হাসপাতালের বারান্দার মেঝেতে অসুস্থ্য অবস্থায় শুয়ে আছে প্রায় ১০০ বছর বয়সী এক বৃদ্ধা। ধারণ ক্ষমতার অতিরিক্ত রোগী থাকায় আন্তঃবিভাগের সিট পাননি তিনি। বৃদ্ধাকে এভাবে কষ্ট করতে দেখে আবেগাপ্লুত হয়ে কান্নায় ভেঙে পড়লেন সেখানকার সংসদ সদস্য। এমনই ঘটনা ঘটেছে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরের।
জানা যায়, শনিবার (১৩ এপ্রিল) দুপুরে নাসিরনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ব্যবস্থাপনা কমিটির মিটিং শেষ করে ঈদ পরবর্তী শুভেচ্ছা বিনিময় ও রোগীদের খোঁজখবর নিতে হাসপাতালের আন্তঃবিভাগে আসেন সংসদ সদস্য সৈয়দ এ কে একরামুজ্জামান সুখন। তখনই মেঝেতে শুয়ে থাকা বৃদ্ধার দিকে নজর পরে তার। শতবর্ষী একজন বৃদ্ধাকে এভাবে বারান্দায় পড়ে থাকতে দেখে আবেগাপ্লুত হয়ে বৃদ্ধার পাশে বসেই কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি। এ সময় উপস্থিত ডাক্তার-নার্সরাও কান্না ধরে রাখতে পারেননি। পরে হাসপাতালে ভর্তি ৬০ জন রোগীকে বিভিন্ন ফলমূল ও তাদের সঙ্গে আসা শিশুদের পুতুল উপহার দেন এমপি একরামুজ্জামান।
এ বিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. অভিজিৎ রায় জানান, প্রায় ১০০ বছরের কাছাকাছি বয়সী বৃদ্ধাকে কষ্ট করতে দেখে সংসদ সদস্য কিছুটা আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন। তিনি আমাদেরকে ওই বৃদ্ধার উন্নত চিকিৎসার নির্দেশনা দিয়েছেন।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুহাম্মদ ইমরানুল হক ভূঁইয়া বলেন, একজন বৃদ্ধার কষ্ট দেখে সংসদ সদস্যের এভাবে ব্যাথিত হওয়ার বিষয়টি প্রমাণ করে ওনি একজন মহান হৃদয়ের মানুষ। তিনি চাইলে বিষয়টি এড়িয়ে যেতে পারতেন। কিন্তু তিনি বৃদ্ধার পাশে গিয়ে বসে পড়েছেন, সার্বিক খোঁজখবর নিয়েছেন এবং উন্নত চিকিৎসার ব্যাপারে নির্দেশনা দিয়েছেন। স্বাস্থ্যসেবাসহ নাসিরনগরের বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজের ব্যাপারে ওনার আন্তরিকতা রয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সাংসদ একরামুজ্জামান জানান, একজন বৃদ্ধাকে এভাবে কষ্ট করতে দেখে আমার দাদীর কথা মনে পড়ে গিয়েছিল। আমি আগামীকাল থেকেই হাসপাতালটিকে ১০০ শয্যায় উন্নীত করার ব্যাপারে কাজ শুরু করব। আমাদের যতটুকু সাধ্য আছে তার সর্বোচ্চটা দিয়ে চেষ্টা করে যাব। কোনো রোগী সেবা থেকে বঞ্চিত হবে না।
উল্লেখ্য, সৈয়দ এ কে একরামুজ্জামান দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-১ (নাসিরনগর) আসন থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থীকে বিপুল ভোটে পরাজিত করে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। সম্প্রতি তিনি আওয়ামী লীগে যোগ দেন। নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার আগ পর্যন্ত তিনি বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা ছিলেন। বর্তমানে তিনি খাদ্য মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত এবং সরকারি হিসাব সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য হিসেবে আছেন। এছাড়াও তিনি আরএকে সিরামিকসের ম্যানেজিং ডিরেক্টর এবং একাধিকবার দেশের শীর্ষ করদাতা হিসেবে পুরস্কৃত হয়েছেন।
মন্তব্য করুন