রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে পোস্ট গ্রাজুয়েট প্রাইভেট ট্রেইনি ডক্টর এসোসিয়েশন ও ইন্টার্ন চিকিৎসকদের ডাকা কর্ম বিরতিতে ব্যাহত হয়ে পড়েছে চিকিৎসাসেবা।
রোববার (২৪ মার্চ) থেকে শুরু হওয়া এই ধর্মঘটে হাসপাতালের এই অচলাবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। ভাতা বৃদ্ধি ও কর্মস্থলে নিরাপত্তা নিশ্চিতসহ ৪ দফা দাবিতে তারা এই কর্মবিরতি কর্মসূচি পালন করছে। তবে কর্তৃপক্ষের দাবি, কর্মবিরতি চললেও সব কিছু ম্যানেজ করেই এই কর্মসূচি পালিত হচ্ছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, এমবিবিএস শেষ করে রামেক হাসপাতালে ২১০ ইন্টার্ন চিকিৎসক হিসেবে ইন্টার্নশিপ করছেন। এ ছাড়া আগেই এমবিবিএস শেষ করে সরকারি চাকরিতে প্রবেশ না করা আরও প্রায় ৬০ জন চিকিৎসক এফসিপিএস ও এমডিএমএস কোর্স করছেন।
তারা জানান, এফসিপিএস ও এমডিএমএস কোর্সের প্রশিক্ষণার্থী চিকিৎসকরা প্রতি মাসে ২০ হাজার টাকা ভাতা পান। তারা এই মাসিক ভাতা বাড়ানোর দাবি তোলেন। তাদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে সরকারের পক্ষ থেকে ভাতা ২৫ হাজার টাকা করার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে। কিন্তু এটি এখনো বাস্তবায়ন হয়নি। তাই পোস্ট গ্রাজুয়েট প্রাইভেট ট্রেইনি ডক্টর এসোসিয়েশন সারা দেশেই কর্মবিরতির ডাক দেয়। তাদের সঙ্গে যোগ দেন ইন্টার্ন চিকিৎসকরা। ইন্টার্ন চিকিৎসকরা এখন মাসে ১৫ হাজার টাকা ভাতা পান। তারা এটি দ্বিগুণ করার দাবি জানাচ্ছেন। এ ছাড়া তাদের এক বছরের ইন্টার্নশিপ দুই বছর করার দাবি করছেন।
চার দফা দাবি নিয়ে পোস্ট গ্রাজুয়েট প্রাইভেট ট্রেইনি ডক্টর এসোসিয়েশনের একটি প্রতিনিধিদল ২৪ মার্চ স্বাস্থ্যমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। সেখানে আশানুরূপ ফলাফল না পেয়ে সেদিনই পর দিন ২৫ থেকে ২৯ মার্চ পর্যন্ত পূর্ণ কর্মবিরতি পালনের ঘোষণা দেন। তবে রামেক হাসপাতালে ২৪ মার্চ থেকেই কর্মবিরতি শুরু হয়ে যায়। এখন হাসপাতালটিতে মেডিকেল কলেজের প্রভাষক ও মধ্যম পর্যায়ের চিকিৎসকদের দিয়ে সেবা দেওয়া হচ্ছে।
মঙ্গলবার (২৬ মার্চ) দুপুরে হাসপাতাল ঘুরে দেখা গেছে, কোর্সের প্রশিক্ষণার্থী চিকিৎসক ও ইন্টার্ন চিকিৎসকরা ওয়ার্ডে নেই। মেডিকেল কলেজের প্রভাষক ও মধ্যম পর্যায়ের চিকিৎসকরা দায়িত্ব পালন করছেন। রোগীদের কেউ কেউ এই চিকিৎসকদের অত্যন্ত তৎপর থাকার কথা জানিয়েছেন। আবার কেউ কেউ বলেছেন, আগের মতো ডাকলেই চিকিৎসকের দেখা পাচ্ছেন না। কয়েকবার সমস্যার কথা জানানোর পর চিকিৎসক এসে রোগী দেখে যাচ্ছেন। ইন্টার্ন চিকিৎসক ও কোর্সের প্রশিক্ষণার্থী চিকিৎসকরা না থাকার কারণে চিকিৎসাসেবা ব্যাহত হচ্ছে।
জানতে চাইলে রামেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এ এফ এম শামীম আহাম্মদ বলেন, ইন্টার্ন চিকিৎসক ও কোর্সের প্রশিক্ষণার্থী চিকিৎসকরাই মূলত সারাক্ষণ ওয়ার্ডে থাকেন। তারা না থাকার কারণে কিছু কাজকর্ম ব্যাহত হচ্ছে। তবে জুনিয়র প্রভাষক ও মিড লেভেলের ডাক্তারদের দিয়ে সেবা দেওয়া হচ্ছে। তারা অত্যন্ত তৎপর আছেন।
তিনি বলেন, হাসপাতালে সব সেবা কার্যক্রমই চলছে। গত রাতে আমি ১টা পর্যন্ত হাসপাতালেই ছিলাম। ঘুরে ঘুরে দেখেছি। কিন্তু এটা তো দাবি আদায়ের কৌশল হতে পারে না। আন্দোলন যদিও কেন্দ্রীয়ভাবে হচ্ছে, তারপরও আমি তাদের সঙ্গে বসব, কথা বলব।
মন্তব্য করুন