চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানায় জন্মের প্রায় মাসখানেক পর খাঁচার বাইরে উন্মুক্ত হলো তিনটি বাঘ শাবক। গত ফেব্রুয়ারিতে ‘জো বাইডেন’ ও বাঘিনী ‘জয়া’র ঘর আলো করে আসা তিন মেয়ের নাম রাখা হয়েছে- প্রকৃতি, স্রোতস্বিনী ও রূপসী। এ তিনটি বাঘ শাবক এবার ঈদের চট্টগ্রামবাসীর জন্য বিশেষ আকর্ষণ হয়ে উঠবে বলে আশা করছেন চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ।
সোমবার (২৫ মার্চ) দুপুর ১২টার দিকে নামকরণের আয়োজনে যোগ দিতে ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি ও জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানায় যান। পরে বাঘ শাবক তিনটিকে খাঁচা থেকে বের করে জেলা প্রশাসকের হাতে তুলে দেওয়া হয়।
এ সময় তিনি শাবক ৩টি কোলে নিয়ে এগুলোর নামকরণ করেন-প্রকৃতি, স্রোতশ্বিনী ও রূপসী। এর মধ্য দিয়ে জন্মের এক মাস পর শাবকগুলো প্রকাশ্যে নিয়ে আসা হলো। এর আগে গত ২৩ ফেব্রুয়ারি চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানায় ‘জো বাইডেন’ ও বাঘিনী ‘জয়ার’ খাঁচায় বাঘ শাবক তিনটির জন্ম হয় বলে জানিয়েছে চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ।
বাঘ শাবক তিনটির নামকরণ অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন জেলা প্রশাসকের সহধর্মিণী ও চট্টগ্রাম লেডিস ওয়েলফেয়ার ক্লাবের সভাপতি তানজিয়া রহমান, কাট্টলী সার্কেলের সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. আরাফাত সিদ্দিকী, চিড়িয়াখানার সদস্য সচিব ও এনডিসি হুছাইন মুহাম্মদ, স্টাফ অফিসার টু ডিসি ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আল-আমিন ও চিড়িয়াখানার ডেপুটি কিউরেটর ডা. শুভ।
চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক আবুল বাশার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান কালবেলাকে বলেন, ২০১৬ সালে দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে দুটি রয়েল বেঙ্গল টাইগার চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানায় নিয়ে এসেছিলাম। সে দুটি বাঘ বৃদ্ধি পেয়ে বর্তমানে চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানায় বর্তমানে ৩টি শাবকসহ মোট বাঘের সংখ্যা ১৭। এর মধ্যে ৫টি বাঘ ও ১২টি বাঘিনী। এখানে সাদা বাঘও রয়েছে। গত বছরের সেপ্টেম্বরে প্রাণী বিনিময়ের আওতায় দুটি বাঘ রংপুর চিড়িয়াখানায় দিয়ে দুটি জলহস্তী চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানায় আনা হয়। প্যারিস জলবায়ু পরিবর্তন চুক্তিতে স্বাক্ষর করায় আমেরিকার প্রেসিডেন্টে সম্মানার্থে সাবেক জেলা প্রশাসক বাঘটির নাম রাখা হয় জো বাইডেন।
বাঘিনী জয়ার জন্ম ২০১৮ সালের জুলাইয়ে আর বাঘ জো বাইডেনের জন্ম ২০২০ সালের ২৮ ডিসেম্বর। বাঘ জো বাইডেন জন্মের পরপরই তার মা থেকে পরিত্যক্ত হলে চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানার ব্যবস্থাপনায় লালন-পালন করা হয়। এক বছর লালন করার পর বিশেষ প্রক্রিয়ায় খাঁচায় অবস্থিত বাঘ পরিবারের সাথে সোশালাইজেশনের মাধ্যমে সদস্য হিসাবে রি-ইন্ট্রোডাকশন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হয়। প্রাপ্তবয়স্ক হওয়ার পর এই প্রথমবারের মতো সে নিজের সংসার তৈরি করল। মানুষের হাতে লালন-পালন হয়ে পুনরায় বাঘ পরিবারের সাথে একত্রীকরণের মাধ্যমে বংশবিস্তার করার চক্র একটি বিরল ঘটনা।
চিড়িয়াখানার ভারপ্রাপ্ত কিউরেটর ডা. শাহাদাত হোসেন শুভ বলেন, গত ২৩ ফেব্রুয়ারি জো বাইডেন পরিবারে তিনটি বাচ্চার জন্ম হয়। সাত দিন পর আমরা লিঙ্গ নির্ধারণ করি যে, তিনটিই মেয়ে। প্রথমবারের মতো এগুলো আমরা উন্মুক্ত করেছি। এজন্য আমরা নামকরণের আয়োজন করেছি। ফিজিক্যালি এগুলো এখন যথেষ্ট ভালো আছে। মায়ের ভালো রেসপন্স পাচ্ছে। হাঁটাচলা-দৌড়ানো আস্তে আস্তে শিখতে শুরু করেছে। সামনে ঈদুল ফিতর, এবার ঈদের প্রধান আকর্ষণ হবে এ তিনটি ছোট বাঘ।
মন্তব্য করুন