।
এদিকে আগামী ২৪ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের দুএক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা বা ঝোড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে এবং সেই সঙ্গে কোথাও কোথাও বিক্ষিপ্তভাবে শিলা বৃষ্টি হতে পারে। এ ছাড়া দেশের অন্যত্র অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া শুষ্ক থাকতে পারে।
এ সময়ে সারা দেশে দিন এবং রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। জলীয় বাষ্পের আধিক্যের কারণে অস্বস্তিভাব বিরাজ থাকতে পারে।
খুলনা বিভাগসহ দিনাজপুর, নীলফামারী, রাজশাহী, পাবনা, ফরিদপুর ও গোপালগঞ্জ জেলার ওপর দিয়ে তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। ময়মনসিংহ, মৌলভীবাজার, রাঙ্গামাটি, চাঁদপুর, নোয়াখালী, ফেনী ও বান্দরবান জেলাসহ বরিশাল বিভাগ এবং রংপুর, রাজশাহী ও ঢাকা বিভাগের অবশিষ্টাংশের ওপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা অব্যাহত থাকতে পারে।
আগামী দুদিন সিলেট অঞ্চল ছাড়া দেশের অন্যান্য অঞ্চলে বৃষ্টিপাতের তেমন সম্ভাবনা নেই। একই সঙ্গে এ সময়ে তাপমাত্রা সামান্য বাড়তে পারে বলেও পূর্বাভাসে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
দেশের মোট ১৬ জেলার ওপর দিয়ে তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। বুধবার দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪১ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছিল মোংলায়। ঢাকায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৯ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
আবহাওয়া পরিস্থিতি বিবেচনায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা নিয়ে সিদ্ধান্ত হবে বলে জানিয়েছেন শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী বেগম শামসুন নাহার।
বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা জানান।
শামসুন নাহার বলেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা বা বন্ধের বিষয়ে আবহাওয়া পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে তারপরে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। এক্ষেত্রে আগামীকাল শুক্রবার বা শনিবার সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
এর আগে, গত ২০ এপ্রিল প্রচণ্ড গরমের কারণে দেশের সব স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসায় সাত দিনের ছুটি ঘোষণা করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। রোজার ঈদ ও পহেলা বৈশাখের টানা ছুটি শেষে গত ২১ এপ্রিল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার কথা ছিল। এই ছুটির ফলে আগামী ২৮ এপ্রিল খোলার কথা রয়েছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো। তবে দেশে চলমান তীব্র তাপপ্রবাহ এখনো কমেনি, ফলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছুটি আরও বাড়তে পারে।
মন্তব্য করুন