ফরিদপুরে চরভদ্রাসনে ছেলেকে বাঁচাতে গিয়ে পদ্মা নদীতে ভেসে যাওয়ার ঘটনার ১৯ ঘণ্টা পর বাবা শাহাদাত খানের (৫৩) লাশ উদ্ধার করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১১ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ভেসে যাওয়ার জায়গা থেকে অন্তত ৫০০ মিটার দূরে পদ্মা নদীর একটি চর থেকে মরদেহটি উদ্ধার করেন চরভদ্রাসন ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের কর্মীরা।
শাহাদাত চরভদ্রাসন সদর ইউনিয়নের বাদুল্লা মাতুব্বরের ডাঙ্গী গ্রামের বাসিন্দা কুটি খানের ছেলে। তার দুই ছেলে ও দুই মেয়ে রয়েছে।
পরিবারের সদস্য ও ফায়ার সার্ভিস সূত্রে জানা যায়, শাহাদাত খান ঢাকায় চাকরি করতেন। তিনি পরিবার নিয়ে ঢাকার খিলক্ষেত এলাকায় বসবাস করতেন। বুধবার সকালে তিনি ঢাকা থেকে গ্রামের বাড়িতে আসেন। এরপর বিকেলে ছোট ছেলে সিয়ামকে (১৬) নিয়ে গোপালপুর ঘাট এলাকায় পদ্মা নদীতে গোসল করতে যান। একপর্যায়ে সিয়াম স্রোতের টানে ভেসে গেলে বাবা শাহাদাত তাকে উদ্ধার করতে নদীতে নামেন। তিনি ছেলেকে উদ্ধার করে জেলেদের একটি নৌকায় উঠিয়ে দিলেও নিজে স্রোতের টানে ভেসে যান।
চরভদ্রাসন ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের স্টেশন কর্মকর্তা মুর্তজা ফকির বলেন, পদ্মা নদীতে নিখোঁজ শাহাদাতকে উদ্ধারের প্রচেষ্টা তারা বুধবার বিকেলই শুরু করেন। পরে ফরিদপুর ফায়ার সার্ভিসের দুই ডুবুরি তাদের সঙ্গে যোগ দেন। তবে বুধবার সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত তার সন্ধান পাওয়া যায়নি। আজ সকাল থেকে পুনরায় উদ্ধার অভিযান শুরু হয়। পরে সকাল সাড়ে ১০টার দিকে শাহাদাতের মরদেহ উদ্ধার করে নৌ পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়।
চরভদ্রাসন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফয়সাল বিন করিম বলেন, নদীতে গোসল করতে নেমে একজন নিখোঁজ হওয়ার খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসকে দ্রুত উদ্ধার অভিযান পরিচালনা করতে বলা হয়। ঘটনার পরদিন ফায়ার সার্ভিস মরদেহ উদ্ধার করে। ময়নাতদন্ত ছাড়াই মরদেহ দাফনের বিষয়ে নিহতের পরিবারের সদস্য ও স্থানীয় লোকজন আমার কাছে আসে। তাদের কারও কোনো অভিযোগ না থাকায় ময়নাতদন্ত ছাড়াই মরদেহ দাফনের বিষয়ে জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত আবেদনের মাধ্যমে হস্তান্তর করা হয়েছে।
ফরিদপুর সিঅ্যান্ডবি ঘাট নৌপুলিশ ফাঁড়ির ওসি মো. ইদ্রিস আলী বলেন, পরিবারের সদস্যদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে শাহাদাত খান মরদেহটি ময়নাতদন্ত ছাড়াই পরিবারের সদস্যদের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে।