অন্যান্য যে কোনো সময়ের তুলনায় ঈদকে ঘিরে সব ধরনের বিপণিবিতানগুলোতে থাকে অতিরিক্ত ক্রেতাদের ভিড়। কিন্তু ঝিনাইদহ পৌরসভায় অধিকাংশ মার্কেটে কাস্টমারের জন্য টয়লেট না থাকায় ঈদে কেনাকাটা করতে আসা ক্রেতাদের পোহাতে হচ্ছে চরম দুর্ভোগ। পৌর শহরে যে কয়েকটি পাবলিক টয়লেট আছে তাও মূল শহরের বাইরে হওয়ায় মূল শহরে অবস্থিত বিপণিবিতানগুলোতে আসা ক্রেতাদের পড়তে হচ্ছে নানা রকম বিড়ম্বনায়। এ ক্ষেত্রে পুরুষরা যেনতেনভাবে মুক্তি পেলেও, নারীরা পড়ছেন চরম বিপাকে।
অনেক মার্কেটে শৌচাগার থাকলেও শুধু মার্কেটের লোকজনের জন্য তালার মাধ্যমে বরাদ্দ থাকে। বাইরের লোকজন তাতে বাধার মুখে পড়েন। এ ছাড়া মার্কেটগুলো বেশিরভাগই শহরের প্রাণকেন্দ্রে অবস্থান হওয়ায় মার্কেট মালিকেরা ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের টাকা জামানত নিয়ে দোকান বরাদ্দ দিলেও মার্কেটে পর্যাপ্ত পাবলিক টয়লেটের ব্যবস্থা রাখেননি।
ঈদে কেনাকাটা করতে আসা মো. রবিউল ইসলাম নামের একজন ক্রেতা জানান, ঝিনাইদহের জেলা শহরের প্রাণকেন্দ্রে সমস্ত মার্কেট অবস্থিত থাকলেও সেখানে কোনো পাবলিক টয়লেটের ব্যবস্থা নেই। এ পাবলিক টয়লেট না থাকায় প্রতিদিন অসংখ্য মানুষ সমস্যার সম্মুখিন হচ্ছে। প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে মানুষজন প্রতিনিয়ত মসজিদ, ব্যাংক বা খোলা জায়গায় কাজ সারছেন। খোলা জায়গায় প্রসাব করার কারণে শহরের পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে। এ বিষয়ে পৌরসভার মেয়রের দৃষ্টি আকর্ষণ করে তিনি বলেন, অতি দ্রুতই শহরের মূল পয়েন্টে পাবলিক টয়লেট নির্মাণ করে জনভোগান্তি কমানোর হোক।
এ ছাড়া একজন নারী ক্রেতা জানান, আমাদের শহরে বিশেষ করে মেয়েদের জন্য কোনো পাবলিক টয়লেট নাই। পাবলিক টয়লেটে যাওয়ার প্রয়োজন পড়লেও মেয়েরা অনেক সময় লজ্জায় বলতে পারে না। এতে করে তাদের শারীরিক নানা রকম সমস্যা তৈরি হতে পারে। কাজেই সরকারের কাছে দাবি অতি দ্রুতই যেন ঝিনাইদহ মূল শহরে মেয়েদের জন্য বিশেষভাবে পাবলিক টয়লেট নির্মাণ করা হয়।
এদিকে ঝিনাইদহ পৌরসভার পক্ষ থেকেও এখন পর্যন্ত শহরের প্রাণকেন্দ্রে করা হয়নি কোনো আধুনিক মানের গণসৌচাগার। প্রধান শহরের বাইরে বেশ কয়েকটি গণশৌচাগার থাকলেও সেগুলো সবসময়ই থাকে নোংরা ও দুর্গন্ধময়। যেগুলোর সব ক’টি মূল শহরের বাইরের দিকে। এগুলোর কোনোটিই মানসম্মত নয়। সেখানে কেউ প্রবেশ করে নাকে-মুখে রুমাল দিয়ে। তাতেও দুর্গন্ধ ঠেকানো দায় হয়ে পড়ে।
এ বিষয়ে ঝিনাইদহ পৌরসভার মেয়র বলেন, পাবলিক টয়লেট অত্যন্ত জরুরি একটি বিষয়। আমাদের পৌরসভার যে জায়গা বা মার্কেট সেগুলো সড়ক বিভাগ ও জেলা পরিষদের জায়গা। জেলা পরিষদ রাস্তার দুপাশের জায়গাগুলো অস্থায়ী চুক্তিভিত্তিক মার্কেট করে ভাড়া দিয়ে রেখেছেন। এখানে পাবলিক টয়লেট করার মতো তেমন কোনো জায়গা আমি পাই নাই। এ বিষয়ে আমি জেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের সঙ্গে কথা বলেছি, আমাকে কিছু জমি দেওয়া হোক পাবলিক টয়লেট নির্মাণ করা জন্য। এ বিষয়ে তিনি আমাকে আশ্বস্ত করেছেন। এ ছাড়া আমি পৌরসভার পক্ষ থেকে পাবলিক টয়লেট করার জন্য জমি অধিগ্রহণের বিষয়ে মন্ত্রাণলয়ে কথা বলেছি। তারা আমাকে একটি প্রজ্ঞাপণ দেখিয়ে জানিয়েছেন, বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দার কারণে জমি অধিগ্রহণ সরকার আপাতত বন্ধ রেখেছেন। সে কারণে এখনো পাবলিক টয়লেট নির্মাণ সম্ভব হয়নি।
মন্তব্য করুন