মো. আবুল হাসেম, মাটিরাঙ্গা (খাগড়াছড়ি)
প্রকাশ : ০৪ মার্চ ২০২৪, ০৮:৫৮ এএম
অনলাইন সংস্করণ

পাহাড়ি হলুদের দাম দ্বিগুণেরও বেশি, তবু কেন এত কদর

বিক্রির জন্য হলুদ প্রস্তুত করছেন শ্রমিকরা। ছবি : সংগৃহীত
বিক্রির জন্য হলুদ প্রস্তুত করছেন শ্রমিকরা। ছবি : সংগৃহীত

পাহাড়ি এলাকা খাগড়াছড়ির মাটিরাঙ্গায় উন্নতমানের হলুদ চাষ হয়। এ এলাকার হলুদ ফরমালিনমুক্ত এবং গুণগতমান ভালো হওয়ায় সারা দেশে বেশ জনপ্রিয়। তাই দামও ভালো পাওয়া যাচ্ছে। জানা গেছে, অন্যান্য বছরের তুলনায় এ বছর হলুদের দাম বেড়েছে দ্বিগুণেরও বেশি।

চাষিরা জানান, গত বছর কাঁচা হলুদের দাম ছিল মণপ্রতি ৪০০ টাকা, শুকনো হলুদ বিক্রি করা হতো ৪ হাজার টাকায়। এ বছর হলুদের দাম বেড়ে প্রতি মণ কাঁচা হলুদের দাম ১ হাজার ১০০ টাকা। শুকনো হলুদ মণপ্রতি ৮ হাজার ৪৮০ টাকা বিক্রি করা হয়। ৬ মণ কাঁচা হলুদে ১ মণ শুকনো হলুদ তৈরি হয়।

এ হলুদে রয়েছে কিছু ভালো গুণ। যার কারণ, পাহাড়ি হলুদ চাষে রাসায়নিক সারের ব্যবহার একদমই নেই। তাই পুষ্টিগুণ, স্বাদ ও রং অক্ষুণ্ন রাখতে সাহায্য করে। সম্পূর্ণ অরগানিক পদ্ধতিতে চাষ হয় বলে এ অঞ্চলের হলুদ খুবই সুস্বাস্থ্যকর।

এদিকে মাটিরাঙ্গায় এবার হলুদের ভালো ফলন হয়েছে। তাই বেশ কয়েক দিন ধরে হলুদে ভরে উঠেছে স্থানীয় বাজারগুলোতে। সারা দেশে পার্বত্যাঞ্চলের হলুদের চাহিদা বেশি থাকায় ব্যবসায়ীরাও এখান থেকে হলুদ সংগ্রহ করে নিয়ে যাচ্ছেন। প্রতিবছর উপজেলার বিভিন্ন পাহাড়ে উৎপাদিত হাজার হাজার টন হলুদ যাচ্ছে সমতলে। চাহিদা বেশি থাকার কারণে ব্যবসায়ীরা হলুদ নিতে আসছেন পাহাড়ে।

উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, মাটিরাঙ্গায় বাণিজ্যিকভাবে চাষ হচ্ছে হলুদের। সদর ইউনিয়নের বাইল্যাছড়ি রসুলপুর, বেলছড়ি, গোমতী, বড়নাল, তবলছড়ি, ও তাইন্দং এলাকায় হলুদের চাষ হয়। ২০২২-২৩ অর্থবছরে হলুদের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৮৩০ হেক্টর জমি। অর্জন হয় ৮২০ হেক্টর জমি। সে বছর ১০ হেক্টর জমিতে হলুদের চাষ লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে কম হয়। গত বছরের তুলনায় এ বছর হলুদের দাম তুলনামূলক বেশি হওয়ায় ২০২৩-২৪ অর্থবছরে হলুদের লক্ষ্যমাত্রা জমি ছিল ৮৫০ হেক্টর জমি। একই বছরে ১০ হেক্টর বেড়ে অর্জন হয় ৮৬০ হেক্টর জমি।

