সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে প্রেমের সম্পর্কের জেরে ঝালকাঠির কাঁঠালিয়া উপজেলায় প্রেমিকার বাড়িতে হাজির হয়েছেন ভারতের উত্তর প্রদেশ কানপুর এলাকার ছেলে ইমরান (৩৪)। এদিকে প্রেমিক আসার খবর শুনে ফারজানা নামের ওই প্রেমিকা বাড়ি থেকে পালিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
শনিবার (৬ এপ্রিল) বিকেলে উপজেলার ১নং চেঁচরীরামপুর ইউনিয়নের মহিষকান্দী এলাকার ইমাদুল হাওলাদারে বাড়িতে আসেন ইমরান নামে ওই যুবক। সেটা শুনে ফারজানার পরিবার তাকে সরিয়ে দেয় এবং ভারতীয় যুবক ইমরানের সঙ্গে অসদাচরণ করলে ইমরান কোনো উপায় না পেয়ে ফিরে যান। ফারজানা ওই ইউনিয়নের মহিষকান্দী গ্রামের ইমাদুল হাওলাদারের মেয়ে।
এদিকে ওই ভারতীয় যুবককে একনজর দেখতে বিকেল থেকেই মহিষকান্দীর ওই বাড়িতে ভিড় জমান স্থানীয়রা।
জানা যায়, ইমরানের সঙ্গে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে পরিচয় হয় ইমাদুল হাওলাদারের মেয়ে ফারজানার। দুই বছর আগে তাদের মধ্যে পরিচয় থেকে প্রেমের সম্পর্কে গড়ায়। এরপর থেকে ইমরান বিভিন্ন সময় ফারজানার কাছে টাকা পাঠাতেন এবং কুরিয়ারের মাধ্যমে পোশাক পাঠাতেন। বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন অজুহাতে টাকা আনতে থাকেন ওই যুবকের কাছ থেকে। এবার সকল বাধা অতিক্রম করে প্রেমিকাকে দেখতে ভারত থেকে ছুটে আসেন ইমরান। কিন্তু ইমরানের আসার খবর শুনে বাড়ি থেকে পালিয়ে গেছেন ফারজানা। এদিকে যুবকটির সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করে তাড়িয়ে দেয় ফারজানার পরিবারও। কোনো উপায় না পেয়ে পরে ফিরে যান তিনি।
ইমরান বলেন, ফারজানার ছোট খালা এবং আমি সৌদিতে এক মালিকের অধীনে চাকরি করেছি। সেই সুবাদে ফারাজানার সঙ্গে ফেসবুকের মাধ্যমে সম্পর্ক শুরু হয়। আমাদের প্রেমের সম্পর্ক ফারাজানার পরিবারের সবাই জানত। তারা আমার কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। তারপর পাসপোর্ট ও ভিসার মাধ্যমে বাংলাদেশে আসি। এখানে আসার পর এখন তারা সব কিছু অস্বীকার করছে। আমার সঙ্গে প্রতারণা করেছে। এখন বাধ্য হয়ে আবার দেশে ফিরে যাচ্ছি।
তবে ফারজানার বাবা ইমদাদুল প্রথমে ইমরানকে চিনলেও মেয়ের প্রেম ও প্রতারণার বিষয়টি অস্বীকার করেন। তিনি বলেন, আমার শ্যালিকা সৌদি আরবে থাকেন। সেখান থেকে ইমরানের সঙ্গে আমাদের পরিচয় হয়। এরপর আমাদের একটা ভিসা দেওয়ার কথা বলেছিল। আমি তার হিন্দি ভাষা বুঝতে না পারার কারণে আমার মেয়ের সঙ্গে তার কথা হতো। আমার মেয়ের সঙ্গে কোনো প্রেমের সম্পর্ক ছিল না। এটা মিথ্যা কথা।
ফারাজানার খালা বলেন, যখন সৌদিতে থাকতাম তখন আমরা একই মালিকের অধীনে কাজ করতাম। একদিন আমার মোবাইল নষ্ট হয়ে গেলে আমি ইমরানের কাছে মোবাইল সারাতে দিয়েছিলাম। কারণ আমি মোবাইলের তেমন কিছু বুঝি না। এরপর সে কীভাবে আমার মোবাইল থেকে আমার ভাগ্নির ছবি নিয়ে যায়। আমি সৌদি থেকে বাংলাদেশ আসার সময় আমি একটা নম্বর দিয়ে এসেছিলাম। তারপর ইমরান ওই নম্বরে এক মাস কল দিয়েছিল।
এ ব্যাপারে কাঁঠালিয়া উপজেলার চেঁচরীরামপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. হারুন অর রশীদ বলেন, আমি ঘটনাটি শুনেছি। আমার যদি কোনো সহযোগিতা প্রয়োজন হয় তাহলে তাদের সহযোগিতা করা হবে।
মন্তব্য করুন