সোমালিয়ায় বাংলাদেশি জাহাজ অপহরণের ঘটনায় জাহাজে থাকা ২৩ বাংলাদেশি নাবিক সোমালিয়ান জলদস্যুদের হাতে জিম্মি হয়েছে। প্রায় ৫০ জন সশস্ত্র জলদস্যু জাহাজটিতে উঠে নাবিকদের জিম্মি করে রেখেছে। জিম্মি থাকা ২৩ জনের মধ্যে ২ জনের বাড়ি চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে। তাদেরেই একজন শাকিল শেষবার যখন পরিবারের সঙ্গে কথা হয় তখন জানায়, আমাদের জলদস্যুরা আটক করে সোমালিয়ার দিকে নিয়ে যাচ্ছে। আমাদের জন্য দোয়া করবেন বেঁচে ফিরলে দেখা হবে।
জিম্মি মোশারফ হোসেন শাকিল তারা হলেন করেরহাট ইউনিয়নের পশ্চিম সোনাই গ্রামের শামসুল হকের ছেলে। শাকিল নাবিক হিসেবে নিয়োজিত ছিলেন। অপরজন ইছাখালী ইউনিয়নের দক্ষিণ ভূঁইয়া গ্রামের সুজাউল হক ভোলা মিয়ার ছেলে আইনুল হক অভি। তবে তারা সপরিবারে চট্টগ্রাম নগরীর কাজির দেউড়ি থাকেন। আইনুল হক অভি ওয়েলম্যান হিসেবে কর্মরত ছিলেন।
আইনুল হকের বড় ভাই মুন্না বলেন, সর্বশেষ মঙ্গলবার (১২ মার্চ) রাত ৮ টায় কথা হয়েছে। তখন সে বলেছে আমাদেরকে সোমালিয়ার দিকে নিয়ে যাচ্ছে। ওইখানে যেতে দুই থেকে তিন দিন লাগবে। আমাদের মোবাইলসহ সবকিছু নিয়ে ফেলবে। আমাদের জন্য দোয়া করবেন। আমরা সকালে কেএসআরএম গ্রুপের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলেছি তারা যোগাযোগ করতেছে।
শাকিলের বড় ভাই আবু বক্কর জানান, শাকিলের সঙ্গে রাতে শেষ কথা হয়, তখন সে বলে আমাদের জলদস্যুরা আটক করে সোমালিয়ার দিকে নিয়ে যাচ্ছে। আমাদের জন্য দোয়া করবেন বেঁচে ফিরলে দেখা হবে। তিনি বলেন, আমার ভাইকে ফিরে পাব তো?
জলদস্যুদের হাতে জিম্মি হওয়া শাকিল ও আইনুলের বাড়িতে চলছে কান্নার আহাজারি। পরিবারের সদস্যদের মাঝে উদ্বেগ উৎকণ্ঠা বিরাজ করছে। সকলের দাবি যাতে বাংলাদেশ সরকার যেভাবে হোক তাদের জীবিত ফিরিয়ে আনে।
করেরহাট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এনায়েত হোসেন নয়ন বলেন, আমার ইউনিয়নের মোশারফ হোসেন শাকিল নামে একজন সোমালিয়ায় আটক জাহাজে রয়েছে। তাকে ফিরে পেতে পরিবারের লোকজন আকুতি করছে। আমরা যতটুকু দেখছি সরকার তাদের ফিরিয়ে আনতে কাজ করে যাচ্ছে। আশা করছি আটক হওয়া সবাই দেশে ফিরে আসবে।
উল্লেখ্য, মঙ্গলবার ভারত মহাসাগরে জলদস্যুরা বাংলাদেশের পতাকাবাহী ‘এম ভি আবদুল্লাহ’ নামের জাহাজটির নিয়ন্ত্রণ নিয়ে সোমালিয়া উপকূলের দিকে নিয়ে যাচ্ছে। পণ্যবাহী জাহাজটির মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান কবির গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজ। মঙ্গলবার দুপুর ১টার দিকে জাহাজটি জলদস্যুদের কবলে পড়ার খবর জানতে পারে বাংলাদেশের অন্যতম শিল্পগোষ্ঠীটির কর্তৃপক্ষ।
মন্তব্য করুন