দেলোয়ার নামে এক চাষি জানান, খাগড়াছড়ির রিসাং জড়না এলাকার স্থানীয় পাহাড়িরা হলুদ চাষ করে বেশি। গত বছর হলুদের দাম করে যাওয়ায় অনেকে হলুদ চাষ করেননি। এ বছরও ওই এলাকায় হলুদ চাষ কম হলেও দাম বেশি।

তিনি আরও জানান, মাটিরাঙ্গায় সাপ্তাহিক হাটের দিন বিভিন্ন জাতের হলুদ ক্রয় করে এনে এগুলো বিভিন্নভাবে প্রসেসিং করে দেশের বিভিন্ন স্থানে বিক্রি করেন তিনি। দুই যুগ ধরে সস্ত্রীক হলুদ প্রসেসিং করেন তিনি। দুটো হলুদ প্রসেসিং সেন্টারে প্রতি জন শ্রমিক ২০ হাজার টাকা করে মাস হিসেবে অনেক শ্রমিক কাজ করেন এখানে। তা ছাড়া দৈনিক হিসেবে অনেক নারী শ্রমিক কাজ করেন এখানে। তিন সন্তান নিয়ে বেশ সুখেই কাটছে তার পরিবার।

পাহাড়ের মাটিতে হলুদ চাষে ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে জানিয়ে মাটিরাঙ্গা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. সবুজ আলী বলেন, অনাবাদি ও পতিত জমিতে হলুদ ভালো হয়। মাটিরাঙ্গায় এবার হলুদের বাম্পার ফলন হয়েছে। গতবারের তুলনায় এবার হলুদের দাম বেশি হওয়ায় এ বছর কৃষক বেশ লাভবান হচ্ছেন।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

রাতের অন্ধকারে ভারতে অনুপ্রবেশের চেষ্টা, ৬ বাংলাদেশি আটক

এবার গাজার যোদ্ধাদের নেতৃত্ব দেবেন যিনি

ছাত্র আন্দোলনের নেতাসহ ২ শিক্ষার্থীর ওপর হামলা

নির্বাচন কবে হতে পারে, জানালেন আসিফ নজরুল

মুক্তি পেল দুই সিনেমা

মধ্যরাতে ৩০০ ফিট সড়কে সেনাবাহিনীর যৌথ অভিযান

নোয়াখালীতে দখলমুক্ত ফুটপাত, ব্যবসায়ীদের জরিমানা

একুশে পদকপ্রাপ্ত সংগীতশিল্পী সুজেয় শ্যাম আর নেই

ছিলেন জন্মগত বয়রা, গ্রেনেড হামলার ভুক্তভোগী সেজে ‘আওয়ামী গডফাদার’

গাজার যোদ্ধাদের প্রধান নিহত, যা বলছে পশ্চিমা বিশ্ব

১০

ত্রাণের টাকা আত্মসাতের অভিযোগ যুবদলকর্মীর বিরুদ্ধে

১১

মন খারাপ হলেই বিল্লাল দখলে নিতেন অন্যের সম্পদ

১২

কে এই ইয়াহিয়া সিনওয়ার

১৩

খাতা না দেখেই মনগড়া রেজাল্ট দিয়েছে, অভিযোগ শিক্ষার্থীদের

১৪

দেশের ৬ অঞ্চলে ৬০ কিমি বেগে ঝড়ের পূর্বাভাস

১৫

চিলমারীতে নদীতে ৫০০ হেক্টর জমি, নিঃস্ব ৩০০ পরিবার

১৬

বায়তুল মোকাররম মসজিদে নতুন খতিব নিযুক্ত 

১৭

১৮ অক্টোবর : ইতিহাসের এই দিনে আলোচিত যত ঘটনা

১৮

১৮ অক্টোবর : নামাজের সময়সূচি

১৯

শুক্রবার রাজধানীর যেসব এলাকায় যাবেন না

২০
X