সিরাজগঞ্জ শহীদ এম মনসুর আলী মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থী আরাফাত আমিন তমালকে (২২) গুলি করা শিক্ষক ডা. রায়হান শরীফের (৩২) হেফাজত থেকে আরও অস্ত্র উদ্ধার করেছে গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।মঙ্গলবার (৫ মার্চ) সকালে সিরাজগঞ্জ গোয়েন্দা পুলিশের ওসি মো. জুলহাজ উদ্দীন এ তথ্য জানান।
ডিবির ওসি বলেন, অভিযুক্তকে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে তিনি তার লেদারের ব্যাগের ভেতর থেকে আরও একটি বিদেশি পিস্তল, ৮১ রাউন্ড তাজা গুলি, ৪টি ম্যাগাজিন, দুটি বিদেশি কাতানা (ছোরা) ও ১০টি অত্যাধুনিক বার্মিজ চাকু উদ্ধার করা হয়। উদ্ধার হওয়া সবগুলো অস্ত্রই অবৈধ।
এদিকে শিক্ষক রায়হানের বিরুদ্ধে গুলিবিদ্ধ ছাত্রের পরিবারের পক্ষ থেকে হত্যাচেষ্টা মামলা করা হয়েছে। এ ছাড়া পুলিশের পক্ষ থেকে আরেকটি অস্ত্র মামলা দায়ের করা হয়েছে। অপরদিকে ঘটনার তদন্তে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করেছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।
আহত আরাফাত আমিন তমাল বগুড়া জেলার ধুনট থানার ধানসিঁড়ি নাটাইপাড়া এলাকার আব্দুল্লাহ আল আমিনের ছেলে। তিনি শহীদ এম. মনসুর আলী মেডিকেল কলেজ, সিরাজগঞ্জের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র।
অভিযুক্ত ডা. সিরাজগঞ্জ পৌর এলাকার বিএ কলেজ রোডের প্রফেসর গার্ডেন এলাকার প্রফেসর আব্দুর রাজ্জাকের ছেলে। তিনি ওই মেডিকেল কলেজের কমিউনিটি মেডিসিন বিভাগের প্রভাষক।
সিরাজগঞ্জ গোয়েন্দা পুলিশের ওসি মো. জুলহাজ উদ্দীন জানান, সোমবার বিকেলে তৃতীয় বর্ষের আইটেম পরীক্ষা একাডেমি ভবনের চতুর্থ তলায় ডা. সামাউন নূর শুভর কক্ষে অনুষ্ঠিত হচ্ছিল। পরীক্ষা চলাকালীন রায়হান শরীফ হঠাৎ উত্তেজিত হয়ে ছাত্রছাত্রীদের অহেতুক বকাবকি করেন। বকাবকির একপর্যায়ে ব্যাগ থেকে পিস্তল বের করে তমালকে গুলি করেন। গুলিটি তমালের ডান পায়ের উরুর উপরের অংশে লেগে গুরুতর আহত হন।
খবর পেয়ে সদর থানা পুলিশ ও ডিবির টিম ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে ডা. রায়হান শরীফকে হেফাজতে নেয়। এ সময় শ্রেণিকক্ষের টেবিল থেকে একটি বিদেশি আগ্নেয়াস্ত্র ও একটি গুলির খোসা উদ্ধার করা হয়।
ওসি আরও বলেন, সোমবার (৪ মার্চ) দিবাগত রাত ১২টার দিকে আহত তমালের বাবা আব্দুল্লাহ আল আমিন বাদী হয়ে সদর থানায় একটি হত্যাচেষ্টা মামলা দায়ের করেন। অপরদিকে ডিবির উপ-পরিদর্শক আব্দুল ওয়াদুদ বাদী হয়ে অস্ত্র আইনে অপর একটি মামলা দায়ের করেছেন। এসব মামলায় রায়হান শরীফকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। মঙ্গলবার দুপুরে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দির জন্য আদালতে নেওয়া হয়েছে।
শহীদ এম. মনসুর আলী মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ ডা. মো. আমিরুল হোসেন বলেন, শ্রেণিকক্ষে ছাত্রকে গুলি করার ঘটনাটি তদন্তে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করেছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. বায়জীদ খুরশীদ রিয়াজকে আহ্বায়ক করে তিন সদস্যের কমিটির বাকি সদস্যরা হলেন, স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের পরিচালক (চিকিৎসা শিক্ষা) অধ্যাপক মো. মহিউদ্দিন মাতুব্বর এবং স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগ উপসচিব মোহাম্মদ মোহসীন উদ্দিন। ইতোমধ্যে তদন্ত টিম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে তদন্ত শুরু করেছেন।
মন্তব্য করুন