চার দিনেও পুরোপুরি নেভানো যায়নি চট্টগ্রামের কর্ণফুলীতে অবস্থিত এস আলম গ্রুপের চিনিকলের গুদামে লাগা আগুন। ফায়ার সার্ভিসের ১০টি ইউনিট আগুন নেভানোর কাজ করছে। সোমবার (৪ মার্চ) বিকেল ৪টার দিকে চট্টগ্রামের কর্ণফুলী উপজেলার চরলক্ষ্যা এলাকায় এস আলম সুগার ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডে আগুন লাগে। বৃহস্পতিবারও (৭ মার্চ) কিছু কিছু অংশে আগুন জ্বলছিল।
এদিকে সকালে কর্ণফুলী থানার ইছাপুর এলাকায় আগুন লাগা চিনিকল পরিদর্শন করেছেন ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাইন উদ্দিন। এর আগে দুপুরে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান। এ সময় তিনি আগুন লাগার স্থান, গোডাউনসহ সামগ্রিক বিষয়গুলো পর্যবেক্ষণ করেন। কথা বলেন এস আলম সুগার রিফাইন্ড মিলের কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে। কীভাবে দ্রুত আগুন নির্বাপণ করা যায় এই বিষয়ে পরামর্শও দেন ফায়ার সার্ভিসকে।
জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান বলেন, প্রশাসন নিরলস কাজ করছে। আশা করি, এই আগুন দ্রুত ভালো সংবাদ পাওয়া যাবে।
ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাইন উদ্দিন বলেন, কারখানায় এক লাখ টন চিনির কাঁচামাল মজুত ছিল। এর মধ্যে ৮০ শতাংশ রক্ষা করা সম্ভব হয়েছে। সেনা, নৌ ও বিমানবাহিনীর ১৮টি ইউনিটের প্রচেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে এসেছে। তবে কিছু কিছু জায়গায় এখনো হালকা আগুন দেখা যাচ্ছে। আজ বিকেলের মধ্যে আগুন পুরোপুরি নেভানো সম্ভব হবে।
তিনি আরও বলেন, ‘আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে দেরি হওয়ার কারণ হলো, যে কাঁচামালগুলো ছিল সেগুলো দাহ্য। পানি দেওয়ার পরও সেগুলো আবার জ্বলে ওঠে।’
এর আগে গত সোমবার বিকেল থেকে জ্বলছে এস আলমের চিনিকলের গুদাম। আগুনে পুড়ে উত্তপ্ত লাভার মতো গলা চিনি ছড়িয়ে পড়ছে আশপাশের এলাকায়। সঙ্গে যুক্ত হয়েছে ফায়ার সার্ভিসের ছিটানো পানি। খাল-নালা দিয়ে আলকাতরার মতো কালো এই পানির তীব্র প্রবাহ গিয়ে পড়ছে ২০০ মিটার দূরের কর্ণফুলী নদীতে। এতে মরছে নদীর মাছ ও জলজ প্রাণী। নদীর ভয়াবহ দূষণ ভাবিয়ে তুলেছে পরিবেশ সংশ্লিষ্ট সংগঠন ও বিশেষজ্ঞদের।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. মঞ্জুরুল কিবরিয়া জানান, নদীতে পোড়া চিনি মিশে যাওয়ার কারণে পানির গুণগত মান নষ্ট হচ্ছে। এর ফলে পানিতে রিজার্ভ যে অক্সিজেন ছিল তার পরিমাণ অনেকটা কমে যাবে।
মন্তব্য করুন