শুধু প্রাচীন নয়, দেশের প্রাচীনতম মসজিদটি দাঁড়িয়ে আছে বাংলাদেশ-ভারতের একেবারে সীমান্ত ঘেঁষে। কয়েক বছর আগেও দুই দেশের মুসল্লিরা কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে সেখানে নামাজ আদায় করতেন। তারপর বিএসএফের কড়াকড়ির কারণে সেটা বন্ধ হয়ে যায়। ধারণা করা হয়, ১৩০০ বছর আগের প্রাচীন এই মসজিদ নির্মিত হয়েছে কোনো সাহাবি বা তাবেঈর হাতে।
ভারতের কুচবিহারের শিতলকুচি এবং বাংলাদেশের লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার বড়খাতা ইউনিয়নের দোলাপাড়া সীমান্তে অপরূপ সৌন্দর্য নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকা এই মসজিদের নাম কেরামতিয়া বড় মসজিদ। স্থানীয়রা ডাকেন ভাঙ্গা মসজিদ নামে। প্রাচীনতম যে মসজিদটি ছিল, সেটাকে আমূল সংস্কার করে দেওয়া হয়েছে আধুনিক রূপ।
১১৯৭ থেকে ১২০৬ খ্রিস্টাব্দের মধ্যে প্রথম মুসলিম হিসেবে বাংলা-বিহার জয় করেছিলেন ইখতিয়ার উদ্দিন মুহাম্মাদ বিন বখতিয়ার খিলজি। ইতিহাসবিদরা ধারণা করছেন, সেই সময়ই নির্মাণ করা হয় লালমনিরহাটের এই কেরামতিয়া বড় মসজিদ। প্রতি শুক্রবার দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে হাজার হাজার নারী-পুরুষ এতে জমায়েত হয়ে নামাজ আদায় করেন।
মসজিদের পাশেই প্রাচীন একটি কবর রয়েছে। জানা যায়, মুঘল আমলে কেরামতিয়া হুজুর নামে এক দরবেশ মসজিদটি সংস্কার করেন। তার মৃত্যুর পর মসজিদের পাশেই তাকে দাফন করা হয়। ১৯৪৭ সালে দেশভাগের সময় মসজিদ ও মাজারটি পড়ে যায় দুই দেশের সীমান্তের জিরো পয়েন্টে। এ নিয়ে বিএসএফ ও বিডিআরের মধ্যে একাধিকবার বৈঠকও হয়েছে।
২০১১ সালে মসজিদটি সংস্কার করতে গেলে আন্তর্জাতিক সীমান্ত আইনের অজুহাতে নির্মাণ কাজে বাধা দেয় বিএসএফ। পরে বাংলাদেশ ও ভারতের উচ্চ পর্যায়ে নকশা অনুমোদন হওয়ার পর কোটি টাকা ব্যয়ে দোতলা মসজিদটি নির্মাণ নির্মাণ করা হয়।
মন্তব্য করুন