শেরপুরের নকলায় একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের ন্যায্যমূল্যের পণ্য বিতরণে অতিরিক্ত টাকা নেওয়ায় ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সভাপতিকে গণধোলাই দিয়েছেন স্থানীয়রা।
রোববার (৩১ মার্চ) বিকেলে উপজেলার নকলা ইউনিয়নের ধনাকুশা উচ্চ বিদ্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে।
গণধোলাইয়ের শিকার আওয়ামী লীগ নেতার নাম রবিউল ইসলাম রবি। তিনি নকলা সদর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি।
নকলা থানার ওসি কাদের মিয়া কালবেলা বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়। বিক্ষুব্ধ জনতার হাত থেকে তাকে উদ্ধার করে থানায় আনা হয়েছে। তবে কোনো লিখিত অভিযোগ না থাকায় আইনি প্রক্রিয়া শেষে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
জানা গেছে, রমজান উপলক্ষে শেরপুরের আননাসা ফাউন্ডেশন ন্যায্যমূল্যে পণ্য বিক্রি করতে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহায়তা চায়। এ সময় তারা ৬০০ মানুষের মধ্যে ৫৫০ টাকার প্যাকেজ বিক্রি করার কথা জানায়। ডিলারের মাধ্যমে ৬০০ মানুষের পণ্যও নিয়ে আসে। কিন্তু আওয়ামী লীগের সভাপতি রবি মাইকিং করে ৬০০ টাকা প্যাকেজ ঘোষণা করেন।
এ ছাড়া অতিরিক্ত টাকার লোভে ১ হাজার ৪০০ লোকের কাছ থেকে কার্ড প্রতি ২০ টাকা করে উত্তোলন করেন। এতে স্থানীয়রা ক্ষুব্ধ হয়ে দুপুর ১২টা থেকে তাকে অবরোধ করে রাখে। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে আসলে পুলিশের উপস্থিতিতেই স্থানীয়রা গণধোলাই দেয়। পরে পুলিশ রবিকে থানা হেফাজতে নিয়ে আসে। এ মারধরের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।
আননাসা ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান নাজমুল ইসলাম বলেন, রমজান উপলক্ষে আমরা ন্যায্যমূল্যে পণ্য বিক্রি করে আসছি। এরই ধারাবাহিকতায় নকলায় আমরা পণ্য বিক্রির উদ্যোগ নেই। পরে আমাদের দুজন নকলার প্রতিনিধি স্থানীয় আওয়ামী লীগের কাছে সহযোগিতা কামনা করে। কিন্তু সহযোগিতা করতে গিয়ে না কি টাকা নিয়েছে। এ বিষয়ে আমরা জানি না। যদি নিয়ে থাকে এটা অন্যায়।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে রবিউল ইসলাম রবি বলেন, আয়োজকদের প্রতিনিধি কবিরের কথাতেই আমি জনপ্রতি কার্ডের জন্য ২০ টাকা করে ৮০ হাজার টাকা তুলি। যারা টাকা তুলেছে তাদের খরচ বাবদ ২০ হাজার টাকা দিয়েছি। আর ১০ হাজার টাকা কবিরকে দেই। বাকি ৫০ হাজার আমার কাছে আছে। এর মধ্যে আরও ২০ হাজার টাকা কবিরকে দেওয়ার কথা রয়েছে।
তিনি বলেন, বেশ কয়েক দিন ধরে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের কমিটি নিয়ে একটি দ্বন্দ্ব চলছে। প্রতিপক্ষরা আমাকে ফাঁসাতেই এ চক্রান্ত করেছে।
নকলা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা শফিকুল ইসলাম জিন্নাহ বলেন, এ ঘটনায় আমরা উপজেলা আওয়ামী লীগ লজ্জিত। তবে ভেতরে অন্য কোনো ঘটনা আছে কি না তা আমরা খুঁজে দেখব। অপরাধ প্রমাণিত হলে অবশ্যই সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
মন্তব্য করুন