নোয়াখালীর দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ার সেই পুকুরে এবার মিলল আরও ৪০টি রুপালি ইলিশ। শুক্রবার (২৯ মার্চ) সকালে উপজেলার নিঝুম দ্বীপ ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডের ‘যুগান্তর কিল্লা’ গুচ্ছ গ্রামের পুকুরে জাল ফেললে মাছগুলো ধরা পড়ে। এর আগে বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) ১০০টি এবং বুধবার (২৭ মার্চ) পুকুরটি থেকে ১০ কেজি রুপালি ইলিশ ধরা পড়ে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, নিঝুম দ্বীপ ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডের ‘যুগান্তর কিল্লা’ গুচ্ছ গ্রামের পুকুরটি ৪০টি পরিবার ব্যবহার করে। পুকুরটি লিজ নিয়েছেন নিঝুম দ্বীপ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ও হোটেল নিঝুম সি প্যালেসের মালিক আবদুল মান্নান। বিশাল পুকুরে প্রায় সাত দিন ধরে সেচ দিয়ে পানি কমিয়ে মাছ ধরার উপযোগী করেন তিনি।
গত বুধবার সকালে পানি প্রায় কমে এলে জেলেদের জাল দিয়ে ১০ কেজি রুপালি ইলিশ মাছ ওপরে তোলেন এবং বৃহস্পতিবার সকালে আরও পানি কমিয়ে একশ রুপালি ইলিশ ধরেন। বিগত বছরগুলোতেও এই পুকুরে ইলিশ মাছ পাওয়া গেছে।
আবদুল মান্নানের ছেলে আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, আমাদের নিঝুম দ্বীপের পুকুরে ইলিশ পাওয়ার খবর নতুন নয়। প্রায় পুকুরেই ইলিশের দেখা মিলে। আমাদের এখানে কোনো বেড়িবাঁধ নেই, তাই জোয়ার হলেই পানি ঢুকে। সে পানির সঙ্গে ইলিশ মাছও ঢুকে। শুক্রবার ৪০টি ইলিশ পাওয়া গেছে।
পুকুরের মালিক আবদুল মান্নান বলেন, নিঝুমদ্বীপে আমি দীর্ঘসময় ধরে বিভিন্ন পুকুর লিজ নিয়ে মাছ চাষ করি। পুকুরগুলোতে প্রতি বছর কমবেশি ইলিশ পাওয়া যায় । যুগান্তর কিল্লা গুচ্ছ গ্রামের পুকুরটি ২০২২ সালে প্রথম ধাপে ৩৫টি ইলিশ পেয়েছিলাম। সব মিলিয়ে প্রায় ১০ কেজির ওপরে। ২০২৪ সালে এসে তিন দিনে যা পেয়েছি তা গতবারের চেয়ে প্রায় তিনগুণ। এরমধ্যে তৃতীয়দিনের মতো ৪০টি রুপালি ইলিশ পেয়েছি।
নিঝুম দ্বীপ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. নুরুল আফছার দিনাজ বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, নিঝুমদ্বীপের পুকুরে ইলিশ পাওয়ার খবর ডাল-ভাতের মতো। প্রতি বছর ঘূর্ণিঝড় এলে নিঝুম দ্বীপের প্রায় সবগুলো পুকুর তলিয়ে যায়। এর মধ্যে যুগান্তর কিল্লা পুকরটিও ছিল। মূলত জোয়ারের পানি প্রবেশ করায় তখন ইলিশ পুকুরে এসেছে। পানি বের হতে না পারায় মাছগুলো নিজেদের খাপ খাইয়ে নিয়েছে।
এ বিষয়ে নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সমুদ্রবিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মো. আনিসুজ্জামান বলেন, একই পুকুরে এত বেশি ইলিশ পাওয়া আমাদের জন্য নতুন বার্তা দিচ্ছে। এটা নিয়ে গবেষণা করার সুযোগ এসেছে। তবে নোয়াখালী উপকূলীয় এলাকা হওয়ায় নিম্নাঞ্চলগুলো জোয়ারে প্লাবিত হয়। তখন ইলিশ প্রবেশ করায় বর্তমানে সেটি ধরা পড়ছে। নদীতে ইলিশের যেমন বৃদ্ধি পায় পুকুরে তেমন বৃদ্ধি পায় না এবং স্বাদ ও আকৃতি এক হয় না।
মন্তব্য করুন