নাটোরের গুরুদাসপুরে ২০ বিঘা ক্ষেতের ফসল নষ্ট করে পুকুর খননের প্রস্তুতির পাঁয়তারার অভিযোগ উঠেছে এলাকার প্রভাবশালীদের বিরুদ্ধে।
শুক্রবার (২২মার্চ) সকাল এর প্রতিবাদে উপজেলার বিয়াঘাট ইউনিয়নের কুমারখালী মৌজায় কুমারখালী উত্তরপাড়া মাঠে মানববন্ধন করে গ্রামবাসী। এতে এলাকার কৃষকসহ কয়েকশ নারী-পুরুষ অংশ নেয়।
পুকুর খননের উদ্দেশ্যে শষ্য ক্ষেতে সপ্তাহখানেক ধরে সেচ সুবিধা বন্ধ করে রেখেছিলেন প্রভাবশালীরা। তবে স্থানীয় কয়েকশ কৃষকের প্রতিবাদের মুখে তিন ফসলি এসব জমিতে পুকুর খননের প্রস্তুতি ভুণ্ডল করে দিয়েছেন ইউএনও মোছা. সালমা আক্তার।
শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে তিনি সরেজমিনে ফসলের ক্ষেত পরিদর্শন করতে গিয়ে বোরো ধান, ভুট্টা, ধনিয়া এবং রসুনের জমিতে সেচ সচল করেন। তাৎক্ষণিক পাশের বরেন্দ্রের স্কিম থেকে ফেটে চৌচির হওয়া বোরো ক্ষেতে পানি দেওয়া হয়। এতে প্রাণ ফিরে পায় ধান গাছগুলো।
এর আগে পুকুর খনন না করার দাবিতে শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে ফসলি জমির ভেতর দাঁড়িয়ে মানববন্ধনের মাধ্যমে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ দাবি করেন স্থানীয় কয়েকশ কৃষক। কুমারখালী মাঠে জমি থাকা জমসেদ আলী, মুঞ্জুর আলম, সোলায়মান আলী, শাজাহান আলী, আব্দুল কাদেরসহ অন্তত ২০ জন কৃষক বলেন, গ্রামের মৃত সদর উদ্দিন মণ্ডলের দুই প্রভাবশালী ছেলে আব্দুল হাকিম ও আব্দুল মমিন নিজেদের দশ বিঘাসহ পাশের আরও দশ বিঘা জমিতে পুকুর খননের প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। এ কারণে প্রায় এক সপ্তাহ ধরে বোরো ধান, রসুন এবং ভুট্টা ক্ষেতে সেচ বন্ধ ছিল।
কুমারখালী উত্তরপাড়া বিলে অন্তত ২ হাজার বিঘা ফসলি জমি রয়েছে। সেসব জমিতে ধান, পাট, ভুট্টা, রসুন, ধনিয়াসহ সব ধরনের শষ্য চাষাবাদ করা হয়। প্রভাবশালীরা বিলের মুখে ২০ বিঘা জমিতে পুকুর খনন করলে আশপাশের অন্তত ৫০ বিঘা জমিতে জলবদ্ধতা সৃষ্টি হবে। দীর্ঘমেয়াদি ক্ষতির মুখে পড়বে কৃষক। জলাবদ্ধতার পাশাপাশি কৃষকদের মাঠে চলাচলের পথ বন্ধ হয়ে যাবে। সার-বীজ বা চাষের জন্য ভোগান্তিতে পড়তে হবে কৃষকদের। তাই তারা তিন ফসলি এসব জমিতে পুকুর খনন চান না।
পুকুর খননের প্রস্তুতি নেওয়া আব্দুল হাকিম ও আব্দুল মমিন বলেন, নিজেদের লিজ দেওয়া দশ বিঘা জমিসহ পাশের আরও দশ বিঘা জমিতে তারা পুকুর খননের প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। এ কারণে ফসলের ক্ষেতে সেচ কাজ বন্ধ করা হয়েছিল।
ইউএনও মোছা. সালমা আক্তার মেঠোফোনে কালবেলাকে বলেন, কুমারখালী বিলের বোরো ক্ষেতে সেচ কাজ বন্ধ করে দিয়েছিলেন স্থানীয় পুকুর খনন চক্রের লোকজন। খবর পেয়ে তিনি মাঠে গিয়ে ক্ষেতে সেচ সুবিধা চালু করে দিয়েছেন। একই সাথে তিন ফসলি এসব জমিতে পুকুর খনন বন্ধে প্রশাসনের পক্ষ থেকে কৃষকদের পাশে থাকার আশ্বাস দেন তিনি। তবে পুকুর খননের প্রস্তুতি নেওয়া ব্যক্তিদের না পাওয়ায় আইনি ব্যবস্থা নেওয়া যায়নি।
মন্তব্য করুন