আশুলিয়ায় ছোট বোনের ধর্ষণচেষ্টার বিচার চেয়ে থানায় মামলা করে বিপাকে পরেছেন ভুক্তভোগীর বোন। মামলা করার প্রেক্ষিতে আশুলিয়া থানা পুলিশ একজনকে আটক করে কারাগারে পাঠিয়েছে। এরপরই শুরু হয় বিপত্তি।
স্থানীয় প্রভাবশালীদের ম্যানেজ করে ভুক্তভোগীর পরিবারকে দেওয়া হচ্ছে এলাকা ছাড়ার হুমকি। ভুক্তভোগী পরিবারের দাবি, তারা মামলা তুলে নেওয়ার জন্য বিভিন্ন দিক থেকে হুমকি-ধমকি পাচ্ছেন। ফলে আতঙ্কে দিন কাটছে পরিবারটির।
ঘটনার বিবরণ দিয়ে আশুলিয়া থানায় (জিডি) করেছে ওই নারী।
ভুক্তভোগী পরিবারের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ভুক্তভোগী ওই কিশোরী (১৫) তার বোনের সঙ্গে আশুলিয়ার জামগড়া এলাকায় একটি ভাড়া বাসায় থেকে তার বোনের ছেলে-মেয়েকে দেখাশোনা করতেন। ভুক্তভোগীর বোন ও দুলাভাই কাজে চলে গেলে বাসায় একা পেয়ে বাসার ব্যবস্থাপক মো. কবির হোসেন (৪৫) বিভিন্ন সময়ে কিশোরীকে অনৈতিক প্রস্তাব দেন।
সর্বশেষ গত ৫ ফেব্রুয়ারি সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ওই কিশোরীকে কবির হোসেন পুনরায় অনৈতিক প্রস্তাব দেয়। এতে কিশোরী অস্বীকৃতি জানালে কবির হোসেন মুখ চেপে কক্ষে নিয়ে ধর্ষণের চেষ্টা করে। কিশোরীর চিৎকার শুনে আশপাশের ভাড়াটিয়ারা এগিয়ে আসার আগেই সেখান থেকে দ্রুত পালিয়ে যান অভিযুক্ত।
ভুক্তভোগীর বড় বোন কালবেলাকে জানান, ঘটনার পর ওইদিন রাতেই আশুলিয়া থানায় লিখিতভাবে বিষয়টি পুলিশকে জানানো হয়। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে খোঁজখবর নেয়। এরপর আশুলিয়া থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) অমিতাভ চৌধুরী পুনরায় ভুক্তভোগী এবং স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলেন এবং স্থানীয় মো. আনারুলকে (৪০) বিষয়টি দেখতে বলেন।
গত ১৬ ফেব্রুয়ারি স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যবসায়ী মো. আনারুল ভুক্তভোগীর পরিবারকে বিষয়টি নিয়ে বাড়াবাড়ি না করে এলাকা ছেড়ে চলে যেতে বলেন এবং মালপত্র নেওয়ার জন্য ট্রাকের ব্যবস্থা করে দিবেন বলে জানান। উপায় না পেয়ে ওই এলাকা থেকে কিছুটা দূরে গিয়ে নতুন বাসা ভাড়া নেন তারা।
পরে গত সোমবার থানায় ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগে মো. কবির হোসেনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন ভুক্তভোগীর বড় বোন। এরপর আনারুলের লোকজন ভুক্তভোগী পরিবারের নতুন ভাড়া বাসায় গিয়েও মামলা তুলে না নিলে তাদের দেখে নেওয়া হবে বলে হুমকি দেন।
এ ঘটনায় বুধবার (৬ মার্চ) আশুলিয়া থানায় জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন তিনি।
বাড়ির মালিক মরিয়ম কালবেলাকে বলেন, এই মাসেই তারা (ভুক্তভোগী) ৩ রুম ভাড়া নিয়েছে। তারা কোনো অপরাধী কিনা আমি জানি না। তবে বৃহস্পতিবার (৭ মার্চ) চেয়ারম্যানের বন্ধু ছাফর শেখ তাদের (ভুক্তভোগী) বাসা থেকে বের করে দিছে কিনা জানতে চান।
হুমকি দিয়ে এলাকা ছাড়তে বলেছেন কিনা- এমন প্রশ্নে মো. আনারুল কালবেলাকে বলেন, অভিযোগটি সঠিক নয়।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা আশুলিয়া থানার উপ-পরিদর্শক অমিতাভ চৌধুরী বলেন, অভিযোগ পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিয়েছি। মামলার পর কোনোরকম কালক্ষেপণ ছাড়াই আসামিকে গ্রেপ্তারও করা হয়েছে। হুমকি দেওয়ার বিষয়টি আমার জানা নেই।
আশুলিয়া থানার (ওসি) এএফএম সায়েদ কালবেলাকে বলেন, ভুক্তভোগী কেন অন্যের কথায় বা হুমকিতে বাসা ছাড়বেন। আমরা ভুক্তভোগীদের সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিত করব। পাশাপাশি ন্যায়বিচার নিশ্চিতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিব।
মন্তব্য করুন