আমেরিকার জ্যাকসন হাইটসে গত ১২ জুলাইয়ের ঘটনা নিয়ে গণমাধ্যমের কাছে মুখ খুলেছেন নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের এমপি একেএম শামীম ওসমান। ঘটনার পর থেকে শামীম ওসমানের হোয়াটসঅ্যাপে বার্তা পাঠিয়ে গণমাধ্যমকর্মীরা ঘটনার ব্যাপারে তার প্রতিক্রিয়া জানতে চান।
বাংলাদেশ সময় শনিবার (১৫ জুলাই) রাতে আমেরিকায় ঘটে যাওয়া ঘটনা নিয়ে গণমাধ্যমকর্মীদের হোয়াটসঅ্যাপে এক ভয়েস ম্যাসেজে শামীম ওসমান প্রতিক্রিয়া জানান।
ওই প্রতিক্রিয়ায় তিনি বলেন, ‘দেখেন আপনার প্রশ্নের উত্তরে আমি একটা কথা বলতে চাই যে, যারা বাংলাদেশ থেকে আমেরিকার মতো একটা সভ্য দেশে এসেও তারা সভ্যতাটা শেখেনি। আমেরিকার মতো একটি সভ্য দেশে যে ঘটনাটি ঘটিয়েছে সেটা অবশ্যই দুঃখজনক ঘটনা। তবে তাদের নেতা তাদের যে শিক্ষা দিয়েছেন, তাদের কাছে এর চেয়ে ভালো কিছু আশা করা যায় না।’
সেদিনের ঘটনার বর্ণনা দিয়ে শামীম ওসমান বলেন, ‘বিষয়টি হচ্ছে আমি ওখানে একাই ছিলাম। আমার সঙ্গে এক ছোট ভাই ছিলেন, সে গাড়ি চালাচ্ছিলেন। আমি হয়তো গাড়ি থেকে নামতামই না। তারা যদি শুধু আমাকে গালি দিত, তাহলে আমি তাদের সামনেই যেতাম না। যখন তারা জাতির পিতার কন্যা শেখ হাসিনাকে নিয়ে অত্যন্ত বাজে মন্তব্য করেছে, তখন আমাকে নামতেই হয়েছে। কারণ আমরা বঙ্গবন্ধুর আদর্শের সৈনিক।’
তিনি বলেন, ‘এ বিষয় নিয়ে আমাদের নারায়ণগঞ্জসহ সব জায়গায় উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে। আমি সবার কাছে অনুরোধ করব যে, এতে আমাদের উত্তেজিত হওয়ার কিছু নাই। আমরা বঙ্গবন্ধুর আদর্শের সৈনিক। জাতির পিতার কন্যা শেখ হাসিনা আমাদের নেত্রী আমাদের এই শিক্ষা দেন নাই। তাই সবাইকে শান্ত থাকার অনুরোধ করব এবং দয়া করে আরেকটি অনুরোধ করব যে, এই বিচারের ভার জনগণের কাছেই ছেড়ে দেওয়া উচিত।’
শামীম ওসমান আরও বলেন, ‘সেখানে ঘটনার দিন যেটা আমার কাছে ভালো লেগেছে সেটা হচ্ছে যে, যেহেতু আমি একা ছিলাম। কটূক্তিকারীরা অনেক লোক ছিল। কিন্তু প্রতিবাদ আমি একা করি নাই। প্রতিবাদ করেছেন জ্যাকসন হাইটসে যারা বিভিন্ন দোকানের মালিকরা আছেন তারা এবং শেষ পর্যন্ত প্রতিবাদ করেছেন ও একটা পর্যায়ে প্রতিরোধ করেছেন। তাই কটূক্তিকারীরা ওখান থেকে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছে।
জনগণ যে আমাদের সঙ্গে আছে দেশে এবং বিদেশে এটি প্রমাণিত হয়েছে। তাই আমি আপনাদের গণমাধ্যম কর্মীদের মাধ্যমে সবাইকে অনুরোধ জানাচ্ছি সবাই যেন একটু শান্ত থাকেন।’
উল্লেখ্য, গত বুধবার (১২ জুলাই) স্থানীয় সময় সন্ধ্যার পর বাংলাদেশি ব্যবসায়ীদের প্রাণকেন্দ্র জ্যাকসন হাইটসের লিটল বাংলাদেশ (৭৩ স্ট্রিট) এলাকায় যান শামীম ওসমান। তিনি একটি কালো রঙের রেঞ্জ রোভার গাড়িতে ছিলেন। তাকে দেখা মাত্র রাস্তার বিপরীতে থাকা নিউইয়র্ক মহানগর বিএনপি নেতা রাব্বী, সোনাইমুড়ী উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক নেতা বাদল মির্জাসহ কয়েকজন যুবক শামীম ওসমানকে নিয়ে প্রথমে কটূক্তি করতে থাকে। তখনও তিনি গাড়িতেই ছিলেন। পরক্ষণেই কটূক্তিকারীরা প্রধানমন্ত্রী ও বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে বাজে মন্তব্য করেন। এতে গাড়ি থেকে একাই নেমে এসে শামীম ওসমান তাৎক্ষণিক প্রতিবাদ করেন।
মন্তব্য করুন