সিলেট মহানগরের বহুল প্রতিক্ষিত ভ্রাম্যমাণ ব্যবসায়ীদের (হকার) অস্থায়ী মার্কেটে পুনবার্সন কার্যক্রম শুরু হচ্ছে রোববার। এসময় উপস্থিত থাকবেন সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ও হবিগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন।
রোববার (১০ মার্চ) এদিন সকাল ১০ টায় পুনর্বাসন কর্মসূচির উদ্বোধন করবেন সিলেট সিটি কর্পোরেশনের মেয়র মো. আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী। বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন সিলেট সিটি করপোরেশনের জনসংযোগ কর্মকর্তা সাজলু লস্কর।
তিনি জানান, আসন্ন রমজানের আগেই সিলেট নগরীর ভ্রাম্যমাণ ব্যবসায়ীদের (হকার) অস্থায়ী মার্কেটে পুনবার্সন করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন মেয়র। সে লক্ষ্যে দ্রুত অস্থায়ী মার্কেট প্রস্তুত করার জন্য ১০টি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে কাজ দেয়া হয়। কাজ শেষে রবিবার ভ্রাম্যমাণ ব্যবসায়ীদের পুনর্বাসনের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হবে এবং পর্যায়ক্রমে নগরীতে ছড়িয়ে থাকা ভ্রাম্যমাণ ব্যবসায়ীদের নির্ধারিত স্থানে পুনর্বাসন করা হবে।
সিসিক সুত্রে জানা যায়, নগর জুড়ে ফুটপাত ও সড়ক দখলমুক্ত করতে মেয়র মো. আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী চ্যালেঞ্জ হিসেবে গ্রহণ করেন। এর অংশ হিসেবে ইতোমধ্যে মহানগর পুলিশ কমিশনার, হকারদের প্রতিনিধিসহ সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের সাথে কয়েক দফায় তিনি আলোচনা করে করেছেন। সকলের পরামর্শে হকার সমস্যার একটি স্থায়ী সমাধানের দিকেই এগিয়ে যাচ্ছেন মেয়র মো. আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী।
নগরভবন লাগোয়া লালদিঘির পাড়ের মাঠে অস্থায়ী মার্কেটে ভ্রাম্যমাণ ব্যবসায়ীদের পুনর্বাসনের ফলে কিছুদিনের মধ্যে হকার সমস্যার সমাধান হবে বলে মনে করছে সিসিক সূত্র।
উল্লেখ্য, ২০১২ সালের জানুয়ারিতে লালদিঘীর পাড়ে সিসিকের মালিকানাধীন জরাজীর্ণ মার্কেট ভেঙে হকারদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা হয়। মহানগর পুলিশের সহযোগিতায় প্রাথমিকভাবে লটারির মাধ্যমে ১ হাজার ৭০ জন হকারকে পুনর্বাসন করা হয় সেখানে। প্রত্যেক হকারের জন্য ৭ ফুট/৩ ফুট জায়গা বরাদ্ধ দেয়া হয়। সিসিকের পক্ষ থেকে নির্ধারিত স্থানে সবার জন্য বাঁশ ও টিন দিয়ে অস্থায়ী মার্কেটও নির্মাণ করে দেয়া হয়। ক্রেতাদের সুবিধার্থে মাঠে মাছ ও শুঁটকি, সবজি, তৈজসপত্র এবং বিবিধ নামে সাইনবোর্ড টাঙিয়ে পৃথক লেন করে দেয়া হয়েছে সেখানে। এছাড়া নগরের প্রতিটি ফুটপাতে ‘মানুষের চলাচলের জন্য, হকারদের বসা নিষেধ’ লেখা সম্বলিত সাইনবোর্ড টাঙানো হয়।
এই দুর্ভোগ লাঘবে ২০২১ সালে ভ্রাম্যমাণ ব্যবসায়ীদের পুনর্বাসনের উদ্যোগ নেয় সিলেট সিটি করপোরেশন (সিসিক)। ওই বছরের জানুয়ারিতে নগরভবন-লাগোয়া লালদিঘীর পাড়ের খোলা মাঠে ভ্রাম্যমাণ ব্যবসায়ীদের জন্য অস্থায়ী মার্কেট নির্মাণ করে দেয় সিসিক। প্রাথমিক অবস্থায় নগরের বিভিন্ন এলাকা থেকে ১ হাজার ৭০ জন ভ্রাম্যমাণ ব্যবসায়ীদের পুনর্বাসন করা হয় ওই মার্কেটে। তবে ভেস্তে যায় পুনর্বাসনের এ উদ্যোগ। সিসিক নির্মিত অস্থায়ী মার্কেটে আর বসেন না হকাররা। উল্টো নগরের ফুটপাত ছাপিয়ে সড়কেরও বহুলাংশও দখল করে রেখেছেন তারা। ফলে দিনভর নগরে লেগে থাকে যানজট।
মন্তব্য করুন